অংশীদারি থাকার সময়ে যে জায়গায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের মহাকরণ স্টেশন তৈরির জন্য রাজ্যের অনুমতি মিলেছিল, এখন সেখানে ওই স্টেশন তৈরিতে রাজ্যের সায় নেই কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল আদালতে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলকে প্রশ্ন করেন, “যখন অংশীদারি ছিল, তখন মহাকরণ স্টেশনের জায়গা নিয়ে আপত্তি করেননি কেন?” রাজ্য এ দিন সেই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেয়নি।
ওই মেট্রো প্রকল্পের বিকল্প রুটের দাবি তুলে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই নানা বাধা দিচ্ছে বলে ‘কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড’-এর অভিযোগ। তাদের আইনজীবী এ দিনও আদালতে দাবি করেন, হাওড়া ময়দান থেকে মহাকরণ পর্যন্ত রুটের কাজ করতে ব্রেবোর্ন রোডে দু’দফায় জরুরি ভিত্তিতে যানবাহন ঘোরানো দরকার। প্রয়োজন রয়েছে ওই রাস্তার তলায় থাকা নিকাশি ও জল সরবরাহের পাইপলাইন অস্থায়ী ভাবে অন্যত্র সরানোরও। এই কাজে কলকাতা পুরসভার অনুমতিও মিলেছে। প্রকল্প-কর্তাদের দাবি, পাইপলাইন সরানোর টাকাও তাঁরা দেবেন। তবে রাজ্যের পরিবহণ দফতর এখনও সে ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ ওই কর্তাদের।
এ নিয়ে এ দিন আদালত রাজ্যের বক্তব্য জানতে চায়। রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান, ব্রেবোর্ন রোডের কাছে মহাকরণ স্টেশন তৈরি হলে যাত্রীদের বিস্তর অসুবিধা হবে। আদালতে রাজ্যের বক্তব্য, এখন যে রুট ঠিক করে মহাকরণ স্টেশন তৈরির জায়গা বাছা হয়েছে, তা আদৌ উপযোগী কি না, জানতে ‘রাইটস’-কে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওখানে স্টেশন তৈরির জন্য পর্যাপ্ত জায়গাই মিলবে না। স্টেশন তৈরি হলে ক্ষতি হতে পারে আশপাশের বহুতল ভবনের।
বিচারপতি পাথেরিয়া জানতে চান, বিকল্প রুট নিয়ে মতৈক্য না-ও হতে পারে, কিন্তু হাওড়া ময়দান থেকে মহাকরণ পর্যন্ত কাজ করতে অসুবিধা কোথায়? অশোকবাবু জানান, যেহেতু ওই কাজ এগিয়ে এসে মহাকরণের কাছেই শেষ হবে, তাই ব্রেবোর্ন রোডের উপরেই বিস্তর চাপ পড়বে। মহাকরণ স্টেশন অন্যত্র (রাজ্য চায় বিবাদী বাগে মিনিবাস টার্মিনাসে ওই স্টেশন হোক) হলে অসুবিধা নেই।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য ব্রেবোর্ন রোডের একটি পেট্রোল পাম্পকে পুনর্বাসন দেওয়ার প্রশ্নটিও আদালতে ওঠে এ দিন। রাজারহাটে ওই পেট্রোল পাম্পকে ২০ কাঠা জমি দেওয়ার কথা রাজ্যের। কিন্তু সেই জমি এখনও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, যে জমি দেওয়ার কথা হচ্ছে, তার একটি অংশ বিতর্কিত। অশোকবাবু আদালতে জানান, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, যে অংশ বিতর্কিত নয়, আপাতত তা নিয়ে নিতে। বাকি অংশের জন্য নিম্ন আদালতে মামলা চলছে। মামলা দ্রুত শেষ করে জমি তুলে দিতে চেষ্টা করছে রাজ্য। বিচারপতি পাথেরিয়া নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর রাজারহাটের হিডকো এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবেন। পরের দিন আদালতে তাঁরা জানাবেন, বৈঠকে কী হল। ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy