জানলার এই ফাঁকা অংশ দিয়েই পড়ে যায় রিদান। —নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক পরেই জন্মদিন। প্রস্তুতি চলছিল জোরকদমে। কিন্তু তার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল দু’বছরের রিদান।
পাঁচতলার ফ্ল্যাটের দরজার বাইরে কাচের বন্ধ জানলাটার সামনে বসেই রোজ খেলত রিদান কামদার। মঙ্গলবার দুপুরেও খেলছিল। সেই জানলাই তার জীবনে এমন পরিণতি ডেকে আনবে, ভাবতে পারেননি কেউ। খেলতে খেলতে জানলায় হেলান দিয়ে বসে পড়েছিল। সেই সময়ে আচমকাই জানলার কাচ ভেঙে মায়ের সামনেই নীচে পড়ে গেল সে। পাঁচতলা থেকে সোজা নীচে, আবাসনের একতলার বারান্দায়। সঙ্গে সঙ্গে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ভবানীপুর থানার ১৩ নম্বর প্রিয়নাথ মল্লিক রোডে এই ঘটনার আকস্মিকতায় বাক্যহারা পরিবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই আবাসনে দু’টি বহুতল মিলিয়ে মোট ২৫টি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে সাততলা বহুতলটির পাঁচতলায় বাবা-মা, দাদু-দিদার সঙ্গে থাকত রিদান ও তার সাত বছরের দিদি। ফ্ল্যাটে প্রত্যেক তলায় ফাঁকা জায়গার সামনে দুটি ভাগে তিনটি করে ব্লকে রয়েছে বন্ধ কাচের জানালা। পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ ফ্ল্যাটের দরজার বাইরে ওই জানলার কাচেই হেলান দিয়ে খেলছিল দু’বছরের শিশুটি। ছেলের সঙ্গে সেখানে ছিলেন মা মেঘনা কামদারও। তখনই আচমকা দুর্ঘটনাটি ঘটে।
আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই জানলাগুলির নির্মাণে নিম্ন মানের কাচ ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকী সঠিক পদ্ধতিতেও লাগানো হয়নি। এর আগেও এ ভাবে কাচ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এ দিনও জানলাটির কাচ ভাঙা বা পুডিং আলগা ছিল বলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি রিদানের পরিবারের। রিদানের মেসোমশাই রোহিত কাটারিয়া বলেন, “মাঝেমধ্যেই এমন ঘটনা ঘটে। বারবার বলা হলেও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না।” এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েও দেখা যায়, বিভিন্ন তলার জানলাগুলির মধ্যে কোনও কোনও জায়গায় কাচই নেই। কোথাও আবার কাচের অভাবে ফাঁকা জায়গা কাঠ দিয়ে বন্ধ করা। বেশ কিছু ভাঙা কাঁচ সেলোটেপ দিয়ে আটকানো অবস্থাতেও পাওয়া যায়।
রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি ওই আবাসনের পরিচালন কমিটির সম্পাদক বীরেশ ভাসা। তিনি বলেন, “গত ছ’মাস ধরে বহুতলের মেরামতি চলছে। কাচ ভাঙলে সব সময় সারিয়ে দেওয়া হয়। ওই জানলার কাচ ভাঙা ছিল না। এটা একটা আকস্মিক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy