Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
অন্ধকূপ-আতঙ্ক

ব্যাগ পেতেও নাকাল যাত্রীরা, গাফিলতিতে অভিযুক্ত মেট্রো

সুড়ঙ্গে আটকে পড়া থেকে শুরু হয়েছিল ভোগান্তি। শনিবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় অসুস্থ হওয়া থেকে শুরু করে রবিবার বিকেল পর্যন্ত মেট্রো কর্তৃপক্ষের একের পর এক গাফিলতির জেরে হয়রানির শিকার হলেন দুই তরুণী। অসুস্থ অবস্থায় নিজেদের জিনিস ফেরত পেতে রবিবার তাঁদের ছুটতে হল বারাসত থেকে টালিগঞ্জ, সেখান থেকে শ্যামপুকুর থানা হয়ে শ্যামবাজার মেট্রোর স্টেশন ম্যানেজারের কাছে।

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৩
Share: Save:

সুড়ঙ্গে আটকে পড়া থেকে শুরু হয়েছিল ভোগান্তি। শনিবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় অসুস্থ হওয়া থেকে শুরু করে রবিবার বিকেল পর্যন্ত মেট্রো কর্তৃপক্ষের একের পর এক গাফিলতির জেরে হয়রানির শিকার হলেন দুই তরুণী। অসুস্থ অবস্থায় নিজেদের জিনিস ফেরত পেতে রবিবার তাঁদের ছুটতে হল বারাসত থেকে টালিগঞ্জ, সেখান থেকে শ্যামপুকুর থানা হয়ে শ্যামবাজার মেট্রোর স্টেশন ম্যানেজারের কাছে। বারাসতের বাসিন্দা দুই তরুণী, অণিমা অধিকারী এবং কল্পনা দে-র অভিযোগ, সব জায়গাতেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ দায় ঝাড়ার চেষ্টা করেছেন। এমনকী, রবিবার তাঁদের শ্যামপুকুরে গিয়ে অভিযোগ জানানোর পরামর্শও দেওয়া হয়।

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ নাগাদ। দমদম থেকে কবি সুভাষগামী মেট্রো শ্যামবাজারে ঢোকার আগে সুড়ঙ্গে আটকে পড়ে। সেই মেট্রোয় ছিলেন অণিমা এবং কল্পনা। সুড়ঙ্গে দমবন্ধ অবস্থায় প্রায় এক ঘণ্টা আটকে থাকার পরে যখন মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের উদ্ধার করতে শুরু করেন, তখন ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। সহযাত্রীরা তাঁদের বার করে আনার সময়ে দু’জনেরই মোবাইল, ব্যাগ হারিয়ে যায়। আর অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তাঁদের পড়তে হয় মেট্রোকর্মীদের একের পর এক অসহযোগিতার সামনে। এ দিন সেই দুর্ভোগের বিবরণ দিতে গিয়ে ওই দুই তরুণী জানান, শনিবার সুড়ঙ্গে ধোঁয়ায় অনেকের সঙ্গে তাঁরাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। কখন হাত থেকে ব্যাগ পড়ে গিয়েছিল, তা খেয়াল ছিল না দু’জনেরই। স্টেশনে পৌঁছলে আরপিএসএফের কর্মীরা তাঁদের নিয়ে যান হাসপাতালে।

পরে দুই তরুণী একটু সুস্থ হয়ে দেখেন, তাঁরা আরজিকর হাসপাতালে। অণিমার অভিযোগ,“একটু সুস্থ হয়ে বুঝতে পারি হাসপাতালে আছি, অক্সিজেন চলছে। কিন্তু যে দুই আরপিএসএফকর্মী হাসপাতালে এনেছিলেন, তাঁরা নেই।” তাঁর অভিযোগ, “বাড়ির লোকজন তখনও আসেনি। দু’টি মেয়ে অসুস্থ, ওষুধ কেনার টাকা নেই, ব্যাগ-মোবাইল সঙ্গে নেই দেখেও ওই দুই কর্মী আমাদের ফেলে চলে যান।”

অণিমার দাবি, “বুঝতে পারি এ ভাবে হাসপাতালে পড়ে থাকলে কিছু ফেরতও পাব না, বাড়িও যেতে পারব না। তাই অক্সিজেন দেওয়া শেষ হতেই হাসপাতালে থাকা পুলিশকর্মীদের সাহায্যে রাতেই ফিরে যাই শ্যামবাজার স্টেশনে।” ওই দুই তরুণীর অভিযোগ, তখনও মেট্রোকর্মীরা তাঁদের সহযোগিতার বদলে বাধা দিতে থাকেন। ভিতরেও ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। চিত্‌কার-চেঁচামেচি করতে স্টেশন ম্যানেজারের কাছে যাওয়ার অনুমতি মেলে। তিনিই দু’জনকে রাতে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করেন বলে দুই তরুণী জানান।

অণিমা এবং কল্পনাকে বাড়ি ফেরত পাঠালেও মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাঁদের জিনিসপত্র উদ্ধার করতে পারেননি। তাঁর দাবি, রবিবার সকালে ফোন করে জানানো হয়, দু’জনেরই জিনিস টালিগঞ্জ স্টেশনে জমা পড়েছে। বেলগাছিয়া-শ্যামবাজারের মাঝে আটকে থাকা মেট্রোর জিনিস টালিগঞ্জে শুনে দু’জনেই অবাক হন। টালিগঞ্জে গিয়ে দেখেন বাকি সব জিনিস থাকলেও অণিমার ব্যাগের টাকা খোয়া গিয়েছে। টালিগঞ্জ থেকে দু’জনকে শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ জানাতে বলে মেট্রো সব দায় ঝেড়ে ফেলে বলেই দুই তরুণীর অভিযোগ। বিকেলে অনিমা এবং কল্পনা শ্যামপুকুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান।

দুই তরুণীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রকে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি বা এসএমএসেরও উত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

diksha bhunia dikshya bhuiyan metro negligence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE