Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পোস্তার চার ‘ডাকাত’ ধরা পড়ল লেকটাউনে

কলকাতা পুলিশ নয়, পোস্তা এলাকার একটি সোনার দোকানে ডাকাতির কিনারা করল বিধাননগর পুলিশ। বুধবার রাতে লেকটাউন থানা এলাকার ভিআইপি রোড থেকে বাবলু অধিকারী, সোনু প্রসাদ, অমর রজক এবং নাসিম কুরেসি নামে চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিধাননগর পুলিশ। তাদের কাছে মিলেছে একটি ৭ এমএম পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি এবং লুঠের ৩৩ লক্ষ টাকা। ধৃতেরা সকলেই ওই ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানায় পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৫৪
Share: Save:

কলকাতা পুলিশ নয়, পোস্তা এলাকার একটি সোনার দোকানে ডাকাতির কিনারা করল বিধাননগর পুলিশ।

বুধবার রাতে লেকটাউন থানা এলাকার ভিআইপি রোড থেকে বাবলু অধিকারী, সোনু প্রসাদ, অমর রজক এবং নাসিম কুরেসি নামে চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিধাননগর পুলিশ। তাদের কাছে মিলেছে একটি ৭ এমএম পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি এবং লুঠের ৩৩ লক্ষ টাকা। ধৃতেরা সকলেই ওই ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বিধাননগর আদালতে তোলা হলে তাদের ২৯ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক।

গত সোমবার পোস্তা থানা এলাকার হরিরাম গোয়েন্‌কা স্ট্রিটের ওই দোকানে হানা দেয় চার সশস্ত্র যুবক। ওই দিন ব্যাঙ্কে জমা করার জন্য নগদ এক কোটি টাকা একটি ব্যাগে ভরে ভল্টে তুলে রেখেছিলেন দোকানের তিন কর্মী। অভিযোগ, চার যুবক দোকানে ঢুকে প্রথমে অস্ত্র দেখিয়ে শাটার নামিয়ে দেয়। তারা দুই রাউন্ড গুলি চালায় এবং ভল্ট খুলিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালায়। নিয়ে যায় দোকানের দুই কর্মীর মোবাইলও।

গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হরিদেবপুর, রিজেন্ট পার্ক, গল্ফগ্রিনে পর পর ডাকাতি হয়। তিনটি ঘটনায় অভিযুক্ত বেশ কয়েক জনকে পাকড়াও করেছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তার মধ্যেই পোস্তার এই ঘটনা।

লালবাজার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা বিধাননগরে গিয়ে ধৃতদের জেরা করে। বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানান, ওই দুষ্কৃতীদের একটি অস্ত্র মামলায় ধরা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে তারা।

বিধাননগর পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে খবর আসে এক দুষ্কৃতীর হাতে হঠাৎ বেশ কয়েক লক্ষ টাকা এসেছে। তা কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে বিভ্রান্ত সে। খবর মিলতেই বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও নিউ টাউন থানার এক বিশেষ বাহিনী বুধবার ওই দুষ্কৃতী-সহ মোট চার জনকে ধরে। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই দুষ্কৃতীরা পোস্তার ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তবে তারা জানায়, এক কোটি নয়, তারা ৬৯ লক্ষ টাকা লুঠ করেছিল। দলে ছিল মোট সাত জন।

ধৃতেরা জানায়, বড়বাজার-পোস্তা এলাকায় কাজ করত তাদের পরিচিত এক যুবক। ওই ‘টিপারের’ কাছ থেকে তারা জানতে পারে, সোমবার ব্যাঙ্কে টাকা জমা করতে যাবেন ওই সোনার দোকানের কর্মীরা। তদন্তকারীদের দাবি, সেই মতো শনিবার ওই এলাকা ‘রেইকি’ করতে যায় নারকেলডাঙা-ফুলবাগান এলাকার ওই সাত দুষ্কৃতী। পুলিশ জেনেছে, সোমবার দুপুরে অটো করে মহাত্মা গাঁধী রোড ও সেখান থেকে হেঁটে হরিরাম গোয়েন্‌কা স্ট্রিটে যায় তারা। ধৃতেরা পুলিশকে জানায়, চার জন লুঠপাট চালায় ও বাকি তিন দুষ্কৃতী ছিল পাহারায়। পরে তারা তিন ভাগে ভাগ হয়ে মহাত্মা গাঁধী রোড পর্যন্ত আসে এবং সন্ধ্যায় বাগমারির একটি স্কুল চত্বরে লুঠের টাকা ভাগ করে। ধৃতদের দাবি, বাকি টাকা রয়েছে ওই ‘টিপার’-এর কাছে। কেন এবং কী ভাবে স্কুল চত্বরে এ কাজ হচ্ছিল, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ওই দুষ্কৃতী-সহ তিন জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এদের মাথা পঞ্চান্ন বছরের এক ব্যক্তি। যে এর আগেও ডাকাতির ঘটনায় কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল বলে লালবাজার সূত্রে খবর।

সূত্রের খবর, বাবলু, সোনু, অমর এবং নাসিম ফুলবাগান এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতী। তাদের গ্রেফতারের পরে একটি রাজনৈতিক দলের তরফে পুলিশের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। যদিও ধৃতদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের চাপের কথা স্বীকার করেননি বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Laketown Posta Lalbazar police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE