Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গরমে কমছে অটো, যাত্রীও

‘অটো কি বন্ধ?’ ‘রাস্তায় কি যানজট?’ সকাল সাড়ে ১১টায় টালিগঞ্জ অটো স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকা যাত্রীরা একে অপরের দিকে এমন প্রশ্নই ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েও অটোর দেখা মিলছিল না। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এল একটি অটো।

যাত্রীর প্রতীক্ষায়। বুধবার, যাদবপুরে। — দেশকল্যাণ চৌধুরী

যাত্রীর প্রতীক্ষায়। বুধবার, যাদবপুরে। — দেশকল্যাণ চৌধুরী

শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০০:২৬
Share: Save:

‘অটো কি বন্ধ?’ ‘রাস্তায় কি যানজট?’

সকাল সাড়ে ১১টায় টালিগঞ্জ অটো স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকা যাত্রীরা একে অপরের দিকে এমন প্রশ্নই ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েও অটোর দেখা মিলছিল না। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এল একটি অটো। তার চালকই জানালেন, তীব্র গরমে কমেছে অটোর সংখ্যা।

চালকদের কথায়, ‘‘বেলা বাড়লেই গরমে চালাতে পারছি না। তাই সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সব রুটে ৩০-৪০ শতাংশ অটো কম থাকছে।’’

গরমে শুধু অটোই নয়, বেলা বাড়ার সঙ্গেই অস্বাভাবিক হারে কমছে যাত্রী সংখ্যাও। উত্তর থেকে দক্ষিণ সব দিকেই বেশির ভাগ যাত্রী মেট্রোকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন গরম থেকে বাঁচতে।

বুধবার বেলা যত গ়ড়িয়েছে তত বেড়েছে রৌদ্রের তাপ। পাল্লা দিয়ে টালা থেকে টালিগঞ্জে অটো ও যাত্রীর সংখ্যা কমেছে। অটোচালকদের একাংশের যুক্তি, ‘‘যাত্রী না হলে চালিয়ে কি লাভ? জ্বালানির খরচও উঠবে না।’’ গড়িয়া-গোলপার্ক রুটের এক অটোচালকের কথায়, ‘‘একে গরমে অটো চালানো খুব কষ্টের। তার উপর যদি ঠিক মতো যাত্রীই না হয় তা হলে লোকসানই হবে। তাই দুপুরে গাড়ি বন্ধ রাখি।’’

অটোচালকেরা জানাচ্ছেন, বেশির ভাগ অটোর কাঠামো টিনের, ছাউনি পলিথিন শিটের। ফলে সেগুলি দ্রুত তপ্ত হয়। চারপাশও খোলা থাকায় গরম হাওয়া লাগে চালক ও যাত্রীর চোখে-মুখে। পাশাপাশি রয়েছে যাত্রী ছাউনির সমস্যা। শহরের কোনও অটো স্ট্যান্ডে স্থায়ী ছাউনি নেই। তাই যাত্রীরাও তীব্র রোদের মধ্যে অপেক্ষা করতে রাজি নন।

তৃণমূল পারিচালিত দক্ষিণ কলকাতা অটোচালক ও অপারেটর্স সংগঠনের সম্পাদক বিতান হালদার বলেন, ‘‘গরমে সব রুটে অটো উধাও হয়ে যাচ্ছে তা নয়। অনেকে অটো যেমন চালাতে পারছেন না, তেমনি যাত্রী কম হওয়ায় আমাদেরও ভোগান্তি হচ্ছে।’’

চালকেরাই জানাচ্ছেন গরম যত বাড়ছে শহরের বিভিন্ন রুটে কমছে অটোর সংখ্যা। যেমন, টালিগঞ্জ-গড়িয়া রুটে প্রায় এক হাজার অটো চললেও দুপুরে তা হচ্ছে ৬০০, যাদবপুর-টালিগঞ্জ রুটে প্রায় ৫০০ অটো চললেও দুপুরে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে ২৫০। একই চিত্র গড়িয়া-গোলপার্ক, রাসবিহারী-আলিপুর, মুকুন্দপুর-টালিগঞ্জ ফাঁড়ি, বি কে পাল-বড়বাজার, শিয়ালদহ-বড়বাজার, কাশীপুর-বি কে পাল, উল্টোডাঙা-আহিরীটোলা সমস্ত রুটেই।

আবার দুপুরে অটো কমে যাওয়ার ফলে এক শ্রেণির চালক বাড়তি ভাড়া হেঁকে মুনাফা লুটছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সিটু পরিচালিত কলকাতা জেলা অটো অপারেটর্স সংগঠনের সম্পাদক অজিত চৌধুরী বলেন, ‘‘গরমে যাত্রীও কম থাকে। তাই বেশি অটো থাকে না। এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে বেশি ভাড়াও চাইছেন অনেকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Autos summer kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE