দেহ ব্যবসা চালানোর অভিযোগ রয়েছে, ভিআইপি রোড ও সংলগ্ন এমন কিছু পানশালাকে তদন্তের স্বার্থে বন্ধ রাখতে জেলা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছিল বিধাননগর কমিশনারেট। কিন্তু এখনও যে একটি সুপারিশেরও শুনানি হয়নি, সে কথা স্বীকার করে নিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক। প্রশাসনিক স্তরে রদ বদলের কারণেই এই শুনানি হচ্ছে না বলে জানালেন তিনি।
লাইসেন্স ছাড়াই ভিআইপি রোডের অনেক পানশালায় নাচ-গান, এমনকী দেহব্যবসা চলত বলে অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। ফলে সেগুলিতে হানা দেওয়া শুরু করে পুলিশ। অনেক মহিলাকে গ্রেফতারও করা হয়। তাঁদের জেরা করেই পানশালাগুলিতে দেহব্যবসা চলার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। বেশ কিছু পানশালার মালিকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের হয়। এর পরেই এমন আট থেকে দশটি পানশালাকে তদন্তের স্বার্থে বন্ধ রাখার জন্য সুপারিশ পাঠানো হয় মহকুমাশাসকের কাছে।
কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘পানশালা বন্ধ রাখার নির্দেশ মহকুমাশাসক বা জেলাশাসকই দিতে পারেন। কিন্তু সেই সুপারিশগুলির শুনানি না হওয়ায় পুলিশ তদন্ত এগোতে পারছে না। ফলে আবারও বিভিন্ন পানশালায় গোপনে নাচ-গান চালু হচ্ছে। দেহব্যবসা শুরুর চেষ্টাও চলছে। আমরা খবর পেলে হানা দিচ্ছি।’’ উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে একটি পানশালা থেকে ন’জন মহিলা-সহ মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছিল এক লক্ষ টাকাও। এর পরে ফের বৃহস্পতিবারই ওই পানশালায় হানা দিয়ে ১০ জন মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু পুলিশের এই সুপারিশের শুনানি হচ্ছে না কেন? সূত্রের খবর, পানশালাগুলির সঙ্গে শাসক দলের কোনও কোনও নেতার যোগাযোগ থাকায় জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে ভেবেচিন্তে এগোতে চাইছেন। বারাসতের মহকুমা শাসক পীযুষকান্তি দাস জানান, পুলিশের সুপারিশ তিনি জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসক মনমিত কউর নন্দা বলেন, ‘‘এডিএম বদলের জন্য পুলিশের সুপারিশের শুনানি হয়নি। দ্রুতই সে কাজ শুরু হবে।’’
এই পানশালাগুলির অধিকাংশই আবাসিক এলাকা লাগোয়া। পুলিশের দাবি, নাচ-গান ও দেহব্যবসা চলায় বাগুইআটি, কেষ্টপুর, তেঘরিয়ার মতো ভিআইপি রোডের ধারের এলাকাগুলিতে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছিল। মাস দেড়েক আগেও হলদিরামের কাছে ঝাড়খণ্ডের এক মহিলাকে উদ্ধার করে পুলিশ। যাঁকে চাকরির টোপ দিয়ে কলকাতায় এনে দেহব্যবসায় নামনোর চেষ্টা করা হচ্ছিল।
সূত্রের খবর, এ সব ঠেকাতেই কমিশনার জাভেদ শামিম বাগুইআটি, নিউ টাউন ও বিমানবন্দর থানাকে লাগাতার পানশালাগুলিতে হানা দিতে নির্দেশ দেন। এর পরেই এলাকায় দুষ্কৃতীর দাপট কমেছে বলে দাবি করেছিল পুলিশ। কিন্তু সেই দাবি যে যথার্থ নয় তার প্রমাণ মেলে গত শুক্রবার রাতেই। ভিআইপি রোডে কেষ্টপুর মোড়ে এক দল মত্ত দুষ্কৃতীর খপ্পরে পড়তে হয় আনন্দবাজার পত্রিকারই এক মহিলা সাংবাদিককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy