Advertisement
E-Paper

‘মেয়র-বিধায়ক থাকি না থাকি, আমি আপনাদের ঘরের ছেলে থাকতে চাই’, সব্যসাচীর মন্তব্যে নয়া জল্পনা

ক’দিন আগেই তাঁর বাড়িতে ‘লুচি-আলুরদম’ খেতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ১৬:৪৩
সল্টলেকের মাড়োয়ারি সমাজের দোলের উৎসবে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত।  -নিজস্ব চিত্র

সল্টলেকের মাড়োয়ারি সমাজের দোলের উৎসবে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। -নিজস্ব চিত্র

গলায় উত্তরীয়। মুখে ‘ভারত মাতা কি জয়’। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে এই ভঙ্গিতেই দেখা গেল বিধানগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে।

ক’দিন আগেই তাঁর বাড়িতে ‘লুচি-আলুরদম’ খেতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। রাজনৈতিক মহলে তার পর জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল, তবে কি এ বার সব্যসাচী দত্ত বিজেপিতে যাচ্ছেন? মেয়র নিজে যদিও সেই স‌ময় সমস্ত জল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু, দোলের দিন মারোয়াড়ি সমাজের একটি অনুষ্ঠানে সব্যসাচীর এক মন্তব্য সেই জল্পনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল। তিনি বললেন, ‘‘মেয়র থাকি বা না থাকি, বিধায়ক থাকি বা না থাকি, আমি আপনাদের ঘরের ছেলে থাকতে চাই।’’

হঠাৎ করে মেয়র বা বিধায়ক না থাকার কথা কেন সব্যসাচীর মুখে? তবে কি তিনি বিজেপিতেই যাচ্ছেন? তাঁর বাড়িতে এসে মুকুল রায়ের লুচি-আলুরদম খাওয়া কি সে সবেরই অঙ্গ ছিল? দোলের দিন সে সব প্রশ্নই ফের রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয়। সব্যসাচী যদিও এ দিন এই বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যায় যাননি।

শুধু মেয়র বা বিধায়ক পদ নিয়েই নয়, এ দিন রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী পুলওয়ামা-কাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সামনে থেকে যারা আক্রমণ করে, তাদের বোঝা যায়। যে পাশে বসেই ছুরি মারে, তাকে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।’’ কাদের উদ্দেশে সব্যসাচীর এই ইঙ্গিত, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জোরদার জল্পনা।

আরও পড়ুন- খোঁপার আড়ালে মাদক, ধৃত বাঙালি অভিনেত্রী, প্রকাশ্যে আসছে বড় মাদক চক্রের যোগ​

আরও পড়ুন- গেস্ট হাউস ভাড়া করে ভুয়ো নিয়োগ চক্রের রমরমা!​

গত ৮ মার্চ শুক্রবার রাতে সব্যসাচীর সল্টলেকের বাড়িতে গিয়েছিলেন মুকুল রায়। বেরিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সব্যসাচীর সঙ্গে দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক। লুচি-আলুরদম খেয়ে গেলাম। খিদে পেলে মাঝেমাঝেই আসি। ওর স্ত্রী খুব ভাল রান্না করে।’’ ওই দিন কী নিয়ে আলোচনা হয়েছিল জিজ্ঞেস করলে মুকুল একটু ঘুরিয়ে জবাব দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ক্রিকেট থেকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ— আলোচনা তো কত কিছু নিয়েই হতে পারে!’’ আর সব্যসাচী নিজে বলেছিলেন ‘‘অনেক দিনের সম্পর্ক। সল্টলেকে এসেছিল মুকুলদা। এক বার ঘুরে গেল। বসে বসে অনেক ক্ষণ পুরনো গল্প হল। এর বেশি কিচ্ছু নয়।’’

জল্পনায় অন্য রং লাগিয়েছে আরও একটি বিষয়। গত মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে মারোয়াড়ি সমাজের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নজরুল মঞ্চে আড়াই হাজারের বেশি আসন রয়েছে। কিন্তু সে দিন প্রথম দিকের বেশ কিছু আসন ভর্তি থাকলেও বাকিটা ফাঁকা ছিল বলেই তৃণমূলের একটা অংশ দাবি করেছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে বিধানগরের বিধায়ক সুজিত বসু হাজির থাকলেও সব্যসাচীকে দেখা যায়নি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মারোয়াড়ি সমাজের সঙ্গে দলের সমন্বয় রাখার দায়িত্বটা সব্যসাচীকেই দেওয়া হয়েছিল। সে দিন প্রশ্ন উঠেছিল, সব্যসাচী কেন হাজির থাকলেন না ওই অনুষ্ঠানে?

সেই সব্যসাচীকেই এ দিন প্রধান অতিথি হিসাবে দেখা গেল মারোয়াড়ি সমাজের রঙের উৎসবে। রাজনৈতিক মহলের একটা অংশ জানাচ্ছে, বিধাননগর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দীর্ঘ দিনই কাউন্সিলর হিসাবে জিতে আসছেন সব্যসাচী। তাঁর সঙ্গে মারোয়াড়ি সমাজের সম্পর্ক সেই সময় থেকেই ভাল। পরে তিনি যখন মেয়র এবং বিধায়ক হন, সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। তাই নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে সব্যসাচী না যাওয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছিলেন।

তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর এ দিনের মেয়র-বিধায়ক না থাকা সংক্রান্ত মন্তব্য। তৃণমূল নেতারা যদিও এ প্রসঙ্গে এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যাদের দলে সব্যসাচীর যাওয়া নিয়ে এত জল্পনা সেই বিজেপিও কোনও মন্তব্য করেনি।

sabyasachi dutta salt lake bidhannagar holi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy