প্রতীক চিত্র
গোপনে জন্মদিনের পার্টি। তা-ও আবার স্কুলের ক্লাসঘরে। তবে কেক-পেস্ট্রি দিয়ে নয়, তিন বন্ধুর পরিকল্পনা ছিল মদ্যপানের। সেই মতো জলের বোতলে লুকিয়ে মদও আনা হয়েছিল। যার জন্মদিন, সেই ছাত্রীই তা এনেছিল। কিন্তু এর পরেই হয় বিপত্তি। জলের বোতলের ঢাকনা খুলতেই নিমেষে মদের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চার দিকে। হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় তিন ছাত্রী।
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ঘটনাটি ঘটে দমদম এলাকার একটি মেয়েদের স্কুলে। ওই তিন ছাত্রীই নবম শ্রেণির। যার কাছ থেকে মদ পাওয়া গিয়েছিল, তাকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় ও বাকি দু’জনকে সাসপেন্ড করা হয় বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।
সানি পার্কে আবেশ দাশগুপ্তের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার আগেই ওই ঘটনা ঘটেছিল। বিষয়টি নিয়ে তখন ততটা নাড়াচাড়া পড়েনি। কিন্তু সানি পার্কের ঘটনার পরে নিজেদের ছাত্রীদের কাণ্ড-কারখানার কথা ভেবে উদ্বিগ্ন দমদমের ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষ।
তিন ছাত্রীর ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে স্কুল-কর্তৃপক্ষ তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। ঘটনা নিয়ে বিশদে কিছু বলতেও চাননি কেউ। সোমবার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রূপশ্রী ঘোষ শুধু বলেন, ‘‘আমরা উদ্বিগ্ন। যে ছাত্রী ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, সে লেখাপড়ায় খারাপ নয়। তদন্তে দেখা গিয়েছে, মেয়েটি বাড়ি থেকেই মদ এনেছিল। অ্যাডভে়ঞ্চারের টানেই তিন ছাত্রী ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা অভিভাবকদের অনুরোধ করেছি সন্তানদের দিকে ঠিকমতো নজর দিতে। না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারে।’’
সানি পার্কের ঘটনার পরে বারংবার সামনে আসছে কিশোর-কিশোরীদের মদ্যপানের প্রতি আসক্তির কথা। নাবালক হলেও কী ভাবে তাদের হাতে মদ কিংবা অন্যান্য নেশার জিনিস এসে পৌঁছচ্ছে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। দমদমের ওই স্কুলের ঘটনা স্পষ্ট করছে যে, শুধুই উচ্চবিত্তদের মধ্যেই নয়, মধ্যবিত্ত সমাজের কচিকাঁচাদের নাগালের মধ্যেও নেশার জিনিস ক্রমেই সহজলভ্য।
স্কুল সূত্রে খবর, ওই ছাত্রীটি নেহাতই মধ্যবিত্ত পরিবারের। তার বাবা একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। ছাত্রীটি স্বীকার করেছে, তাদের বাড়িতে মদ্যপানের চল রয়েছে। তাই বাবার সংগ্রহ থেকেই সে মদ জোগাড় করেছিল দুই বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিন পালন করবে বলে। ওই ঘটনার পরে স্কুলের অন্য ছাত্রীদের নিয়েও আলাদা করে কাউন্সেলিং করেন স্কুলের শিক্ষিকারা। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের এ হেন আচরণে কী কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা তাদের বোঝান শিক্ষিকারা।
এক শিক্ষিকা জানান, তিন ছাত্রী শেষ পর্যন্ত মদ্যপান করতে পারেনি। কিন্তু ক্লাসের অন্য ছাত্রীদের জেরা করে স্কুল জানতে পারে, তিন জন আগেই ওই পরিকল্পনা করেছিল। স্কুল সূত্রে খবর, সাসপেন্ড হওয়া দুই ছাত্রীকে ফের ওই স্কুলেই ফিরিয়ে নেওয়া হবে। সোমবার স্কুলের পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy