চিড়িয়াখানা বন্ধের নোটিস। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
‘ফণী’র ভয়ে রাতের ভোজ বিকেলের মধ্যেই সেরে ফেলতে হল বাঘ-সিংহদের!
আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শুক্রবার দিনের আলো থাকতে থাকতেই রাতের খাবার খাইয়ে খাঁচার ভিতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাদের। শুধু বাঘ বা সিংহই নয়, একই ব্যবস্থা করা হয়েছিল হাতি, জাগুয়ার, চিতাবাঘ, ভাল্লুক, ক্যাঙারু ও শিম্পাঞ্জির জন্যেও। চিড়িয়াখানার কর্মীরা জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে জীবজন্তুরা অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করলে
তারা ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করে না। সেই কারণেই এ দিন তাদের
বিকেলের মধ্যে খাইয়ে দেওয়া হয়। হাতিরা আবার অনেক সময়ে নিজেদের ‘এনক্লোজার’ থেকে বিকেলের পরেও বেরিয়ে আসে। তাদের যাতে কোনও ভাবে ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হাতিদের পায়ে বেড়ি পরিয়ে দেওয়া হয়। শিম্পাঞ্জি
বাবু সকালের দিকে অবশ্য এক বার গুহা থেকে বেরিয়েছিল। বৃষ্টি শুরু হতেই সে খাঁচার ভিতরে চলে যায়। চিড়িয়াখানার এক কর্মী জানান, এ দিন দুপুরে সব চেয়ে বেশি খুশি হতে দেখা গিয়েছে ময়ূর ও ম্যাকাওদের।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত বলেন, ‘‘যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেই এদের আচরণে কিছু অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। খাঁচার সামনে কোনও গাছ পড়লে বা খাঁচা কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে এরা বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়। তখনই সমস্যা তৈরি হয়।’’ তিনি জানান, শুক্রবার বিকেল থেকে সিসিটিভি-র মাধ্যমে প্রতিটি খাঁচার উপরে নজর রাখা হয়েছিল, যাতে জীবজন্তুরা কোনও অস্বাভাবিক আচরণ করলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তৈরি ছিলেন পশুদের চিকিৎসকেরাও।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঝড়ের কারণে শুক্র ও শনিবার সাধারণ দর্শকদের জন্য চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখা হচ্ছে। গাছ উপড়ে অঘটন ঠেকাতে ছাঁটা হয়েছে সেখানকার অনেক পুরনো গাছ। এ ছাড়া, রাজ্য বন দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী এ দিন থেকে ৩৫ জন ‘জু-কিপার’-কে রাখা হয়েছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, সমস্যা তৈরি হয়েছে হরিণ, জিরাফ, জলহস্তী ও গন্ডারদের নিয়ে। আশিসবাবু জানান, এরা খাঁচার মধ্যে থাকতে চাইছে না। তাই তাদের বাইরেই রাখা হয়েছে। তবে বিশেষ নজরদারিতে।
খাঁচা যদি কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা হলে কি প্রাণীরা বাইরে
বেরিয়ে আসতে পারে? চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানান, বাঘ, সিংহ-সহ মাংসাশী সমস্ত প্রাণীর খাঁচা এমন ভাবে তৈরি করা যে, ভূমিকম্প
হলেও সেগুলি নষ্ট হবে না। পাখিদের খাঁচাও খুবই শক্তপোক্ত করা রয়েছে। গন্ডার ও জলহস্তীদের ‘এনক্লোজার’ যে ভাবে তৈরি, সেখান থেকে বেরোনো সম্ভব নয়। কুমিরদের ‘এনক্লোজার’ও নতুন করে সারানো হয়েছে বলে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy