Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

বেহালার জমা জলে ডেঙ্গির শঙ্কা

ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর বাজারের জঞ্জাল-ভর্তি জায়গাটা হয়ে উঠেছে মশার আঁতুড়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১২২ ওয়ার্ডের সীমানা এলাকায় একাধিক নতুন ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি হচ্ছে।

দুর্দশা: খোলা নিকাশি। শুক্রবার, দত্তের মাঠ এলাকায়। ছবি: অরুণ লোধ

দুর্দশা: খোলা নিকাশি। শুক্রবার, দত্তের মাঠ এলাকায়। ছবি: অরুণ লোধ

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০০:২৫
Share: Save:

বেহালার অক্ষয় দত্ত লেনের বাসিন্দা, ৫৪ বছরের মিতা চৌধুরী গত ২০ অক্টোবর জ্বর নিয়ে মোমিনপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে ছ’ দিনের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসাবে ডেঙ্গির উল্লেখ করেছে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল।

কিন্তু তারই কিছু দিনের মধ্যে বামাচরণ রায় রোডের বাসিন্দা এক যুবক জ্বর নিয়ে একই হাসপাতালে ভর্তি হন এবং সেখানেই মারা যান। পরিজনদের দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। যদিও মৃত্যুর কারণ হিসাবে ডেঙ্গি লেখেনি হাসপাতালটি।

মাসখানেকের ব্যবধানে এই দুই মৃত্যুতে বেহালায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই মুহূর্তে বেহালা ও তার আশেপাশে ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা যথেষ্ট। কয়েক মাসে বেহালা ও সংলগ্ন ১১৫, ১২২, ১২২ ও ১২৩-এর সীমানা এলাকা, ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডে অনেক বাসিন্দাই ডেঙ্গি আক্রান্ত।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেহালা ও সংলগ্ন এলাকার বেশির ভাগ জায়গায় জঞ্জাল ও জল জমার সমস্যা ডেঙ্গির প্রকোপের অন্যতম কারণ। বৃষ্টি হলেই জমা জল নামতে দীর্ঘ দিন সময় লাগে। এ ছাড়া কিছু জলাজমি তো আছেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বেহালার বেশির ভাগ জায়গায় আগে খোলা নিকাশি ব্যবস্থা ছিল। পরে ভূ-গর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থা করা হলেও খোলা নিকাশি রয়ে গিয়েছে অনেক জায়গায়। সামান্য বৃষ্টিতেও জমে-যাওয়া জলই মশার লার্ভার আদর্শ।

আর জঞ্জাল? বেহালা ও সংলগ্ন প্রতিটি ওয়ার্ডেই রাস্তার ধারে জমে থাকে আবর্জনা। এমনও জায়গা আছে, যেখানে জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় পর বছরের পর বছর জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন আবর্জনা ফেলায় তা রীতিমত স্তূপে পরিণত হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেই অনবরত হুল বিঁধিয়ে মশারা জানান দেবে তাদের অস্তিত্ব। ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর বাজারের জঞ্জাল-ভর্তি জায়গাটা হয়ে উঠেছে মশার আঁতুড়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১২২ ওয়ার্ডের সীমানা এলাকায় একাধিক নতুন ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি হচ্ছে। জল জমছে ওই ওয়ার্ড ও সংলগ্ন ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডেও। নিচু এলাকা বলে জমা জল বেরনোর রাস্তা নেই। ঈশ্বর ঘোষ রোড, সোদপুর রোড, মতিলাল গুপ্ত রোড, বকুলতলার দত্তের মাঠ প্রভৃতি এলাকায় নিকাশির জমা জলে মশার দাপট বরাবর বেশি। ১৩ নম্বর বরো-র চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষের বক্তব্য, আগের তুলনায় পরিস্থিতি এখন ভাল।

সমস্যার কথা মানছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘সব বরো এবং তার অধীনের প্রতিটি ওয়ার্ডে জমা জল এবং জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়মিত সে সব কাজের নজরদারিও চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Malaria Water pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE