জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা, সমীক্ষা, নজরদারি এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে অন্যতম পথিকৃৎ সংস্থা ‘ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’। কলকাতার একেবারে কেন্দ্রস্থলে এবং ঘটনাচক্রে যেখানে করোনা হাসপাতাল তৈরি হয়েছে, সেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পাশেই রয়েছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। কিন্তু জনস্বাস্থ্যের এই চূড়ান্ত জরুরি পরিস্থিতিতেও শুধুমাত্র কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয় আর বোঝাপড়ার অভাবে করোনা মোকাবিলায় এই সংস্থাকে ব্রাত্য রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক আধিকারিকই মানছেন, এমন অবস্থায় হাইজিনের সহযোগিতা পেলে কাজটা সহজ হত।
ওই সংস্থায় এপিডেমিয়োলজিস্ট, কমিউনিটি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মিলিয়ে প্রায় ৭০ জন চিকিৎসক আছেন। যাঁদের কাজ বা গবেষণার মূল বিষয়ই হল, মহামারির মোকাবিলা। অথচ কেন্দ্র বা রাজ্য, কোনও সরকারই তাঁদের ব্যবহার করছে না। এমনকি, তাঁদের চিকিৎসকেরা কাজ করতে চাইলেও প্রয়োজনীয় পোশাক ও পরিকাঠামো পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে দেশের মুখ্য স্বাস্থ্য-অধিকর্তা রাজীব গর্গের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কিছু বলতে চাননি। আর রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই সংস্থার কাছ থেকে আমাদের কোনও সাহায্য দরকার নেই। অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হতে পারে। আমরা নিজেরাই এখনও সামলাতে পারছি। ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র স্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে কথা
হয়েছে। তাঁরাও প্রশিক্ষণ ও নজরদারির কাজ চালাবেন।’’
কিন্তু এই নজরদারি, প্রশিক্ষণ এবং সরাসরি সরকারি চিকিৎসকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ার কাজটা তো হাইজিনের চিকিৎসকেরাও করতে পারতেন? স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা অনেকেই হাইজিন থেকে পাশ করেছি। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ে সেখানকার বিশেষজ্ঞদের ব্যবহার করা হচ্ছে না। কারণ, কেন্দ্র বা রাজ্য কেউই এই সময়ে রোগ মোকাবিলায় নিজেদের কৃতিত্ব ভাগ করে নিতে চাইছে না।’’