Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা পার হতে বেশি সময়, কমে গেল গতি

এ দিন সেখানে নতুন করে কিছু ঘটেনি। গত শনিবার চিংড়িঘাটা মোড়ে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তার পরে সেখানে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। চালু হয়েছে ‘ম্যানুয়াল’ পদ্ধতি। ফলে রাস্তা পারাপারের জন্য কিছুটা বেশি সময় পাচ্ছেন পথচারীরা। সেই কারণেই যানজট হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২৮
Share: Save:

রাস্তায় আটকে রয়েছে বাস। মিনিট দশেক ওই ভাবে কাটার পরেই যাত্রীদের মধ্যে শুরু হল গুঞ্জন। ফের কোনও দুর্ঘটনা ঘটল না তো! সোমবার সকালে এই ছবি দেখা গেল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন থেকে চিংড়িঘাটা মোড় এবং নিকো পার্কমুখী রাস্তায়। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়া বাসের জানলা থেকে উঁকি দিচ্ছেন যাত্রীরা। কী হয়েছে, জানতে উৎসুক সকলেই।

এ দিন সেখানে নতুন করে কিছু ঘটেনি। গত শনিবার চিংড়িঘাটা মোড়ে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তার পরে সেখানে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। চালু হয়েছে ‘ম্যানুয়াল’ পদ্ধতি। ফলে রাস্তা পারাপারের জন্য কিছুটা বেশি সময় পাচ্ছেন পথচারীরা। সেই কারণেই যানজট হচ্ছে।

সে দিনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে প্রশাসন একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু তাতেও সমস্যা মিটবে কি? প্রশ্ন গাড়িচালক ও পথচারীদের। তাঁদের এই সংশয়ের নেপথ্যে কারণও রয়েছে যথেষ্ট। বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়ে চোখ রাখলেই তা স্পষ্ট হয়।

সল্টলেকের দিক থেকে চিংড়িঘাটা মোড়ে একটি পথই চার ভাগ হয়ে মিশেছে বাইপাসে। যে রাস্তাটি বাইপাসে উঠে সায়েন্স সিটির দিকে যায়, সেটিকে এত দিন ‘ফ্রি লেন’ হিসেবে ব্যবহার করা হত। অর্থাৎ, ওই লেন ধরে সল্টলেক থেকে সায়েন্স সিটি যাওয়ার পথে দাঁড়াতে হত না। ফলে নিকো পার্ক থেকে বাইপাসের রাস্তায় যানজট কমে গিয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার পরে সেই ফ্রি লেন বন্ধ।

দ্বিতীয় লেনটি ধরে সল্টলেক থেকে বাইপাসে উঠে বেলেঘাটা সাউথ ক্যানাল রোড ও বেলেঘাটা চাউলপট্টির দিকে যাওয়া যায়। তৃতীয় লেনটি ধরে উল্টোডাঙা বা বেলেঘাটা থেকে নিকো পার্কের দিকে যাওয়া যায়। চতুর্থ লেনটি খালপাড়ের রাস্তা। ওই রাস্তা ধরে উভয় দিক দিয়েই সল্টলেক থেকে বাইপাসে ওঠা যায়। উল্টো দিকে বেলেঘাটা থেকে দু’টি রাস্তা ওই মোড়ে গিয়ে মেশে।

ফলে মোড় একটি হলেও আটমুখী পথে গাড়ি চলাচল করে চিংড়িঘাটা দিয়ে। ওই মোড়ের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা দেখে কলকাতা পুলিশ। এত দিন গাড়ির চাপ কমাতে ফ্রি লেন ও বাইপাস, দু’দিক দিয়েই গাড়ি চলাচল করত। পাশাপাশি ওই লেনগুলি বন্ধ রেখে সল্টলেক এবং বেলেঘাটার মধ্যে যান চলাচল করত। একই ভাবে রাস্তা পারাপার করানো হত পথচারীদেরও।

এতে যানজট নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনাও ঘটছিল। শনিবারের দুর্ঘটনা যার সব চেয়ে বড় উদাহরণ। এর পরেই ফ্রি লেন বন্ধ করে দিয়ে পথচারীদের পারাপারের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি বেড়েছে। কিন্তু তার জেরে একই মোড়ে আগের তুলনায় অনেক বেশি বার সিগন্যাল চালু ও বন্ধ করতে হচ্ছিল। যার ফলে কমে যায় গাড়ির গতি। এর পরেই সিগন্যাল ব্যবস্থা ‘ম্যানুয়াল’ করা হয়।

কিন্তু তাতেও দুর্ঘটনা কমা নিয়ে সংশয়ী এলাকাবাসী ও গাড়িচালকেরা। কারণ, সল্টলেক এবং বেলেঘাটার মধ্যে পথচারীরা রাস্তা পারাপার করতে গেলেই অনেক ক্ষেত্রে গাড়ির মুখোমুখি পড়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

বিধাননগর এবং কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, সমস্যা মেটাতে একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেগুলি বাস্তবায়িত হলেই সমস্যা মিটে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chingrighata Bus Accident Public Fear
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE