নিজস্ব চিত্র।
পুর কোষাগারে টাকা নেই। অগত্যা কর্মীদের বেতন দিতে হাত পড়ল স্থায়ী আমানতে! কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিয়েছেন, এমনই ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ অবস্থা তাঁদের।
বছরখানেক আগে বার্ষিক আয় থেকে ১০০ কোটি টাকা ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন হাওড়া পুর কর্তৃপক্ষ। গত ৩৫ বছরে যা ছিল প্রথম। উদ্দেশ্য ছিল কোষাগারের অভাব মেটানো। কিন্তু পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সেই ভাণ্ডারে অর্থাভাব দেখা দেওয়ায় এক প্রকার বাধ্য হয়ে স্থায়ী আমানতে
হাত দিতে হয়েছে। কর্মীদের বকেয়া বেতন দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই সেখান থেকে তোলা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। শীঘ্রই আরও চার কোটি টাকা তোলা হচ্ছে বর্তমান মাসের বেতন দিতে এবং অর্থাভাবে আটকে থাকা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ফের চালু করতে।
পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমান বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে বিভিন্ন দফতরে অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রচুর কর্মী নিয়োগ করা হয়। স্বাস্থ্য দফতরে নেওয়া হয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার মহিলা কর্মী। জঞ্জাল অপসারণ দফতরে নেওয়া হয় প্রায় ২৮০০ কর্মী। এ ছাড়া শিক্ষা, পার্ক ও উদ্যান, কর মূল্যায়ন, মেয়র্স কপ-সহ পুরসভার আরও ১৫টি দফতরে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১০ হাজার কর্মী নেওয়া হয়। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই কর্মীদের শুধু বেতন দিতেই মাসে খরচ হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। তা মেটাতে গিয়ে এখন নাজেহাল অবস্থা পুরকর্তাদের।
কিন্তু কেন এই অর্থাভাব?
তৃণমূল শাসিত হাওড়া পুরবোর্ডের কর্তারা এর প্রধান কারণ হিসেবে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতাকে দায়ী করছেন। পুরকর্তাদের অভিযোগ, গত সাত মাস ধরে দু’দফায় পুর কমিশনার পাল্টে যাওয়ায় বিভিন্ন দফতরের প্রায় দেড় হাজার ফাইল জমে গিয়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাজস্ব আদায়। যেমন, বিল্ডিং দফতরে প্রচুর ফাইল আটকে থাকায় বেআইনি বাড়ির জরিমানা বাবদ যে আয় হয়, তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একই অবস্থা কর মূল্যায়ন দফতরের। ওই দফতরের আয়ও কমে গিয়েছে। আর এ সবের জন্য সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন তৃণমূল বোর্ডের আমলে বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ হওয়া প্রায় ১০ হাজার অস্থায়ী কর্মী। এত দিন তাঁদের বেতন দেওয়া হত পুরসভার আদায় হওয়া রাজস্ব থেকে। এমনকী, ওই টাকা থেকেই ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানত প্রতি মাসে বাড়ানো হচ্ছিল। কিন্তু, সাত মাস আগে থেকে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কমতে শুরু করায় গত ডিসেম্বর থেকে পুরসভায় চরম অর্থসঙ্কট শুরু হয়েছে।
পুরসভার অর্থ দফতরের এক অফিসার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে শুধু বিল্ডিং দফতরে যেখানে গত বছর আয় হয়েছিল ৫৩ কোটি টাকা, এ বছর ৬ মার্চ পর্যন্ত সেখানে আয় হয়েছে মাত্র ২৮ কোটি। এ ছাড়া অন্যান্য দফতরেও আয় তলানিতে ঠেকেছে।’’
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘প্রচুর ফাইল জমে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থায়ী আমানত ভাঙতে হয়েছে।’’ যদিও পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ‘‘ফাইল আটকে থাকার অভিযোগ ঠিক নয়। যে সব ফাইল জমে ছিল, তা নিয়মিত ছাড়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy