দীপাবলির রাতে চাল ফুঁড়ে তাঁর ঘরে গুলি ঢুকে গিয়েছিল বলে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রতনবাবু। প্রতীকী ছবি।
তদন্তের স্বার্থে ঘরের চালটাই খুলে দিতে হবে গৃহস্থকে! আপাতত তা নিয়েই চিন্তায় মানিকতলার ওই গৃহস্থ রতন সরকার। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘চাল খুলে নিয়ে যেতে চাইলে যাক। কষ্ট করে হলেও নতুন চাল লাগাব। কিন্তু গুলির ভয় থেকে আমার পরিবারকে বাঁচাক পুলিশ।’’
দীপাবলির রাতে চাল ফুঁড়ে তাঁর ঘরে গুলি ঢুকে গিয়েছিল বলে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রতনবাবু। তাঁর দাবি ছিল, ওই ঘটনায় তাঁর মেয়ে পূজা অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন। পূজা বেসিনে হাত ধুচ্ছিলেন। ঠিক তখনই ছাদ ফুঁড়ে ঘরে ঢুকে যায় গুলির মতো একটি জিনিস। সেটির আঘাতে ফুটো হয়ে যায় বেসিন এবং বেসিনে রাখা থালা। ঘরের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় গুলির খোলের মত একটি বস্তুও। এই ঘটনার তদন্তেই নমুনা সংগ্রহের জন্য এ বার রতনবাবুর ঘরের চাল কেটে নিয়ে যেতে চাইছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।
রতনবাবু জানান, গত শুক্রবার মানিকতলা থানার তদন্তকারীদের পাশাপাশি তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন লালবাজারের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও। ফুটো হওয়া থালা-বাটির নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে নানা দিক থেকে ঘরের ছবিও তোলেন। চালে উঠে গুলি চালানোর সম্ভাব্য স্থানও অনুমান করার চেষ্টা করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সেই সময়ে ফরেন্সিক ডিরেক্টর ওয়াসিম রাজা
জানান, চালের গুলি লাগা অংশটি কেটে নিয়ে যাওয়া হবে। এ কথা শুনে প্রথমে অবাক হয়ে যান রতনবাবুরা। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘তিনতলা বাড়ির একতলায় আমাদের একটি ঘর আছে। দোতলায় থাকে ভাড়াটেরা। তিনতলাতেই আমরা সব সময়ে থাকি। ওই ঘরের উপরে সিমেন্টের ছাদ নেই, রয়েছে টিনের চাল। ওই চাল কেটে নিয়ে গেলে থাকব কী করে?’’
পেশায় কেব্ল অপারেটর রতনবাবু অবশ্য পরে চালটি দিয়ে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলছেন, ‘‘ফের চাল লাগাব। তদন্তে বাধা দেওয়া যাবে না।
আমরাও জানতে চাই ওই গুলি কে চালাল।’’ ফরেন্সিক ডিরেক্টর রাজা বলেন, ‘‘এটা তদন্তের পদ্ধতি। যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার নানা নমুনা সংগ্রহ করি আমরা। ওই চালও সেই জন্যই প্রয়োজন।’’
যদিও ঘরে ঢোকা জিনিসটি আদৌ গুলি কি না, এখনও তা নিয়ে মন্তব্য করতে চান না রাজা। মানিকতলা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকও বলেন, ‘‘ফরেন্সিক রিপোর্ট এলেই উচ্চ-আধিকারিকদের পাঠাব। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ এই ঘটনায় নিয়ে রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকেই আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy