Advertisement
E-Paper

দোকানেই পড়ে রইল মিষ্টি

শুধু বরাত দেওয়া মিষ্টিই নয়, নির্বাচনের ফল ঘোষণা উপলক্ষে বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে অন্যান্য বার সাধারণ মিষ্টির যে পরিমাণ চাহিদা থাকে, এ বার তা-ও নেই।

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০২:৩০
বিক্রি না হওয়া মিষ্টি। নিজস্ব চিত্র

বিক্রি না হওয়া মিষ্টি। নিজস্ব চিত্র

ভোট গণনার আগেই এসে গিয়েছিল মিষ্টির বরাত। সবুজ, কমলা, লাল— এক-এক দলের এক-এক রকম।

কিন্তু সেই সব মিষ্টির অধিকাংশই পড়ে আছে দোকানে। কারণ, কেউ নিতে আসেননি। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন শহর ও শহরতলির বেশ কিছু মিষ্টি বিক্রেতা। শুধু বরাত দেওয়া মিষ্টিই নয়, নির্বাচনের ফল ঘোষণা উপলক্ষে বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে অন্যান্য বার সাধারণ মিষ্টির যে পরিমাণ চাহিদা থাকে, এ বার তা-ও নেই।

গত কয়েক বছর ধরেই মিষ্টি বিক্রেতাদের একাংশ বিভিন্ন দলের প্রতীকওয়ালা নির্বাচনী সন্দেশ তৈরি করছেন। ভোটের সময়ে দলের কর্মী ও প্রার্থীদের মধ্যে এই ধরনের মিষ্টির চাহিদা বেশি থাকে। শুধু সন্দেশই নয়, নানা রঙের রসগোল্লাও তৈরি করেন ওই মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। ভোটের ফল ঘোষণার পরে সাধারণ মিষ্টির পাশাপাশি এই ধরনের মিষ্টির চাহিদা বেশি থাকে।

রিষড়ার ‘ফেলু মোদক’-এর কর্ণধার অমিতাভ দে বলেন, ‘‘ফল ঘোষণার আগে অনেকেই সন্দেশ ও রসগোল্লার অর্ডার দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফল বেরোনোর পরে সেগুলি আর নিতে আসেননি। এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। কোনও নির্দিষ্ট একটি দল নয়, সবাই যেন গা-ছাড়া।’’ বরাত পেলে রসগোল্লা ছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদীর ছোট ক্ষীরের মূর্তিও তৈরি করেন তাঁরা। কিন্তু এ বার কেউ বরাত না দেওয়ায় তা তৈরি হয়নি।

ভোটের ফল বেরোলে টিন ভর্তি রসগোল্লার অর্ডার পেত কে সি দাশ। সংস্থার অধিকর্তা ধীমান দাস বলেন, ‘‘এ বারের মতো মিষ্টির বাজারে এত মন্দা আগে দেখিনি। কারও কোনও অর্ডারই নেই। কেউ কিনতেও আসছেন না।’’ ধীমানবাবুর কথায়, ‘‘এক সময়ে নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরে খাস আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে নগদ টাকা দিয়ে রসগোল্লা কিনে নিয়ে যাওয়া হত। এখন তা ইতিহাস।’’

সন্দেশ প্রস্তুতকারক গিরীশচন্দ্র দে ও নকুড়চন্দ্র নন্দীর তরফে পার্থ নন্দী জানান, ভোটের জন্য আলাদা কোনও সন্দেশ তাঁরা তৈরি করেন না। তবে এ বার ভোটের সময়ে বাজার ভাল ছিল না বলেই অভিযোগ তাঁর। পার্থবাবু বলেন, ‘‘নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে আলাদা ভাবে বিক্রি বাড়েনি। প্রতিবারই এ সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরে বিক্রি কিছুটা বাড়ে। তেমনই বেড়েছে। আলাদা কিছু নয়।’’

পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তথা ‘সুরভি’-র অন্যতম অংশীদার জগন্নাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ভোটের সময়ে মিষ্টির যেমন চাহিদা থাকে, এ বার তা একেবারেই নেই। কারণটা বলা শক্ত। বিজয়ী দলের কর্মীরা প্রতিবারই স্থানীয় এবং বড় মিষ্টির দোকান থেকে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি কেনেন। তাই অর্ডারের বাইরেও অনেকে বাড়তি মিষ্টি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু বিক্রি না হওয়ায় সেগুলি নষ্ট হতে বসেছে।’’ তাঁর আর্জি, যাঁরা মিষ্টির বরাত দিয়েছেন, তাঁরা যেন সেগুলি বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়ে যান।

বরাত দেওয়া মিষ্টি যে সর্বত্রই পড়ে আছে, তা অবশ্য নয়। বলরাম মল্লিক এ বার তৈরি করেছিল ‘সাফল্যের অভিনন্দন’ সন্দেশ। সংস্থার কর্ণধার পপি মল্লিক বলেন, ‘‘বিভিন্ন দল এই বিশেষ সন্দেশ নিয়ে গিয়েছে। তাই এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে সমস্যা হয়নি।’’

Election Results 2019 Lok Sabha Election 2019 Sweets
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy