খাইব সুখে: চলছে ইলিশ কেনাবেচা। রবিবার, গড়িয়াহাট বাজারে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
চলতি মরসুমে এই প্রথম দেদার ‘রুপোলি শস্যের’ দেখা মিলল শহর থেকে শহরতলির বাজারে বাজারে। রবিবার ছুটির দিনে বাঙালিকে সাধের ইলিশ হাতে বাড়িমুখো হতেও দেখা গেল।
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার দিঘার মোহনায় প্রায় ২৫ টন ইলিশ উঠেছে। গত বুধবার থেকেই দিঘাতে প্রচুর ইলিশ উঠছে। বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্র থেকে নামখানা ও কাকদ্বীপেও গত দু’দিন ধরে প্রায় চল্লিশ টন ইলিশ মাছ উঠেছে। ওই ইলিশ রাজ্যের পাশাপাশি, কলকাতার বিভিন্ন বাজারেও ঢুকছে। শনিবারও শহর ও শহরতলির বিভিন্ন বাজারে ইলিশের দেখা মিলেছিল ভালই। তবে শনিবারের তুলনায় রবিবার ইলিশের দর ছিল হাতের নাগালে। ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ইলিশ এ দিন বিক্রি হয়েছে পাঁচশো থেকে ছ’শো টাকা কেজিতে। ৬০০ থেকে ৭৫০ ওজনের মাছ বিকিয়েছে আটশো টাকায় এবং এক কেজি থেকে দেড় কেজি ইলিশ বারোশো থেকে পনেরোশো টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
গড়িয়াহাট মাছ বাজারের সম্পাদক শ্যামাকান্ত দে বলেন, ‘‘বর্ষা শুরু হলেও এ বার ইলিশের আমদানি না হওয়ায় অনেক ক্রেতাই আফশোস করছিলেন। শনিবার থেকে তাঁদের মুখে হাসি ফুটেছে।’’ একই বক্তব্য মানিকতলা বাজারের সম্পাদক প্রভাত দাসেরও। প্রভাবতবাবুর কথায়, ‘‘গত দু’দিন ধরে ভালই ইলিশ ঢুকেছে। তবে বড় সাইজের তুলনায় পাঁচশো গ্রামের কম ওজনের ইলিশই বেশি।’’ ইলিশের আমদানি আরও বাড়লে দামও কমবে বলে জানালেন গড়িয়াহাট ও মানিকতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা। রবিবার একই ছবি দেখা গেল দমদম, নাগেরবাজার, সল্টলেক, উল্টোডাঙা, নিউ মার্কেট, লেক মার্কেট বা বেহালার বাজারে। সব বাজারেই ছিল ইলিশের ছ়ড়াছড়ি।
ইলিশ ধরার অনুকূল পরিস্থিতি হল পুবালি হাওয়া ও ঝিরঝিরে বৃষ্টি। নিম্নচাপের জন্য গত দু’দিন ধরে ইলিশ ধরার সেই অনুকূল আবহাওয়া সৃষ্টি হওয়ায় মৎস্যজীবীদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠে আসছে বলে জানাচ্ছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, ১৪ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। ওই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে পাড়ি দিয়েও আশানুরূপ ইলিশের দেখা পাননি। এ বার অবশ্য তাঁদের মুখে হাসি ফুটেছে।
তবে শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল, শহর এবং শহতলির বিভিন্ন বাজারে আসা বেশির ভাগ মাছের ওজন পাঁচশো গ্রামের কম। যা ধরা বা বিক্রি করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। মাছ আমদানিকারক সংস্থার সভাপতি অতুলচন্দ্র দাসের অভিযোগ, ‘‘মৎস্য দফতরের নজরদারির অভাবেই শহরের বাজারে আসা মোট ইলিশের প্রায় আশি শতাংশই পাঁচশো গ্রামের কম থাকে। এটা পুরোপুরি বেআইনি।’’ মৎস্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘নজরদারি চালানোর জন্য আমাদের লোকবলের অভাব রয়েছে। তা ছাড়া যাঁরা পাঁচশো গ্রামের কম ওজনের মাছ ধরছেন বা বিক্রি করছেন তাঁদের আমরা গ্রেফতার করতে পারি না। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনল্যান্ড ফিসারিশ অ্যাক্ট সংশোধন করে যাতে দোষীদের গ্রেফতার করা যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy