Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভিড় সামলাতে মেট্রোয় এ বার অটোর মতো কাটা রুট?

গত কয়েক দিন ধরে ভিড় সামলাতে কলকাতা মেট্রোয় এমন পদ্ধতিই অনুসরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের একাংশের। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, ভিড়ের কারণে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামলাতে ওই ব্যবস্থা।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৭
Share: Save:

অটোর মতো মেট্রোতেও কী এ বার কাটা রুট চালু হল?

গত কয়েক দিন ধরে ভিড় সামলাতে কলকাতা মেট্রোয় এমন পদ্ধতিই অনুসরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের একাংশের। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, ভিড়ের কারণে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামলাতে ওই ব্যবস্থা।

কী ভাবে ‘কাটা রুটে’ চলছে মেট্রো?

গত বৃহস্পতিবার সকালে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে প্রতীক্ষারত যাত্রীরা দেখেন, কোনও যাত্রী না তুলে হু হু করে দমদম অভিমুখে বেরিয়ে যাচ্ছে একটি মেট্রোর খালি রেক। এ দিকে, মেট্রোর তরফে কোনও ঘোষণা নেই। বিভ্রান্ত যাত্রীরা হতভম্ব, কী ঘটল তা কারও কাছেই স্পষ্ট নয়। যাত্রীদের অনেকের মনে হল, চালক কী তবে ট্রেন থামাতে ভুলে গেলেন? কয়েক মিনিট পরে যাত্রীদের নিয়ে দমদম অভিমুখে রওনা হল পরবর্তী মেট্রো। কিন্তু আগের রেকটি কেন প্ল্যাটফর্মে থামল না, তার কিছুই জানতে পারলেন না যাত্রীরা। খটকা থেকেই গেল।

শুক্রবার বিকেলের দমদম স্টেশন। ওই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হল। প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের কাউকে না নিয়ে সটান খালি রেক কবি সুভাষ অভিমুখে বেরিয়ে গেল।

যাত্রীদের দাবি, এ বারেও মেট্রোর তরফে ঘোষণা না করায় তাঁরা বুঝতে পারলেন না, কেন থামল না ওই ট্রেন। মেট্রো রেলের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পরে দমদম কিংবা কবি সুভাষগামী ওই মেট্রোগুলি কয়েকটি স্টেশন পেরিয়ে টালিগঞ্জ কিংবা মহাত্মা গাঁধী রোড স্টেশন থেকে যাত্রীদের নিয়ে নিয়মমাফিক রওনা হয়েছে। এর পরের সব স্টেশনেই স্বাভাবিক নিয়মে মেট্রো থেমেছে এবং যাত্রীরা ওঠা-নামা করেছেন।

কিন্তু আচমকা কেন এই ব্যবস্থা? মেট্রো সূত্রের খবর, ব্যস্ত সময়ে উত্তর এবং দক্ষিণের কিছু স্টেশনে মাঝেমধ্যেই হু হু করে ভিড় বাড়ছে। কোনও কারণে ট্রেন দেরিতে চললে ওই স্টেশনগুলির পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। ভিড়ে ঠাসা দমদম বা কবি সুভাষের মতো প্রান্তিক স্টেশন থেকে যাত্রী বোঝাই ট্রেন, পরবর্তী স্টেশন থেকে যাত্রী তুলতে-নামাতে কার্যত নাকাল হয়। মেট্রো কর্তাদের দাবি, ভিড়ে থিক থিক করা মেট্রো পরবর্তী স্টেশনে থামলে সমস্যা আরও বাড়ছে। যেমন, যাত্রীরা জোর করে মেট্রোয় উঠতে গিয়ে দরজা আটকে যাচ্ছে। এর কারণে চাঁদনি চক, এসপ্লানেড, রবীন্দ্র সদন, কালীঘাটের মতো স্টেশনে অযথা এক থেকে দেড় মিনিট সময় নষ্ট হচ্ছে। ফলে ওই ট্রেন যেমন সময়ে ছুটতে পারছে না, তেমনই পিছনের ট্রেনগুলির গতিও ব্যাহত হচ্ছে। মেট্রো আধিকারিকদের মতে, ‘‘এক বার ওই ‘দুষ্ট-চক্রে’ ঢুকে পড়লে সারাদিন আর মেট্রো চলাচলের হাল ফেরানো যায় না।’’

এই পরিস্থিতি সামালাতে তাই ‘কাটা রুটের’ ব্যবস্থা। এক মেট্রো কর্তার দাবি, আচমকা ভিড় বাড়তে থাকা স্টেশনগুলির খবর স্টেশন সুপারের মাধ্যমে জেনে সেই মতো বিশেষ ট্রেন চালিয়ে ভিড় হাল্কা করা হচ্ছে। ওই কর্তা বলেন, ‘‘এটা কোনও ভাবেই স্থায়ী ব্যবস্থা নয়। পুরোটাই আপৎকালীন। ভিড়ের চাপে যাতে পরিষেবা মুখ থুবড়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।’’

কিন্তু এমন ক্ষেত্রে যাত্রীদের আগাম কেন জানানো হচ্ছে না? এ নিয়ে ওই কর্তা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার কথা বলেন তিনি। তবে মেট্রো আধিকারিকদের একাংশের মতে, পুরনো রেক নিয়ে তাঁরা সমস্যায় জর্জরিত। মাঝেমধ্যেই নানা কারণে তৈরি হওয়া যাত্রীদের বিক্ষোভ দ্রুত ভাঙচুরের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। যাত্রীদের একাংশ সমস্যার কথা শুনতেই চান না। তাঁরা দ্রুত সমাধান পেতে আগ্রহী। ফলে সে দিকে মন দিতে গিয়ে ঘোষণায় ফাঁক থেকে যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Metro Metro Crowd
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE