Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta News

লোহার রড বিঁধেছিল মাথায়, অস্ত্রোপচারের পর বাড়ি ফিরলেন তারিক

এক মাস আগে কেষ্টপুরের গাড়ি দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হয়েছিলেন বছর চব্বিশের তারিক। ডিভাইডারের রেলিংয়ের রড মাথায় ঢুকে যাওয়ায় মস্তিষ্কের প্রধানত তিনটি অংশের ক্ষতি হয়েছে।

তখনও হসপাতালে। মাসখানেক পর অবশেষ বাড়ি ফিরেছেন তারিক। —নিজস্ব চিত্র।

তখনও হসপাতালে। মাসখানেক পর অবশেষ বাড়ি ফিরেছেন তারিক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ১৯:৫০
Share: Save:

কপাল ভেদ করে সাড়ে তিন ফুটের রডটি মাথার পিছন দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। তিনি বেঁচে ফিরবেন— এমন ভরসা ছিল না তাঁর পরিজনদেরও। জটিল অস্ত্রোপচারের পর ফের যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। মঙ্গলবার হাসপাতাল ছেড়ে পার্ক সার্কাসের বাড়িতে ফিরেছেন তারিক মহম্মদ।

এক মাস আগে কেষ্টপুরের গাড়ি দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হয়েছিলেন বছর চব্বিশের তারিক। ডিভাইডারের রেলিংয়ের রড মাথায় ঢুকে যাওয়ায় মস্তিষ্কের প্রধানত তিনটি অংশের ক্ষতি হয়েছে। যার জন্য, তারিক বাঁ-চোখের পাতা নাড়াতে পারছেন না। ডান দিকের হাত ও পায়ে সাড় নেই। কথাও বলতে পারছেন না। চিকিৎসকদের দাবি, ফিজিওথেরাপি ও স্পিচথেরাপির সাহায্যে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠবেন তারিক।

২৮ এপ্রিল রাত ১টা নাগাদ বন্ধুর গাড়িতে তারিকরা তিন জন বাইপাস থেকে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর বন্ধু। তারিক ছিলেন সামনে। কেষ্টপুর সেতুর কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি ডিভাইডারে উঠে যায়। সেখানকার রেলিংয়ের রড ঢুকে যায় তারিকের কপাল ফুঁড়ে। পুলিশ এসে দমকলকে ডেকে লোহার রড কেটে তারিককে উদ্ধার করে অ্যাপোলো হাসপাতালে পাঠায়।

আরও পড়ুন
আইসিইউ থেকে মুক্ত দিলচাঁদ, ছাড়া পাচ্ছেন শীঘ্রই

দুর্ঘটনায় সাড়ে তিন ফুটের রড এ ভাবেই ঢুকে গিয়েছিল তারিকের মাথায়। —নিজস্ব চিত্র।

তারিকের অস্ত্রোপচার করেন বিনোদ সিঙ্ঘানিয়া। এ দিন তিনি জানান, রড বিঁধে থাকায় অস্ত্রোপচারের আগে সিটি স্ক্যান করা যায়নি। কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালানো হচ্ছিল। তত ক্ষণে মাথার ভিতরে ১০ মিলিলিটার রক্তক্ষরণ হয়ে গিয়েছে। ওই নিউরো-সার্জেনের কথায়, ‘‘৪০ বছরের অভিজ্ঞতায় এমন রোগী কখনও দেখিনি। রড বার করতে হবে। অথচ পুরো মাথা তো তার জন্য কেটে ফেলতে পারি না।’’

আরও পড়ুন
‘আমি তোর জীবন থেকে চলে গেলাম’, ফেসবুকে লিখে আত্মঘাতী কিশোর

আড়াই ঘণ্টা ধরে অন্য চিকিৎসকদের সাহায্য নিয়ে মাথার ভিতর থেকে সন্তর্পণে বার করে আনা হয় সেই রড। রড বার করতেই প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। অস্ত্রোপচারের পর পরই সিটি স্ক্যান করা হয়। তারিককে ভেন্টিলেশনেও রাখা হয়। সংক্রমণের আশঙ্কাও ছিল। সে সব কাটিয়ে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠেন তারিক।

এ দিন তারিককে বাড়ি নিয়ে যেতে এসেছিলেন তাঁর কাকার ছেলে আজিজুল হক। তিনি জানালেন, দুর্ঘটনার মাস দুয়েক আগে পর্যন্ত তারিক একটি সংস্থায় মার্কেটিং-এর কাজ করতেন। তার পর কাজটি ছেড়ে দেন। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে ছোট। হাসপাতালের কাছে তাঁরা কৃতজ্ঞ। ১২ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হলেও এখনও পর্যন্ত তিন লক্ষ টাকার মতো যোগাড় করতে পেরেছেন। বিলের অনেকটাই ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Apollo Hospital Operation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE