আদ্রিক দাস
প্রিন্স বখতিয়ার শাহ রোডের একটি সেন্টারে স্পিচ থেরাপি করার সময়ে আড়াই বছরের শিশু আদ্রিক দাসের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল সেখানকার স্পেশ্যাল এডুকেটর চৈতালি মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার দু’সপ্তাহ পরেও ভয় কাটেনি একরত্তি শিশুটির। তার পরিচিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে যে রুটিনমাফিক ছবি তোলার প্রয়োজন রয়েছে পুলিশের, তা-ও এখনও করা সম্ভব হয়নি। আদ্রিকের মা কথাকলি মালাকার জানিয়েছেন, ছেলে স্বাভাবিক ছন্দে না ফিরলে সেই ছবি তোলা যাবে না।
আদ্রিকের পরিবার জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে বাইরের লোকজন বা চশমা পরা কাউকে দেখলেও ভয় পাচ্ছিল সে। সেই পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হলেও আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি শিশুটির। এই পরিস্থিতিতে সোমবার তার এমআরআই করা হয়েছে বলে জানান কথাকলি। কয়েক দিন আগে আদ্রিকের এমআরআই করাতে গিয়ে সমস্যা হয়েছিল। এ দিন সে যখন ঘুমিয়েছিল, তখন তার এমআরআই করা হয় বলে জানিয়েছেন মা। কাল, বুধবার আদ্রিককে মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, কথা বলতে না পারায় আদ্রিককে প্রিন্স বখতিয়ার শাহ রোডের ওই সেন্টারে নিয়ে গিয়েছিলেন শকুন্তলা পার্কের বাসিন্দা-দম্পতি অভীক দাস এবং কথাকলি। সেখানেই গত ১৪ মে তার উপরে অত্যাচার করেন সেন্টারের স্পেশ্যাল এডুকেটর চৈতালি— এই মর্মে চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ করেছিলেন ওই দম্পতি। অভিযোগের ভিত্তিতে সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চৈতালিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি এখন জামিনে আছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন বলে জানিয়েছেন আদ্রিকের পরিবারের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা হাইকোর্টে যেতে পারি।’’
পুলিশের কাছে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। সেই ফুটেজে থাকা ছবিটি আদ্রিকেরই কি না, তা মিলিয়ে দেখতে পুলিশ তার একটি ছবি তুলবে। যা মিলিয়ে দেখা হবে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। ছেলে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে, এমন নিশ্চয়তা চিকিৎসকের কাছ থেকে না পাওয়া পর্যন্ত ওই ছবি তোলার ব্যাপারে আপত্তির কথা জানিয়েছেন কথাকলি। তাঁর কথায়, ‘‘চিকিৎসক যতক্ষণ না বলছেন ও পুরো সুস্থ, তত ক্ষণ কিছু করা যাবে না।’’
মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, শিশুটির ভয় কাটানোর জন্য অত্যন্ত ধৈর্য ধরে কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর মতে, একটা সমস্যা রয়েছে শিশুটির। সে তার মনের চাহিদা অনুযায়ী কথা বলতে পারছিল না। তারই মধ্যে তাকে মারধর করা হয়েছে। এই ভয় কাটতে সময় লাগবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy