Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: কথা-ছবিতে নেতাজি জীবনী

এ দিকে, আজ়াদ হিন্দ ফৌজের ৭৫ বছর পূর্তি মনে রেখে অন্য রকম অভিযানে পা বাড়িয়েছেন অভিযাত্রী অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়। ১৯৪৩ সালের জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরের পেডং-এ ‘দিল্লি চলো’ ডাক দিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। জাপানের সহায়তা, প্রবাসী ভারতীয়দের সমর্থনে ভর করে জাপানের হাতে বন্দি ভারতীয়দের নিয়ে তৈরি এই সেনা ডিসেম্বরে রেঙ্গুন পৌঁছে যায়।

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

এক দশকও হয়নি, সুগত বসু লিখেছেন তাঁর দুর্লভ তথ্যসমৃদ্ধ নেতাজি-জীবনী হিজ় ম্যাজেস্টিজ় অপোনেন্ট। এর আগে আমরা হিউ টয় বা লিয়োনার্ড গর্ডনের কাছেও আইএনএ-র ইতিহাস বা নেতাজির জীবনী পেয়েছি, কিন্তু সে সবের নানা অপ্রাপ্তি পূর্ণ করে দিয়েছেন সুগত বসু। তেমনই আর একটি অভাব এ বার পূর্ণ করলেন নেতাজি-গবেষক তথা নেতাজি রিসার্চ বুরোর চেয়ারপার্সন ৮৮ বছরের কৃষ্ণা বসু। ডিভিডি-তে ছোটবেলা থেকে শুরু করে সুভাষচন্দ্রের সমগ্র জীবনকথা সাবলীল ভঙ্গিতে, সরল ইংরেজিতে বলেছেন তিনি, সঙ্গে দেখানো হয়েছে দুষ্প্রাপ্য বহু ছবি (সঙ্গে তারই একটি, ১৯৪৩-এর নভেম্বরে টোকিয়োয় নেতাজি)। কলকাতা থেকে মহানিষ্ক্রমণ, সাবমেরিনে ইউরোপ থেকে এশিয়া যাত্রা, পূর্ব এশিয়ায় আজ়াদ হিন্দ সরকারের রাষ্ট্রপ্রধান তথা আজ়াদ হিন্দ ফৌজের অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কর্মকাণ্ড, লালকেল্লায় আইএনএ-র বিচার ও দেশ জুড়ে তার প্রতিক্রিয়া— সামরিক পরাজয় থেকে রাজনৈতিক জয় ছিনিয়ে নেওয়ার কাহিনি। ২১ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয় নেতাজি ভবনে ভাবনা রেকর্ডস অ্যান্ড ক্যাসেটস আয়োজিত অনুষ্ঠানে মার্কিন ইতিহাসবিদ লিয়োনার্ড গর্ডন, জাপানের কনসাল জেনারেল মাসায়ুকি তাগা, কৃষ্ণা বসু, সুগত বসু প্রমুখের উপস্থিতিতে ‘দ্য লাইফ অব নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস’ ডিভিডি-টির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। অন্য দিকে, ২৩ জানুয়ারি বেলা দেড়টায় শরৎ বসু ভবনে নেতাজি ইনস্টিটিউট ফর এশিয়ান স্টাডিজ়ের উদ্যোগে পালিত হবে নেতাজির জন্মজয়ন্তী। স্মারক বক্তৃতা দেবেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, সভাপতি সুগত বসু।

এ দিকে, আজ়াদ হিন্দ ফৌজের ৭৫ বছর পূর্তি মনে রেখে অন্য রকম অভিযানে পা বাড়িয়েছেন অভিযাত্রী অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়। ১৯৪৩ সালের জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরের পেডং-এ ‘দিল্লি চলো’ ডাক দিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। জাপানের সহায়তা, প্রবাসী ভারতীয়দের সমর্থনে ভর করে জাপানের হাতে বন্দি ভারতীয়দের নিয়ে তৈরি এই সেনা ডিসেম্বরে রেঙ্গুন পৌঁছে যায়। তবে ইম্ফল অবরোধ করেও শেষে পিছু হটতে হয় তাদের। সেই স্মরণীয় অভিযানের স্মৃতি খুঁজতেই নামছেন অনিন্দ্য। নেতাজির পথে, সিঙ্গাপুর থেকে মণিপুর। ২৩ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরের সেই পেডং থেকেই শুরু হবে তাঁর যাত্রা। কখনও ট্রেনে, কখনও গাড়িতে, কখনও সাইকেলে, কখনও স্রেফ হেঁটে মণিপুরের ইম্ফল পর্যন্ত পৌঁছতে চান তিনি। ‘‘এ আমার তীর্থযাত্রা’’, বললেন অনিন্দ্য।

দিলীপকুমার স্মরণ

‘‘গঙ্গার এ-হেন শোভা আমরা আর কোথাও দেখিনি, যেমন দেখলাম হরিদ্বারে... ফিরে ফিরে এ পুণ্যতীর্থে আসি গঙ্গায় অবগাহন স্নান ক’রে স্নিগ্ধ হ’তে, পবিত্র হ’তে।... বার বার এখানে এসে সাধনায় ডুবতে ইচ্ছা হয়— এখানকার নিঃসঙ্গ গাঙ্গ পরিবেশে দিনের পর দিন কাটাতে ভালো লাগে।’’ বয়ে চলা জীবনের স্মৃতি সৌন্দর্য ছেয়ে আছে যেন দিলীপকুমার রায়ের ‘হরিদ্বার’ গদ্যলেখটিতে (মাসিক বসুমতী, চৈত্র ১৩৬১)। ২২ জানুয়ারি তাঁর ১২২তম জন্মদিনে রচনাটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করছে সূত্রধর। এ দিকে দিলীপকুমারেরই প্রতিষ্ঠিত সুর কাব্য ট্রাস্টের উদ্যোগে আইসিসিআর-এ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দুবাই থেকে গাইতে আসছেন নিশীতা চার্লস, গাইবেন শৌনক চট্টোপাধ্যায়ও। আবৃত্তিতে শাশ্বতী সরকার। দিলীপকুমার রায় বক্তৃতা দেবেন বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাক-কথনে শুভাপ্রসন্ন।

সত্যজিতের আঁকা

শান্তিনিকেতনে নন্দলাল বসুর ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও সত্যজিৎ বরাবর বলেছেন ‘‘আই নেভার বিকেম আ পেন্টার।’’ ছবি আঁকাটা ছিল তাঁর কাছে নিত্য ‘অভ্যাস’, ফিল্ম বানানোর পাশাপাশি, বিশেষত ‘সন্দেশ’-এর সম্পাদক হিসেবে নিজের ও অন্যের গল্পের ইলাস্ট্রেশন করতে গিয়ে। বলেছেন, এ ব্যাপারে তাঁর আদর্শ পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর, যিনি নিজেও ছিলেন ‘সেল্ফ-টট’ ছবি-আঁকিয়ে। সত্যজিতের কথাগুলি যেন ফের প্রাসঙ্গিক করে তুলল স্টারমার্ক-এর ক্যালেন্ডারটি: ‘লিটারারি ক্যারেক্টার্স অব সত্যজিৎ রায়’। সত্যজিৎ রায় সোসাইটির সৌজন্যে, বারোটি মাসের প্রতি পাতায় হাজির সত্যজিতের চরিত্রগুলি, তাঁরই হাতের আঁকায়... ফেলুদা, শঙ্কু, তারিণীখুড়ো (সঙ্গের ছবিতে), ফটিকচাঁদ, জাগলার হারুণ, বঙ্কুবাবু, বাতিকবাবু, বারীন ভৌমিক, সদানন্দ, অসমঞ্জবাবুর কুকুর, ম্যাজিশিয়ান ত্রিপুরাচরণ মল্লিক, পটলবাবু, প্রোফেসর হিজিবিজ্‌বিজ্‌ প্রমুখ। নতুন বছরের ক্যালেন্ডারটি পাওয়া যাবে স্টারমার্ক-এ। ডিজ়াইনার: পিনাকী দে। কিউরেটর: সন্দীপ রায়।

সংখ্যালঘু মেয়েরা

সংখ্যালঘু সমাজের সামগ্রিক পিছিয়ে পড়া নিয়ে কিছু আলোচনা হলেও এই গোষ্ঠীর মেয়েদের পরিস্থিতি নিয়ে চর্চা নেহাতই কম। লেখাপড়া, চাকরি, অর্থকরী কাজের প্রশিক্ষণ— সর্বত্র সংখ্যালঘু মেয়েরা কম সুযোগ পান। অথচ সামান্য সুযোগ পেলেই তাঁরাও যে পাল্লা দিয়ে এগোতে পারেন, তেমন উদাহরণের আমরা খোঁজ রাখি না। আজ়াদ ফাউন্ডেশন এবং প্রতিবেশীকে চিনুন-এর যৌথ উদ্যোগে, ২৭ জানুয়ারি বেলা তিনটেয় ‘জন-পরিসরে সংখ্যালঘু মেয়েরা’ বিষয়ে একটি কথোপকথনের আয়োজন করা হয়েছে। সংখ্যালঘু মেয়েদের ঘরের বাইরের জীবন এবং পেশাদারি কাজে যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁদের মুখ থেকেই শোনা যাবে ৯০ ডি সি দে রোড, ট্যাংরা, কলকাতা-১৫ ঠিকানায় এই সভায়।

গল্পে গানে

‘‘এই অল্প কয়টি বছরের ভিতরে আপনি যা দেখাইলেন, আমাদের সারাটা জীবনের সাধনায়ও ঠিক তেমনটি হইল না।’’ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে তাঁর নাট্যসৃষ্টি নিয়ে বলেছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ। দ্বিজেন্দ্রলালের সেই নাট্যাদি কতটাই বা প্রাসঙ্গিক আজ, কিংবা রবীন্দ্রনাথের নাটকের স্বকীয়তা নিয়ে যা বলে গিয়েছেন শিশির ভাদুড়ি তা নিয়েই বা কতটুকু মাথা ঘামাই আমরা? ফলে সে কাল আর এ কালের সেতুবন্ধ নিয়ে সংলাপ তর্ক চলতেই থাকে। এ সমস্ত জড়িয়েই স্মরণীয় নাট্যাংশ ও সঙ্গীতের অভিনব মঞ্চ-কোলাজ: ‘গল্পে-গানে সেকালে-একালে’ (সার্ভমার্ক-এর উদ্যোগ)। গানে ও-বাংলার অদিতি মহসিন। নাট্যমুহূর্ত রচনায় দেবশঙ্কর হালদার ও সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়। ২৬ জানুয়ারি সন্ধে ৬টায় অ্যাকাডেমিতে। রঙ্গপট নাট্যগোষ্ঠীর ১৫ বছর পূর্তি-উৎসবের প্রথম দিনে। দু’দিন ব্যাপী এ-উৎসবে মোহিত চট্টোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা দেবেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। আর আছে রঙ্গপট-এর নাটক।

শেষের সে দিন

অন্য ঘর থেকে ভেসে আসছে রামমোহন রায়ের লেখা গান, মনে কর যেন শেষের সেদিন..। ‘চারুলতা’ ছবিতে অমল তখন বৌঠানকে বলেছিল, ‘‘আমাদের দেশের এক জন এত বড় লোককে বিদেশে গিয়ে কেন মরতে হল বলো তো?’’ ইংল্যান্ডে জীবনের শেষ সপ্তাহগুলো রামমোহনের কী ভাবে কেটেছিল, বেশ কিছু দিন ধরে সেই অনুসন্ধানে রত ছিলেন অনিরুদ্ধ সান্যাল। তৈরি করেছেন তথ্যচিত্র, ‘‘আ ব্রিস্টল পিলগ্রিমেজ: ইন সার্চ অব রাজা রামমোহন রায়।’’ ছবিটি ২৪ জানুয়ারি দেখানো হবে ব্রাহ্ম সম্মিলনী সমাজের মাঘোৎসবে, ভবানীপুরে সমাজমন্দিরে। এ বছর শিবনাথ শাস্ত্রীর প্রয়াণ শতবর্ষ। ২২ তারিখ তাঁর স্মৃতিচারণ করবেন রীতা ভিমানি। কামিনী রায়ের পিতা চণ্ডীচরণ সেনের স্মৃতিচারণে থাকছেন শিখা রায়। অন্য দিকে বাবা হরানন্দ ও কন্যা হেমলতাকে লেখা একগুচ্ছ পত্র নিয়ে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের গ্রন্থাগারে ‘শিবনাথের পত্র’ শীর্ষক এক প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে, চলবে ২৮ পর্যন্ত। প্রদর্শিত হবে শিবনাথের ডায়েরি ও সম্পাদিত পত্র-পত্রিকার নমুনাও। গত কাল প্রদর্শনী উদ্বোধনের দিন ছিল আলোচনা: ‘শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক শিবনাথ’।

গয়নাবড়ি

‘আহারের এত বাহার, এ কেবল বাংলাদেশেই সম্ভব!’ সংলাপটি উৎপল দত্তের, সত্যজিৎ রায়ের ‘আগন্তুক’ ছবিতে। উপলক্ষ গয়নাবড়ি। এক সময় তমলুক মহকুমার গ্রামের মেয়েদের করা গয়নাবড়ি দেখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলাভবনে ছবি তুলে সাজিয়ে রাখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নন্দলাল বসু গ্রামের মেয়েদের এই গুণের পসরা সারা বাংলায় মেলে ধরতে চেয়েছিলেন। তমলুকের কলাগেছিয়া, ময়না, লক্ষ্যা, খেজুরি প্রভৃতি গ্রাম থেকে গয়নাবড়ি দেশ বিদেশে প্রশংসা পেয়েছে। গ্রামীণ শিল্পের এই ঐতিহ্যকেই তুলে ধরতে চায় ‘চালচিত্র অ্যাকাডেমি’। ২৭ জানুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে অবধি কে-১ পঞ্চসায়র-এ তাদের এক কর্মশালায় থাকবেন তমলুকের দুই গয়নাবড়ি বিশেষজ্ঞ নিলীনা ঘোষ ও সুচেতা মণ্ডল।

চিত্র প্রদর্শনী

শিল্পদর্শনের নিরিখে তাঁর যোগ সোমনাথ হোর, জয়নুল আবেদিন, চিত্তপ্রসাদ ভট্টাচার্যের সঙ্গে। আঙ্গিকে তিনি পশ্চিমের অনুকরণ করেননি, কিন্তু ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলিয়েছিলেন আধুনিকতাকে। সাদা-কালোয় আঁকা দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের ছবির অ্যালবাম ‘ব্যালাড অব দ্য টিলার’ চাষির জীবনের অন্তরঙ্গ ছবি। সুকান্ত ভট্টাচার্যের বই ‘মিঠেকড়া’র প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ তাঁরই করা, এঁকেছেন আরও বহু বইয়ের প্রচ্ছদ। সুকান্তকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র পরিচালনা করেন, ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’, ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’-সহ বেশ কয়েকটি ছবির শিল্প-নির্দেশনাও। বাঘ ও অজন্তার গুহাচিত্র কপি করেছেন, লিখেছেন তার বৃত্তান্ত। গত ডিসেম্বরে তাঁর জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে। এ বার গোর্কি সদনে তাঁর আঁকা ছবির প্রদর্শনী বেলেঘাটার অগ্রবাণী-সহ বেশ ক’টি সংগঠনের উদ্যোগে। ২৩ জানুয়ারি সন্ধে ৬টায় উদ্বোধন করবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, চলবে ২৫ পর্যন্ত (৪-৭টা)।

শোকোচ্ছ্বাস

মহারানি ভিক্টোরিয়ার নাতি পঞ্চম জর্জ প্রয়াত হন ১৯৩৬ সালের ২০ জানুয়ারি। বিশ শতকের সাড়ে তিন দশক কেটে যাওয়ার পরেও, বঙ্গভঙ্গ থেকে স্বদেশি হয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্তপ্ত দিনেও যে সম্রাটের মৃত্যুতে বাঙালির চোখে যথেষ্ট জল আসত, তার একটা কাগুজে প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন প্রবীণ সংগ্রাহক পরিমল রায়। ১১২ আপার চিৎপুর রোডে অবস্থিত বঙ্গীয় নাট্য পরিষদের সভ্যরা ২৮ জানুয়ারি ১৯৩৬-এ যে ‘শোকোচ্ছ্বাস গীতি’ ছাপিয়েছিলেন, তার লেখক পরিষদেরই সভাপতি কিরণচন্দ্র দত্ত, সুর দেন ভবানীশঙ্কর রায়। শুরুটা এই রকম: ‘‘কি শুনি, কি শুনি, আজি কাঁপে হৃদি থর থর/ শেষ শয্যাশায়ী কে গো তুমি হে নরেন্দ্রবর!’’ আর শেষে? অবশ্যই ‘‘ঢালি শ্রদ্ধা নিরন্তর’’।

চিন্তার দুর্দশা

প্রতি বছরের মতো এ বছরও প্রণবেশ সেন স্মারক সমিতি তাঁর নামাঙ্কিত স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছে। ২১ জানুয়ারি রোটারি সদনে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় অষ্টাদশ স্মারক বক্তৃতা দেবেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। বিষয় ‘চিন্তার দুর্দশা’। ওই দিনই প্রকাশিত হবে দীপেশ চক্রবর্তী প্রদত্ত সপ্তদশ বক্তৃতা, ‘উন্নয়ন ও আধুনিকতা : বর্তমান-সর্বস্ব এই সময়’। প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ।

স্বপ্নের মতো

শনিবার বেলা এগারোটা। ব্রিগেডে মিটিং হবে। মেট্রোয় বেজায় ভিড়। এরই মধ্যে একটি আসনে বসা এক যাত্রীর কানে এল: ‘আমার তো একদম স্বপ্নের মতো মনে হল!’ অবাক চোখে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলেন তিনি— পাশেই বসে আছে মেয়েটি, বছর ত্রিশ হবে, কানে মোবাইল ফোন, চোখেমুখে স্বপ্নের আভাস, কণ্ঠস্বরেও। ট্রেন এগোয়, ভিড় বাড়ে। সারির পিছনে সারি জমাট বাঁধে, সামনের সারি ঝুঁকে পড়ে বসে-থাকা যাত্রীদের মাথার উপরে, ঝুঁকে পড়ে পিঠের ব্যাগ, হাতে জড়ো করা সোয়েটার, জ্যাকেট। বসে-থাকা পিঠগুলো ক্রমশ বেঁকে যায়, মাথাগুলো ক্রমশ নত, আরও নত হয়। পাল্লা দিয়ে বাড়ে কথার ডেসিবেল, তার ঝাঁজও। আর, সেই মেয়েটি মোবাইলের কানে কানে তার কথা বলে চলে, শুনে চলে ও পারের কথাও। স্বপ্নের কথাই হবে নিশ্চয়ই।

নাগরিক

একশোটা উত্তর মুখস্থ করতেই হবে সঞ্চিতাকে। মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার ইন্টারভিউতে ওগুলো থেকেই প্রশ্ন করবে যে! পার্থ-সঞ্চিতার ‘অভিবাসী’ থেকে ‘নাগরিক’ হয়ে ওঠার যাত্রায় অচানক ঢুকে পড়ে দেশের হাওয়া, মুকুল নামের এক বাংলাদেশি ব্লগার। প্রাণ হাতে করে সে ঢুকেছে আমেরিকায়, শরণ-অর্থী। মুকুলের অস্পষ্ট অতীত, বিপন্ন বর্তমান সঞ্চিতাকে দাঁড় করায় আয়নার সামনে, যেখানে নিজের শেকড় অবধি দৃশ্যমান। সাহিত্যে ‘ডায়াস্পোরা’ বহুচর্চিত, কিন্তু ‘নাগরিক’-এর মতো নাটকে তাকে মঞ্চে চেনানোর জন্য বাঙালি গর্ব করতে পারে সুদীপ্ত ভৌমিককে নিয়ে। খড়্গপুরের ছেলে গত তিন দশক ধরে আমেরিকায় ঠাঁইনাড়া, নিউ জার্সির নাট্যদল ‘এথনোমিডিয়া সেন্টার ফর থিয়েটার আর্টস’-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আইআইটিতে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি টেক, এম টেক, পিএইচ ডি’র ফাঁক ভরিয়েছিল নাটক; বাদল সরকার থেকে শুরু করে ‘পঞ্চমবেদ চর্যাশ্রম’-এ পেয়েছেন শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, শাঁওলী মিত্র, মোহিত চট্টোপাধ্যায়কে। নাটক লেখা শুরু অশোক মুখোপাধ্যায়ের প্রেরণায়, এ যাবৎ লেখা নাটকের সংখ্যা ত্রিশেরও বেশি, প্রকাশিত কয়েকটি বইও। আমেরিকার ‘ড্রামাটিস্টস গিল্ড’-এর সদস্য সুদীপ্তের নাটক মঞ্চে করেছে থিয়েটার ওয়ার্কশপ, লোককৃষ্টি, বালুরঘাটের ‘সমমন’ বা কলকাতার ‘নোটো’; ওঁর নাটক হয়েছে তামিল, হিন্দি, মরাঠি, ইংরেজিতেও। কার্টুন আঁকেন, করেন পডকাস্টিংও, মহাভারত-আশ্রয়ী ওঁর ‘দ্য স্টোরিজ় অব মহাভারত’ আইটিউন্‌স-চার্টেও হিট! প্রতি বছর শীতে কলকাতায় আসেন, এ বার ‘নাগরিক’ নিয়ে ভাবিয়ে গেলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE