Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: প্রতিবাদেও ছিলেন নিঃসঙ্গ

অমৃতসর গণহত্যার খবর কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাইরের দুনিয়ায় প্রচারিত হয়নি সামরিক শাসনের বজ্র আঁটুনিতে। তবে পঞ্জাবে নানা নৃশংসতার খবর মে মাসের গোড়াতেই দীনবন্ধু এন্ডরুজ়ের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথের কাছে পৌঁছয়।

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

একশো বছর আগের এক ‘বৈশাখী’। পঞ্জাবে নতুন বছরের প্রথম দিন। রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল অমৃতসরেও সাধারণ মানুষ শামিল হতে চেয়েছিলেন বৈশাখীর আনন্দে। ১৩ এপ্রিল ১৯১৯— জালিয়ানওয়ালা বাগে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার মানুষের উপর হঠাৎই ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। নেতৃত্বে রেজিনাল্ড ডায়ার, পরে যাঁকে ‘বুচার অব অমৃতসর’ আখ্যা দেওয়া হয়। অমৃতসর গণহত্যার খবর কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাইরের দুনিয়ায় প্রচারিত হয়নি সামরিক শাসনের বজ্র আঁটুনিতে। তবে পঞ্জাবে নানা নৃশংসতার খবর মে মাসের গোড়াতেই দীনবন্ধু এন্ডরুজ়ের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথের কাছে পৌঁছয়। মে’র শেষে কবি এন্ডরুজ়কে পাঠালেন গাঁধীর কাছে— পঞ্জাবে যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে। গাঁধী রাজি হলেন না, ‘‘আই ডু নট ওয়ান্ট টু এমব্যারাস দ্য গভর্নমেন্ট নাউ।’’ কবি নিজেই গেলেন চিত্তরঞ্জন দাশের কাছে, প্রতিবাদ সভার কথা বলতে। সেখানেও আগ্রহের অভাব। কবি ঠিক করলেন, ‘‘আমার নিজের কথা নিজের মতো করে বলাই ভালো।’’ ৩১ মে বড়লাট চেমসফোর্ডকে লিখলেন সেই চিঠি— ফিরিয়ে দিলেন নাইটহুড। গাঁধী পরে পঞ্জাব গেলেন, তাঁর রাজনীতির মোড় ঘুরে গেল। বদলাল মতিলাল-জওহরলালের মতও। কিন্তু রাজনীতিকদের নীরবতার মধ্যে কবির একক প্রতিবাদ জেগে রইল দ্বীপের মতো। জালিয়ানওয়ালা বাগের ঘটনার শতবর্ষ উপলক্ষে কলকাতা অবশ্য নীরব নেই। ভবানীপুর বৈকালী অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করেছে একটি আলেখ্য, যেন বাগানটিই আগাগোড়া নিজের কথা বলছে, তাই নাম ‘একটি বাগানের কথা’। ইংরেজি ও বাংলায় ভাষ্য, গান (পঞ্জাবি ভজন ও বৈশাখীর গান ছাড়া নজরুল, অতুলপ্রসাদ ও অবশ্যই রবীন্দ্রগান), সঙ্গে সে সময়ের কিছু ছবি। বলা হবে রবীন্দ্রনাথের নাইটহুড ত্যাগের কাহিনি। পরিকল্পনা ও পরিচালনায় প্রমিতা মল্লিক। প্রমিতা বাংলায় ভাষ্যপাঠ করবেন, ইংরেজিতে মনোজিৎ দাসগুপ্ত। গানে প্রমিতার ছাত্রছাত্রীরা। ১২ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় আইসিসিআরে। অন্য দিকে, ১৩ এপ্রিল যাদবপুরে ড. ত্রিগুণা সেন প্রেক্ষাগৃহে সন্ধে সাড়ে ৬ টায় ‘উজান’ নিবেদন করছে ‘জালিয়ানওয়ালাবাগ: শতবর্ষে সেলাম’। গানে, গল্পে, কবিতায়, অভিনয়ে ফিরে দেখা সেই সংগঠিত নৃশংসতা ও গণবিক্ষোভের স্ফুরণকে। সঙ্গে উপরে লিফলেট আকারে মুদ্রিত রবীন্দ্রনাথের চিঠি, নীচে নাইটহুডের অভিজ্ঞানপত্র (অভীককুমার দে’র সৌজন্যে)।

ওই সিন্ধুর টিপ

ইংরেজি, সিংহলি মিলিয়ে অন্তত ন’টি উপন্যাসের স্রষ্টা, বার তিনেক শ্রীলঙ্কার সেরা ইংরেজি উপন্যাস রচয়িতার সম্মান পেয়েছেন। ২০১৩-য় পেয়েছেন সার্ক সাহিত্য পুরস্কার। সাহিত্যকে কপিরাইটের খাঁচায় আটকে রাখার ঘোর বিরোধী, কোনও রকম সেন্সরশিপও না-পসন্দ দয়া দিশানায়েকের (জন্ম ১৯৪৭)। শ্রীলঙ্কার এই বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক, কবি ও ব্লগার সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আমন্ত্রণে। ‘জলঘড়ি’ পত্রিকা তাদের মানিকতলার দফতরে এক শনিবারের সাপ্তাহিক আসরে সংবর্ধনা জানাল তাঁকে। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন উপাচার্য প্রদীপনারায়ণ ঘোষ, সাধন চট্টোপাধ্যায়, সুমিতা চক্রবর্তী প্রমুখ। দিশানায়েকে জানলেন বাংলা সাহিত্যের কথা, দিলেন তাঁদের সাহিত্যের পরিচয়। বর্ষীয়ানদের উদ্যোগে প্রকাশিত ‘জলঘড়ি’ ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে তার ক্রোড়পত্রগুলির বিশিষ্টতায় (সাম্প্রতিক সংখ্যার প্রসঙ্গ: মহাভারত)। প্রতিবেশী দেশের অতিথি সাহিত্যিককে সম্মান জানিয়ে তারা কলকাতার এক জরুরি সাংস্কৃতিক কৃত্য পালন করল।

দুই কবি

১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে কৃশকায় দেবী গ্রন্থে আত্মপ্রকাশ কবি পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলালের। তার পর এক দশক জুড়ে বইটির খোঁজ পড়েছে বার বার। ১৯৮৩-তে রাত্রি চতুর্দশী এবং ১৯৮৪ সালে টেবিল, দূরের সন্ধ্যা নামের দু’টি এক ফর্মার কবিতাপুস্তিকা। সাকুল্যে এই তিনটিই ছিল পাঠকের সম্বল। তার পর দীর্ঘ ছেদ। ষোলো বছর পর পাঠকের সঙ্গে, ব্যক্তিগত। আবার বারো বছর পর বর্ণজীবের সনেট এবং তার দু’বছর পর শাদা পাথরের গোলাপগুচ্ছ। বলা যায়— এই তাঁর রক্তমেঘরং কবিতাযাপনলিপি। আদম পত্রিকা সারা জীবনের কবিতাযাপনের জন্যে পার্থপ্রতিমকে ‘আদম সম্মাননা’ দেওয়ার ঘোষণা করে। অসুস্থ, তাই যেতে পারেননি অনুষ্ঠানে। অথচ কবির হাতে সম্মান তুলে দিতে শঙ্খ ঘোষ মঞ্চে উপস্থিত। কী করা যায়? শঙ্খ ঘোষ জানান— তিনিই যাবেন কবির বাড়ি। ৩০ মার্চ ছিল বাংলা কবিতার বিরল একটি দিন। অষ্টাশি বছরের কিংবদন্তি কবি সত্তর বছর বয়স্ক অসুস্থ কবির বাড়িতে গিয়ে সম্মান তুলে দেন। অনুষ্ঠানটি ছিল একান্ত ঘরোয়া।

বর্ষবরণ

ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের পরিমণ্ডলে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের উদ্যোগে বর্ষবরণ— পঞ্চম বর্ষের নববর্ষ বই উৎসব। গোলদিঘিতে। উদ্‌যাপিত হবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মজয়ন্তী, মহাত্মা গাঁধীর সার্ধশত জন্মজয়ন্তী এবং সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকী। ছবিতে লেখায় বিধৃত হবে তাঁদের জীবন ও কর্ম। ১৩ এপ্রিল বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। থাকবেন প্রবীণ-নবীন কবি-সাহিত্যিক ও অন্যান্য গুণিজন। ঢাক ও ঢোল বাদ্যি, উলু ও শঙ্খধ্বনি, প্রদীপ প্রজ্বলন ও নানান মাঙ্গলিক রীতির মধ্যে দিয়ে উদ্বোধন হবে বই উৎসব। থাকছে বিভিন্ন প্রকাশনার স্টলে আকর্ষক ছাড়ে বই। সন্ধেয় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসব চলবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত (২-৯টা)।

প্রাসঙ্গিক

যোগেন মাস্টারের মতো শিক্ষক হয়তো এ কালে আর নেই। পাওয়া যাবে না পরিত্যক্ত ‘পাঁচীর মা-র ভিটে’— যেখান থেকে ভূতুড়ে আলো দেখা যেত বৃষ্টি-ভরা সন্ধ্যায়। তবু এই উষ্ণমণ্ডলীয় দেশের বনবাদাড়, ঝোপজঙ্গলের রকমারি গাছপালা, পোকামাকড়ের নিজস্ব বেঁচে থাকার লড়াইকে ধৈর্য, অধ্যবসায় আর নিষ্ঠা নিয়ে অনুসন্ধানে গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যের (১/৮/১৮৯৫-৮/৪/১৯৮১) মতো গবেষক কোথায়? তবে পরিবেশবিদদের মতে, আধুনিক ডিজিটাল যুগেও প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। বিশেষ করে দূষণ থেকে রেহাই পেতে জীববৈচিত্র, বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোল ইত্যাদি বিষয়ে গোপালচন্দ্রের গবেষণার প্রাসঙ্গিকতা, অনেকের মতে, এ কালে বরং আরও বেড়েছে। তাঁর ৩৯তম প্রয়াণ দিবস স্মরণে আজ ৮ এপ্রিল বিকেল ৫টায় বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদে গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য বিজ্ঞান প্রসার সমিতি আয়োজিত স্মারক বক্তৃতায় ‘আন্টার্কটিকা’ বিষয়ে বলবেন অর্পিতা চক্রবর্তী।

মঙ্গল শোভাযাত্রা

হাজার বছরের পুরনো বৌদ্ধ গান ও দোঁহা— এক দিন তার পথেই বাংলা ভাষার যাত্রা শুরু। পায়ে পায়ে কত শতাব্দী পার করে আজ সে ভাষা কোটি কোটি মানুষের মনের আরাম, প্রাণের প্রকাশ। শুধু বাংলা ভাষা নয়, বাংলার সংস্কৃতিও বহুরূপতার দ্যোতক। মঙ্গল শোভাযাত্রা কলকাতা এই উত্তরাধিকারকে বহন করতে উদ্যোগী। বাংলার লৌকিক সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গকে সঙ্গী করে তার সাংস্কৃতিক পরিক্রমা। পয়লা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে এই ঐতিহ্যের বর্ণময় উপস্থাপনা। ঝুমুরের ছন্দে, ভাটিয়ালির সুরে, ঢাকের বাদ্যিতে মুখর এ শোভাযাত্রা বাংলার ও বাঙালি জীবনের এক নতুন পথের দিশা, সম্প্রীতি-চেতনার বহিঃপ্রকাশ। ১৫ এপ্রিল বাংলা বছর শুরুর দিন যাদবপুর সুকান্ত সেতু থেকে ঢাকুরিয়ার পথে আয়োজিত এই শোভাযাত্রার সূচনা সকাল ৮ টায়।

মেক্সিকোর ঐতিহ্য

মেক্সিকোর প্রসঙ্গ উঠলেই মায়া সভ্যতা আর ক্যানবেরা টুপির কথা মনে পড়ে। ২০১৮-র হিসেব অনুযায়ী ইউনেস্কো-র ঐতিহ্য তালিকায় এই মেক্সিকোরই রয়েছে ৩৫টি সম্পদ। সে দেশের এই সব দর্শনীয় স্থান নিয়েই আয়োজিত হয়েছে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে কলকাতার মেক্সিকো দূতাবাসের উদ্যোগে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধনে ছিলেন নন্দিতা পালচৌধুরী, মেক্সিকোর কনসাল সুমিত মজুমদার এবং সংস্কৃতি ও পর্যটন দফতরের পক্ষে সান্তিয়াগো রুয়ে সাঞ্চেজ। বিশ্ব ঐতিহ্যের সঙ্গেই এখানে উঠে এসেছে মেক্সিকোর স্থাপত্য, শিল্পকলা, সঙ্গীত এবং খাদ্যের প্রসঙ্গ। এ সবই ওঁদের সাংস্কৃতিক সম্পদের মধ্যে পড়ে বলে জানালেন আলোকচিত্রী আদালবের্তো রিয়াজ সিজলি। ‘মেক্সিকো ইন দি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ শীর্ষক ৪৪টি ছবির এই প্রদর্শনী চলবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত, ১২-৮টা। সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।

শীতের রোদ্দুর

‘বসন্তের বিকেলে শীতের রোদ্দুর’— প্রদর্শনীর নামকরণেই ধরা দেয় সরকারি আর্ট কলেজে সত্তর দশকের চার সহপাঠীর সৃজন ভাবনা। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে তাঁরা সাম্প্রতিক ভাবনার বিন্যাস ঘটিয়েছেন তাঁদের শিল্প কর্মে। অনুপ রায় ও নির্মলেন্দু মণ্ডল যুক্ত ছিলেন সংবাদপত্রে, স্বপন চট্টোপাধ্যায় সেন্ট্রাল স্কুলের প্রাক্তন শিল্পশিক্ষক, অপর জন মুম্বইতে কর্মজীবন কাটানো মনোজ পাল। নির্মলেন্দু নারী ও প্রকৃতির মেলবন্ধনে নারীর মুখাবয়ব এঁকেছেন অ্যাক্রিলিকে, স্বপন জলরঙে ফুলের নির্যাস ফুটিয়েছেন আর মনোজ ডিজিটাল পেন্টিংয়ে তাঁর ভাবনার ব্যাপ্তি ঘটিয়েছেন। অনুপের সৃষ্টি ইলাস্ট্রেশন ক্যারিকেচার কার্টুনে। আজই শেষ।

ব্যক্তিগত

গত বছরের গোড়ায় চলে গিয়েছিলেন মণীন্দ্র গুপ্ত, শব্দ গেঁথে গেঁথে কবিতায়-কবিতায় যেন তাঁর বাৎসরিক ক্রিয়া সম্পন্ন করলেন দেবারতি মিত্র, এ বছরের গোড়ায়। দেবারতির ব্যক্তিগত বেদনাই বছরভর জন্ম দিয়েছে মণীন্দ্র গুপ্তের প্রতি তাঁর একটি-একটি করে লেখা কবিতার। এ যেমন স্বামীর প্রতি স্ত্রীর, তেমনই এক কবির প্রতি আর-এক কবির তর্পণ। সেই কবিতাবলিই অভিনব সজ্জায় গ্রন্থিত হয়ে দেবভাষা থেকে প্রকাশ পেল। মণীন্দ্র গুপ্তকে উৎসর্গীকৃত এ বইয়ের নাম রেখেছেন দেবারতি: ও-ও-ও-ও। তাঁদের দু’জনার ‘পরস্পরের কাছে পৌঁছবার সেতু ছিল কবিতা...’, লিখেছিলেন দেবারতি একটি গদ্যে, আর এই নতুন পদ্যের বইটিতে লিখলেন ‘‘সেই রূপকথার লেবুগাছটির মতো/ হতে পারত তো এ জীবন।’’

সংস্কৃতি কেন্দ্র

গরমে হাঁসফাঁস, বর্ষায় কাকভেজা, শীতে কাবু বাঙালির কাছে কলকাতা সব সময়ই বসন্তকুঞ্জ, বিশেষত শহরের সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্রগুলি, যেমন আইসিসিআর-এর রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টার। যে জন্যে এই শহরের সুখ্যাতি— বিভিন্ন সংস্কৃতির আদানপ্রদান, তেমন অভিপ্রায়েই জন্ম আইসিসিআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস)-এর। ৯ এপ্রিল ১৯৫০-এ সদ্য স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজ়াদের হাতে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার কাজই তার লক্ষ্য। সত্তরে পা দেবে এ বারে। ৯ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় জন্মদিন পালন বক্তৃতা-নৃত্য-সঙ্গীত-নাটক-তথ্যচিত্রের সমাহারে।

পঞ্চাশ পেরিয়ে

নায়ক বা কুশীলবের মহিমা উদ্ভাসিত করতে বাংলার লোকসংস্কৃতিতে ভাঁড় বা বিদূষকদের বিশিষ্ট ভূমিকা। অথচ এই মানুষগুলিই সমাজে প্রান্তিক। ১৯৬৮ সালে রচিত নভেন্দু সেনের নাটক ‘নয়ন কবিরের পালা’ জুড়ে এঁদের বড় হয়ে ওঠার প্রাণান্ত প্রয়াস লক্ষ করা যায়। কল্পনা, কথা, অভিনয় দক্ষতা সবই উজাড় করে তাঁরা একটা নাট্যাংশ খাড়া করবার চেষ্টা করেন কল্পিত দর্শকদের উদ্দেশে। ১৯৬৯ সালে ‘নক্ষত্র’-এর প্রযোজনায় শ্যামল ঘোষের নির্দেশনায় নাটকটি আলোড়ন তোলে। পঞ্চাশ বছর পর তারই পুনর্নির্মাণ করেছে ‘কথাকৃতি’ নাট্যগোষ্ঠী। সঞ্জীব রায়ের নির্দেশনায় ১৪ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় গিরিশ মঞ্চে।

প্রশ্নের মুখে

ঐতিহাসিক প্রত্নবস্তুও মানুষের মতো উদ্বাস্তু হয়ে যায়, এটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি’’, বলছিলেন ব্রিটিশ মিউজ়িয়ামের ডিরেক্টর হার্টউইগ ফিশার। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রত্নবস্তু সংরক্ষণ এবং পুনর্নির্মাণ নিয়ে এই সংগ্রহশালা কাজ করছে ওঁরই নেতৃত্বে। সম্প্রতি তিনি কলকাতায় এসেছিলেন মাত্র ৩২ ঘণ্টার জন্য, তারই মধ্যে কিছু সময় বরাদ্দ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে। এই প্রথম এখানে আসা। ঠাসা কর্মসূচির মাঝে ঘুরে দেখলেন শহর। ভিক্টোরিয়ায় স্লাইড-সহ শোনালেন ওঁর অভিজ্ঞতার কথা। বলছিলেন, আসিরীয় সভ্যতার সেই বিখ্যাত ষাঁড়ের মূর্তি লামাসু’র কথা। যার মাথা দাড়িওয়ালা মানুষের আর পিঠে বিশাল ডানা। শোনা যায় এটি রাজাকে অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করত। মসুলে এখনও লামাসু মাস উদ্‌যাপন করা হয়। জাহাজে করে এমন একটি মূর্তি সে কালে বম্বে ভায়া আফ্রিকা হয়ে পৌঁছয় ব্রিটিশ মিউজ়িয়ামে। সিরিয়ার সংগ্রহশালা কর্মীরা সেখান থেকে শিখে গিয়েছেন এ সব সংরক্ষণের কৃৎকৌশল। ব্রিটিশ মিউজ়িয়ামের বিশেষজ্ঞরা গিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে। ফিশারের ইচ্ছে, এমন নিদর্শন আরও আবিষ্কৃত হোক এবং সংরক্ষিত হোক সেখানেই, বিশ্ব সম্পদ হিসেবে। এই কিছু কাল আগে দায়েশে আবিষ্কৃত হয় একটি লামাসু। এটি যেন বলে ওঠে ‘‘আমাকে ভূগর্ভেই থাকতে দাও, আমি আর ধ্বংস দেখতে চাই না।’’ ফিশার বড় প্রশ্নের সামনে ফেলেন, ‘‘এ কথার উত্তর আমি খুঁজে পাইনি, আপনারা কি পেয়েছেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE