Advertisement
E-Paper

আমি কেন হেরেছিলাম তা কংগ্রেস নেতাদের অজানা নয়, বলছেন মৌসুমী

সরাসরি রাজনীতি তাঁদের জগৎ নয়। তবু এক সময়ে লড়েছিলেন ভোটের ময়দানে। সেখান থেকে আজ তাঁরা অনেকটাই দূরে। এ বারের ভোট নিয়ে কী বলছেন?সরাসরি রাজনীতি তাঁদের জগৎ নয়। তবু এক সময়ে লড়েছিলেন ভোটের ময়দানে। সেখান থেকে আজ তাঁরা অনেকটাই দূরে। এ বারের ভোট নিয়ে কী বলছেন?

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৮
মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়

মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়

ঘটনাচক্রে, আজ, রবিবার তাঁর মায়ের মৃত্যুর এক বছর পূর্তির দিন। ওই ঘটনাচক্রেই, গত জানুয়ারিতে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েও ভরা ভোট মরসুমে রাজনীতি থেকে দূরে তিনি। জানালেন, মায়ের মৃত্যুর পরে নিয়মিত আর কলকাতাতেও যাওয়া হয় না তাঁর। তবু সেই মৃত্যুবার্ষিকীর দু’দিন আগে কলকাতা থেকে ফোন পেয়ে মুম্বই নিবাসী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘কলকাতায় সব ভাল তো? দিল্লি, মুম্বই বা কলকাতা— যেখানেই থাকি, মনেপ্রাণে চাই ভারত জিতুক।’’

কেমন আছেন?

প্রশ্ন শুনে আগের কথার উচ্ছ্বাস যেন মুহূর্তে উধাও। বললেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে মানসিক ভাবে খুব বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছি। বড় মেয়ে অসুস্থ। একা হাতে সব সামলাতে হয়। মেয়ের জন্য এখানকার চিকিৎসকদের কাছে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। কোনও মন্দির, মসজিদ, গির্জা বাদ রাখছি না।’’ কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে মৌসুমী বললেন, ‘‘বিজেপি থেকে ফোন এসেছিল। আমায় বাংলার জন্য ভাবছিল। কিন্তু, এখন আমার পক্ষে ১০০ শতাংশ দেওয়া সত্যিই সম্ভব নয়। পরিবার নিয়ে আমার এই বাধ্যবাধকতার কথা জানিয়েছিলাম ওঁদের। ওঁরা বুঝেছেন। ভোটে দাঁড়ানোর জন্য জোর করেননি।’’

কিন্তু, হঠাৎ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি’তে কেন? তরুণ মজুমদারের ‘বালিকা বধূ’ বলে উঠলেন, ‘‘কংগ্রেস আমায় জায়গা দিল কই? উত্তর-পূর্ব কলকাতা থেকে আমার আসন নিয়ে খেলা হয়েছে। আমি কেন হেরেছিলাম তা নেতাদের অজানা নয়। তার পরেও তো কংগ্রেসের উচিত ছিল আমায় জায়গা দেওয়া। প্রদেশ কংগ্রেস আমায় কেন নেতা বানাল না? এখন আমি সব পার্টিকে চিনে গিয়েছি। তখন কিছুই চিনতাম না।’’

২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কলকাতা উত্তর-পূর্ব আসন থেকে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়েন মৌসুমী। বামেদের মহম্মদ সেলিম এবং তৃণমূলের অজিত পাঁজার সঙ্গে লড়াই ছিল তাঁর। ওই আসনে সে বার জয়ী হন সেলিম। তৃতীয় স্থানে শেষ করেন মৌসুমী। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘আমায় ভোটে দাঁড়াতে বলেছিলেন প্রণব’দা (প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়)। ভোটের পরে যত বার জিজ্ঞাসা করেছি, এটা কী হল প্রণব’দা? উনি এড়িয়ে গিয়েছেন। তাবড় কংগ্রেস নেতাদের লেখা বহু চিঠি রয়েছে আমার কাছে। কিন্তু, এঁদের মানসিকতা দেখে এখন আমার লজ্জা লাগে।’’

কিন্তু, তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একেবারে আলাদা। মোদীকে দেখেই অভিভূত মৌসুমীর বিজেপি’তে যোগদান। বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে দেখে লোকে শিখুক। অনেকে অহেতুক ওঁর বিরোধিতা করছেন। ওঁদের ভোটে দাঁড়ানোর লোক নেই। কে প্রধানমন্ত্রী হবেন তা-ও জানেন না। কিন্তু, একটাই কথা মোদীজিকে টেনে নীচে নামাও। ওঁরা চেয়ারের জন্য মারামারি করছেন। দেশের কথা ভাবছেন না।’’ এই প্রসঙ্গেই উঠল পুলওয়ামা হামলা এবং তার পরে পাকিস্তানে ঢুকে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযান প্রসঙ্গ। ‘বেনাম’, ‘হামশকল’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’র অভিনেত্রী বলে দিলেন, ‘‘আমার শহর কলকাতা থেকেই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন শুনছি। তিনি এখন কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না, তাই এ সব প্রশ্ন করছেন।’’

অনেকে যে বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক! কথা থামিয়ে দিয়ে মৌসুমী বললেন, ‘‘ভাল সম্পর্ক ছিল। এখন আর নেই। আমায় উনি প্রচুর উপহার পাঠাতেন। এক সময় আমাকে ওঁর দলের লোক ভাবতেন অনেকে। তবে এক বার এক আলোচনা সভায় বললাম, মমতা আমায় কখনও ভোটে দাঁড়াতে বলবেন না। কারণ, উনি জানেন যে আমি দাঁড়াব না। ব্যস, সম্পর্ক শেষ।’’

তবে তাঁর মতোই অভিনয় জগত থেকে মিমি, নুসরতেরা তো এ বার তৃণমূলের হয়ে প্রথম বার ভোটে লড়ছেন। মৌসুমীর প্রশ্ন, ‘‘ওঁদের আমি আমার গোত্রে ফেলতে চাই না। ওঁরা তো খুব বেশি দিন অভিনয় জগতে আসেননি। আমার সঙ্গে এঁদের তুলনা চলে না। তাঁরা রাজনীতিতে কেন এসেছেন জানতে চাইলে বোঝাতে পারবেন তো? আমি বিজেপিতে এসেছি ঠিকই, কিন্তু, যত দিন না ভোটে দাঁড়ানোর যোগ্য হচ্ছি, দাঁড়াব না।’’

Moushumi Chatterjee Lok Sabha Election 2019 Political Party
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy