Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লাইন দিয়েও ওষুধ মেলেনি মেডিক্যালে

সোদপুর থেকে কানের সমস্যা নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে এসেছিলেন বছর পঞ্চাশের গৌরী দাস। চিকিৎসককে দেখানোর পরে প্রেসক্রিপশন হাতে হাসপাতালের ওষুধের কাউন্টারের সামনে ঘোরাঘুরি করছিলেন তিনি। বললেন, ‘‘এত বড় লাইন! আগুন লাগার পরে ওষুধ পাব কি না, বুঝতে পারছি না।’’

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০০
Share: Save:

সোদপুর থেকে কানের সমস্যা নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে এসেছিলেন বছর পঞ্চাশের গৌরী দাস। চিকিৎসককে দেখানোর পরে প্রেসক্রিপশন হাতে হাসপাতালের ওষুধের কাউন্টারের সামনে ঘোরাঘুরি করছিলেন তিনি। বললেন, ‘‘এত বড় লাইন! আগুন লাগার পরে ওষুধ পাব কি না, বুঝতে পারছি না।’’

চর্মরোগের চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধের লাইনে দাঁড়ান মুচিপাড়ার শেখ তায়েব। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে বললেন, ‘‘এত ক্ষণ দাঁড়িয়েও ওষুধ পেলাম না।’’

ফার্মেসিতে আগুন লাগার দু’দিন পরে মেডিক্যাল মোটের উপরে ছন্দে ফিরলেও ওষুধের জোগানে ঘাটতি ছিল শুক্রবারেও। আউটডোর বিল্ডিংয়ের তেতলায় বিরাট লাইন ওষুধের কাউন্টারের সামনে। বেলা দেড়টা নাগাদ দেখা গেল, তেতলা থেকে লাইন সাপের মতো এঁকেবেঁকে নেমে এসেছে একতলায়। সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন পুলিশ ও রক্ষীরা। ওষুধের কাউন্টারের সামনে থিকথিকে ভি়ড়। লম্বা লাইন ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানেও। কাউন্টার থেকে বেরোনো রোগী বা পরিজনেরা জানালেন, অনেকেই প্রেসক্রিপশনের পুরো ওষুধ পাননি। কেউ কেউ কোনও ওষুধই পাননি। তবে ভর্তি থাকা রোগীরা ওষুধ পাচ্ছেন বলে জানালেন তাঁদের আত্মীয়স্বজন।

হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, আর দু’দিনের মধ্যেই ওষুধের আকাল মিটে যাবে। রোগীদের সমস্যা হবে না। সেই জন্য হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ মেনে এক গুচ্ছ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্য ভবন পাঁচ কোটি টাকার ওষুধ কেনার ছাড়পত্র দিয়েছে। সন্ধ্যার পরেই ওষুধ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই ঘাটতি শীঘ্রই মিটে যাবে।’’ তিনি জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত স্টোর ফের চালু হওয়ার আগে মাদার ও চাইল্ড হাবের সাততলায় ওষুধ মজুত করা হবে। সেই সঙ্গে রোগীদের চাপ কমাতে আউটডোর বিল্ডিংয়ে ওষুধের কাউন্টার বাড়ানো হচ্ছে।

যে-স্টোর পুড়ে গিয়েছে, এত দিন রাতে জরুরি বিভাগের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হত সেখান থেকেই। রাতের দিকে ওষুধের ঘাটতি মেটাতে এ দিন জরুরি বিভাগের একতলাতেই ওষুধের কাউন্টার খোলা হয়েছে। সেখান থেকেই জরুরি বিভাগের জন্য চটজলদি ওষুধ জোগানোর ব্যবস্থা চালু থাকবে বলে জানান সুপার।

বুধবার ফার্মেসিতে আগুন লাগার পরে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছ়ড়িয়ে পড়েছিল। কয়েক জন রোগীকে নীলরতন সরকার ও আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মেডিক্যাল-কর্তৃপক্ষ জানান, স্থানান্তরিত রোগীদের তিন জন এ দিন এই হাসপাতালে ফিরে এসেছেন। তবে তাঁরা কারা এবং কোন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন, সেই তথ্য মেলেনি।

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দু’দিন পরে প্রবল ভাবে ছন্দে ফেরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Medicine queue Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE