Advertisement
E-Paper

মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে নির্লজ্জ ভাবে মারল গেঞ্জি পরা পুলিশ

তখন বেলা ১২টা। একটি মাংসের দোকানে আচমকাই ঢুকে পড়েন এক মহিলা। আর ঢুকেই মাংস কাটার একটি চপার তুলে নেন। হাবভাব দেখে আশপাশের সকলেরই তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০১:৩৬
লজ্জা: এঁরাই রক্ষক!  মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে এ ভাবেই নির্বিচারে মারধর করল পুলিশ। শুক্রবার, বাগুইআটিতে। —নিজস্ব চিত্র।

লজ্জা: এঁরাই রক্ষক! মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে এ ভাবেই নির্বিচারে মারধর করল পুলিশ। শুক্রবার, বাগুইআটিতে। —নিজস্ব চিত্র।

কারও হাতে লাঠি, কারও রড। কেউ তাঁর চুল ধরে টানছেন, কেউ চড়-থাপ্পড় মারছেন। আর চিৎকার করে উঠছেন বছর চল্লিশের এক মহিলা। চারপাশে ভিড় করে ‘মজা’ দেখতে ব্যস্ত সকলেই। শুক্রবার দুপুরে এমনই এক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বাগুইআটির জগৎপুর বাজার এলাকা।

তখন বেলা ১২টা। একটি মাংসের দোকানে আচমকাই ঢুকে পড়েন এক মহিলা। আর ঢুকেই মাংস কাটার একটি চপার তুলে নেন। হাবভাব দেখে আশপাশের সকলেরই তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হয়েছিল। তিনি চপারটি তুলে দোকানের সামনে হাজির লোকজনের দিকে ঘোরাতে থাকায় আতঙ্কে সিঁটিয়ে গিয়েছিলেন সকলেই।

থামাতে না পেরে বাসিন্দাদের একাংশ জগৎপুর পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। খবর পেয়ে দু’জন কনস্টেবল ও এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার ঘটনাস্থলে যান।
পুলিশকর্মীদের পরনে পুলিশের পোশাক ছিল না।

অভিযোগ, ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁরা মহিলাকে মারধর শুরু করেন। যোগ দেন স্থানীয় কয়েক জনও। আহত অবস্থায় এ দিন দুপুরে মহিলাকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পরে পুলিশ জেনেছে, মহিলার নাম শিপ্রা হালদার। ওই বাজারেই তাঁর স্বামীর মাংসের দোকান ছিল। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই আচরণে কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়।

আরও পড়ুন:মায়ের সামনে ছেলেকে খুন

এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রথমত, কেন কোনও মহিলা পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হল না? দ্বিতীয়ত, মানসিক ভারসাম্যহীন কোনও ব্যক্তি যদি হিংসাত্মক আচরণ করেন, সে ক্ষেত্রেও কি পুলিশ এমন নির্দয় ভাবে মারধর করতে পারে?

পুলিশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, পুলিশ ফাঁড়িতে ওই সময়ে কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন না। বাগুইআটি থানা থেকে মহিলা পুলিশকর্মী পাঠাতে গেলে দেরি হয়ে যেত। কারণ উনি হিংস্র হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু এ ভাবে কি মারধর করা যায়? বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রে খবর, ঠিক কী ঘটেছিল তা জানতে বিভাগীয় তদন্ত হবে।

মনোরোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার কর্ণধার রত্নাবলী রায়ের কথায়, ‘‘যদি ওই মহিলা হিংসাত্মক আচরণ করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে পুলিশ কিংবা বাসিন্দারাও একই কাজ করেছেন। মনোরোগীদের ক্ষেত্রে বার বার এমনটাই ঘটে। এটা লজ্জার।’’

রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে সব পুলিশ কর্মী এমন করেছেন, তাঁদের অবিলম্বে বরখাস্ত করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে এই ঘটনায় মহিলা কমিশন নিজেরাই সুয়োমোটো পদক্ষেপ করবে।’’

Lynching Baguiati বাগুইআটি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy