সৌম্যজিৎ পাল
এক সপ্তাহের জ্বর কেড়ে নিল ১০ বছরের এক কিশোরের জীবন। ডেথ সার্টিফিকেটে সরকারি হাসপাতালের তরফে লেখা হয়েছে, ডেঙ্গি শক সিনড্রোমে মৃত্যু হয়েছে কিশোরের।
কেষ্টপুরে মিশনবাজারের খ্রিষ্টানপাড়ার বাসিন্দা সৌম্যজিৎ পাল সাত দিন আগে জ্বরে পড়েছিল। স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। ছেলেটির পারিবারিক সূত্রে বলা হয়, শুক্রবার তার প্লেটলেট ১০ হাজারে নেমে গিয়েছিল। খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই রাতে ১০টা নাগাদ তাকে ফুলবাগানের বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই সেখানে মৃত্যু হয় তার।
হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়, এমন অবস্থায় ছেলেটিকে আনা হয়েছিল যে চিকিৎসকেরা কোনও সুযোগই পাননি। ডেঙ্গি শক সিন়ড্রোমে এ ভাবেই দ্রুত রোগীর অবস্থার অবনতি হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
সৌম্যজিৎ অ্যাসেম্বলি অব গডচার্চ স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। স্কুলে ফুটবল খেলা ও কুইজের জন্য পরিচিত ছেলেটির মৃত্যুর খবরে এ দিন থমথমে গোটা পাড়া। সৌম্যজিতের বাবা সুবীর পাল, পেশায় অটোচালক, মা মালতীদেবী গৃহবধূ। এক দাদাও রয়েছে সৌম্যজিতের।
কেষ্টপুর এলাকায় গত তিন-চার মাসে এই নিয়ে চার জনের মৃত্যু হল। শুক্রবার দুপুরেই কেষ্টপুরের চণ্ডীবেড়িয়ায় লক্ষ্মী ঘোষ (৩৬) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। বেসরকারি ক্লিনিকে লক্ষ্মীদেবীর রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি পজিটিভ জানানো হয়েছিল বলে মৃতার পরিবারের দাবি। যদিও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল যে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছিল তাতে লেখা ছিল, ‘শক উইথ মেটাবলিক অ্যাসিডোসিস ইন আ কেস উইথ এন এস ১ অ্যান্ড ফিভার।’
কেষ্টপুর, দমদমের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিধাননগর পুরসভাও কেষ্টপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের অবশ্য বক্তব্য, এলাকায় ঝোপজঙ্গল সাফ করে, জল জমা রুখে সর্বতো ভাবে চেষ্টা চলছে ডেঙ্গি রোখার।
তবু কোথা থেকে মশা আসছে, বিষয়টি ভাবাচ্ছে পুর কর্তাদের। মশাদের বিরুদ্ধে ফের অভিযানে সামিল হতে চলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
তবে স্থানীয় মানুষ পুরসভার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, একটা করে মৃত্যু হয় আর পুরসভা এসে এলাকায় ব্লিচিং ছড়ায়, ক’দিন মাইক নিয়ে প্রচার করে। কিন্তু বছরভর কোনও অভিযান হয় না। নেই সচেতনতার প্রচারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy