Advertisement
E-Paper

নবান্ন অভিযানে পুলিশের লাঠি-গ্যাস-জলকামান, বিমান বসু-সহ জখম বহু

পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বামেদের নবান্ন অভিযান। কলকাতা ময়দান সংলগ্ন ডাফরিন রোড, মেয়ো রোড ও রেড রোড এবং হাও়ড়ার ফোরশোর রোডে বৃহস্পতিবার দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধল বাম বিক্ষোভকারীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ১৪:২৮

পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বামেদের নবান্ন অভিযান। কলকাতা ময়দান সংলগ্ন ডাফরিন রোড, মেয়ো রোড ও রেড রোড এবং হাও়ড়ার ফোরশোর রোডে বৃহস্পতিবার দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধল বাম বিক্ষোভকারীদের। ইট এবং পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। কয়েক জন বাম বিধায়কেরও অল্পবিস্তর চোট লেগেছে। এ ছাড়াও জখম হয়েছেন প্রচুর বাম সমর্থক। প্রতিবাদে বাম বিধায়কদের নেতৃত্বে ডাফরিন রোড ও মেয়ো রোডের সংযোগস্থল অবরোধ করে অবস্থানে বসেন বাম জনতা। বিকেল চারটে নাগাদ সেই অবরোধ ওঠে।

কথা ছিল, কলকাতা ও হাওড়া শহরের মোট চারটি পয়েন্ট থেকে এ দিন নবান্নের দিকে মিছিল নিয়ে যাবে বামেরা। সকাল ১১টা থেকে নানা জেলার লোকজন জমা হতে শুরু করেন ওই চারটি পয়েন্টে। বিধানসভা থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে মিছিল করে আসেন বাম বিধায়কেরা। সেখানেই ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানবাবু। রানি রাসমণি থেকে মিছিল যাতে কোনও ভাবেই পশ্চিম দিকে রাজভবন সংলগ্ন এলাকায় যেতে না পারে তার জন্য পুলিশি ঘেরাটোপ ছিল বিশাল। রানি রাসমণির জমায়েতেই সূর্যবাবু হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘আমরা আজ হয়তো তিন ঘণ্টা রাস্তায় থাকব। কিন্তু যদি জোর করে আটকান তা হলে এর পরে ২৪ ঘণ্টাই বিক্ষোভ সামলাতে হবে।’’

পুলিশের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত বিমান বসু।

সূর্যবাবুর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরেই রানি রাসমণির পুলিশকে দর্শক রেখে মিছিল সম্পূর্ণ উল্টো দিকে ধর্মতলা হয়ে ডাফরিন রোড দিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দিকে হাঁটতে শুরু করে। ডাফরিন রোডে প্রথম ছোট ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার পর পুলিশের খাড়া করা বিশাল লোহার ব্যারিকেডে আটকে যায় মিছিল। অভিযানকারীরা বার বার পুলিশকে বলতে থাকেন রাস্তা ছেড়ে দিতে। কিন্তু পুলিশ ছিল নাছোড়। বেশ কিছু ক্ষণ ধস্তাধস্তি করে এক সময় ব্যারিকেডের একটি অংশ ভেঙে ফেলল জনতা। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে মারমুখী অবস্থান নিতেই তাদের দিকে উড়ে আসে ইট। সূর্যবাবু তখন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে রাস্তায় বসেছিলেন। পুলিশ যখন ডাফরিন রোডে জনতাকে ঠেকাতে ব্যস্ত, সূর্যবাবুকে নিয়ে অন্য একটি মিছিল তখন আচমকাই ময়দানের আর এক দিকে রেড রোড ধরে এগোতে থাকে। সেখানেও ব্যারিকেড ভাঙে। কোনওক্রমে ঘোড়সওয়ার পুলিশ এনে অবস্থা সামাল দিতে না দিতেই ডাফরিন রোড তত ক্ষণে রণক্ষেত্র। এক বার পুলিশকে তেড়ে যাচ্ছে জনতা, আবার পুলিশ পাল্টা তেড়ে যাচ্ছে জনতার দিকে। হুড়োহুড়ির মধ্যে ময়দানে একের পর এক ক্লাবের তাঁবুতে ঢুকে পড়ে জনতা। মাঝের নয়ানজুলিতে পড়ে গিয়ে আহত হন বেশ কিছু পুরুষ ও মহিলা। পুলিশ মারমুখী হয়ে উঠেছে দেখেই আন্দোলনকারীদের সামনে গিয়ে হাজির হন বিমানবাবু, সুভাষ নস্কর, মনোজ ভট্টাচার্যেরা। পুলিশের দিক থেকে আসা লাঠি এবং পাল্টা ইটের ঘা থেকে রেহাই পাননি বিমানবাবুও। প্রাথমিক শুশ্রুষার পরে বিমানবাবুই ঘোষণা করেন, তাঁদের অবস্থান চলবে। খণ্ডযুদ্ধ থামার পরে লাঠি এবং ইটের ঘায়ে আহত বেশ কয়েক জন বাম সমর্থককে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

দেখুন, রণক্ষেত্র কলকাতা

এ দিন হাওড়ার ফোরশোর রোডে রেল মিউজিয়ামের সামনে থেকে বামেদের মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি হাওড়া তেলকল ঘাট হয়ে ফোরশোর রোডে পৌঁছয় বেলা ১টা নাগাদ। সেখানে শিবপুর শ্মশানঘাটের কাছে কয়লা ডিপো এলাকায় পুলিশ মিছিল আটকালে উত্তেজনা শুরু হয়। হাজার পনেরো লোক সেখানে জমায়েত হলে বিক্ষোভকারীরা পাইপ দিয়ে পিটিয়ে ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। তার পরেই পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা পাল্টা পাথর ছুড়তে থাকে। পাথরের ঘায়ে এক পুলিশ অফিসারের মাথা ফাটে। কয়েক জন পুলিশকর্তাও আহত হন। পুলিশ এ বার জলকামান ব্যবহার শুরু করে। জলকামান মারতেই ক্ষোভের পারদ আরও চড়তে থাকে। জনতা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-লাঠি-জুতো ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ প্রায় ২০ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। লাঠিও চালায়। বাম জনতা পিছন দিকে হঠতে থাকে। পুলিশ তাদের তাড়া করে ফের রেল মিউজিয়াম পর্যন্ত নিয়ে আসে। বিকাল পর্যন্ত সেখানে বিক্ষোভ চলছে।

কৃষক সভার নবান্ন অভিযান ঘিরে অবরুদ্ধ কলকাতা

cpm nabanna marc left parties nabanna march nabanna march kolkata battlefiel howrah battlefield left farmers left farmers nabanna march MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy