এ ভাবেই ফেলা হয় নিকাশির জল। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
কথায় আছে ভাগের মা গঙ্গা পায় না। দমদম স্টেশন সংলগ্ন দমদম রোডের সাবওয়ের হাল এখন এমনই। এর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে শুরু হয়েছে টালবাহানা। রেল, কেএমডিএ এবং দক্ষিণ দমদম পুরসভা— প্রত্যেকেই একে অন্যের উপর দায় চাপাচ্ছে। এই কাজিয়ায় আটকে নিত্য দিন নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা।
প্রায় এক দশক আগে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এটি তৈরি করে। এখানে পাশাপাশি রয়েছে মেট্রো এবং রেলস্টেশন। যাত্রীদের স্টেশন থেকে বেরিয়ে উঠতে হয় দমদম রোডে। সেই রাস্তার অনেকটা জবরদখলকারীর আওতায় চলে যাওয়ায় প্রতি দিনই প্রবল যানজট হত। এর সমাধানে রেলব্রিজের নীচে দমদম রোড সাবওয়েটি তৈরি হয়। নাগেরবাজার ও দমদমমুখী গাড়ির আলাদা দু’টি পথ, দ্বি-চাকার যান যাতায়াতের রাস্তা ও দু’ধারে ফুটপাথও তৈরি হয়। যদিও দমদম রোডে এখনও রয়ে গিয়েছে যানজটের সমস্যা।
সেই সাবওয়ে এখন কালো জলে থইথই। স্থানীয়দের অভিযোগ, রেলের নিকাশির জল পাম্প চালিয়ে রাস্তার উপরে ফেলা হয়। বৃষ্টি হলেই সাবওয়েতে হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায়। গাড়ির ধাক্কায় সেই নোংরা জল ছিটিয়ে আসে পথচারীর গায়ে।
পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, তৈরির পর থেকেই সাবওয়ে নিয়ে ভোগান্তির শুরু। ২০১১-এ কেএমডিএ কিছু কাজ করেছিল। কিন্তু সমস্যা রয়েই গিয়েছে।
পথচারীরা জানাচ্ছেন, স্টেশনের দিকের সাবওয়ের ফুটপাথে টিমটিম করে আলো জ্বলে। দিনের বেলাও প্রায়ান্ধকার। সরু ফুটপাথের এক ধারে বসে-শুয়ে থাকে ভবঘুরে, এখানে-ওখানে পরে মলমূত্র। ফলে সংকীর্ণ ওই পথে যাতায়াতে খুবই অসুবিধা হয়। পাশেই সাইকেল যাওয়ার অপরিসর রাস্তা। সেখানের অবস্থাও শোচনীয়। জল, ময়লা জমে থাকায় সেখান দিয়ে সারা দিনে হাতে গোনা কয়েকটি সাইকেল যাতায়াত করে। সাবওয়ের চিড়িয়ামোড়মুখী রাস্তার উপরে ব্রিজের নীচে সারে সারে অটো-ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ওখানে কোনও দিনই ট্র্যাফিক পুলিশ থাকে না। অলিখিত ওই স্ট্যান্ডটি দীর্ঘ দিনের। এই সবের জেরে দমদম রোডে যানজট লেগেই থাকে। অভিযোগ, এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই প্রতি দিন কয়েক হাজার লোক যাতায়াত করেন।
কেএমডিএ-এর সিটি বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওখানে সিভিল ওয়ার্কের দায়িত্ব আমাদের। ঢালাই রাস্তার কিছুটা অংশ ভেঙেছে। সেটা মেরামতি করা হবে। কিন্তু দক্ষিণ দমদম পুরসভারও দায়িত্ব রয়েছে এর রক্ষণাবেক্ষণে। যেটা তারা করে না।’’
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (বর্জ্য) দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওখানে কোনও কাজ করতে রেলের অনুমোদন নিতে হয়। সেটা চেয়েও মেলে না। তা ছাড়া ওই নিকাশির জল রেলের। দমদম স্টেশনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বহুবার আলোচনা হলেও ওদের টালবাহানায় কোনও সমাধানই হয়নি।’’ অন্য দিকে, দেবাশিসবাবুর পূর্বসূরি প্রবীর পাল জানান, দায়িত্ব নিয়ে সমস্যা আগেও ছিল। তখন মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে আগের বোর্ড রেলের অনুমোদনের অপেক্ষা না করেই কাজ করত। কালভার্টের মেরামতি, নিয়মিত সাফাই, আলোর ব্যবস্থা সবই হত। অন্য দিকে, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘আগেও ওখানে সমস্যা ছিল। স্থানীয় পুরসভা চিঠি দিয়ে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy