Advertisement
E-Paper

বালি থেকে কাঁটা তুলতে মরিয়া শাসকদল

সবুজে সাজানো সাম্রাজ্যে একটিই ছিল কাঁটা ঝোপ! তা হল বালি পুরসভা। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গঙ্গার পশ্চিমকূল বরাবর প্রতিটি পুরসভাই এসেছিল শাসকদলের দখলে। শিবরাত্রির সলতের মতো একমাত্র সিপিএমের দখলে ছিল বালি পুরসভা।

দেবাশিস দাশ ও শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৫২
বালি পুর-বাজারে নির্বাচনী প্রচারে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বলরাম ভট্টাচার্য। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

বালি পুর-বাজারে নির্বাচনী প্রচারে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বলরাম ভট্টাচার্য। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

সবুজে সাজানো সাম্রাজ্যে একটিই ছিল কাঁটা ঝোপ! তা হল বালি পুরসভা।

রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গঙ্গার পশ্চিমকূল বরাবর প্রতিটি পুরসভাই এসেছিল শাসকদলের দখলে। শিবরাত্রির সলতের মতো একমাত্র সিপিএমের দখলে ছিল বালি পুরসভা। আর তা নিজেদের করায়ত্ত করাই ছিল তৃণমূলের একমাত্র পাখির চোখ। সেই মতো হাওড়া পুরসভার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া বালির ১৬টি শূন্যপদের নির্বাচনে সব ক’টি আসনে জয়ী হতে মরিয়া শাসকদল। আর তাই শুধু বালির স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের উপরে ভরসা রেখেই থেমে থাকছেন না জেলা-নেতৃত্ব। হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যান থেকে কাউন্সিলর, সকলকে বালির এক-একটি ওয়ার্ডে ‘ভোট অবজার্ভার’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ দিকে, এই ১৬টি আসনে জয়ের বিষয়টি তাদের কাছে চ্যালেঞ্জ কি না, তা-ও জোর দিয়ে বলছেন না স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, ঘুষ-কাণ্ডের পরে বালিতে প্রকাশ্যেই কিছুটা ব্যাকফুটে সিপিএম। সেখানে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ভূমিকা বলাই বাহুল্য। আর লোকসভা ভোটে ১২টি আসনে (সেই সময়ে বালির ওয়ার্ড সংখ্যা ছিল ৩৫) এগিয়ে থাকার সুবাদে এ বার ১৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে কিছুটা আশায় রয়েছে বিজেপি। যদিও লোকসভা ভোটে যাঁদের বিজেপির হয়ে বালিতে লড়তে দেখা গিয়েছিল, তাঁদের কিন্তু এই নির্বাচনে তেমন ভাবে দেখা যাচ্ছে না। আবার দুর্বল সংগঠনের জন্যও কিছুটা পিছনে বিজেপি। সোমবার শাসকদলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তারা।

তবে কংগ্রেস বা বিজেপিকে কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনেই করছেন না তৃণমূলের প্রার্থীরা। বরং বালির কয়েকটি ওয়ার্ডে কিছুটা হলেও লড়াই করছে সিপিএম। সোমবার সকালে প্রচারে বেরিয়ে ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পল্টু বণিক বলেন, ‘‘গোটা বালিতে কংগ্রেস ও বিজেপি-র প্রতিদ্বন্দ্বিতা বোঝাই যাচ্ছে না। সিপিএম আছে শুধু নামেই। তাই বালিকে ঘিরে উন্নয়নের জোয়ারে সব ক’টি আসনে জয় লাভ করবে তৃণমূলই।’’ একই মত অন্য তৃণমূল প্রার্থীদেরও। বালির এই নির্বাচনের পরে নতুন কোনও মেয়র বা মেয়র পারিষদ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবু ৩৭ বছর যে পুরসভা কোনও দিন সিপিএমের হাতছাড়া হয়নি, তা দখলে নিয়ে ২০১৬ সালে বালি বিধানসভা ভোটের ভিত মজবুত করার বার্তাই বিরোধীদের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছে শাসকদল।

রাজনৈতিক সূত্রে খবর, সেই মতো বালি, বেলুড় ও লিলুয়া অঞ্চলে ভোটের ময়দানের ‘ফিল্ডিং’ সাজিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। যেমন, লিলুয়া এলাকার চারটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্র। একই ভাবে জায়সবাল হাসপাতাল থেকে বালি খাল পর্যন্ত জিটি রোড বরাবর এলাকা এবং বেলুড় ভোটবাগানের দায়িত্বে রয়েছেন মেয়র পারিষদ গৌতম চৌধুরী। বরো চেয়ারম্যান রজত সরকার রয়েছেন ঘুসুড়ির দায়িত্বে। অন্য দুই মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কয়েক জন কাউন্সিলর রয়েছেন বালির দায়িত্বে।

শাসকদলের এই ‘ভোট অবজার্ভার’-এর বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন নির্বাচনে বহিরাগতদের দিয়ে যে ভাবে শাসকদল ভোট লুঠ করেছে, বালিতেও হাওড়ার মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলদের দিয়ে তা করারই পরিকল্পনা এটি।’’ মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘বালিতে কারা ভোট লুঠ করত, সবাই জানে। হাওড়ার সঙ্গে বালি যুক্ত হওয়ায় সেখানকার ভোটে মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলরদের শুধু পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যাতে কোনও ওয়ার্ডে ভোট প্রক্রিয়ায় কোনও ফাঁক থাকলে তা সামাল দেওয়া যায়।’’

bali municipality tmc vs cpm tmc bali cpm bali municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy