Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
twitter

Charulata Barik: ‘টুইট-রানি’ চারুলতা! গরিবের পাশে দাঁড়াতে ফোনকে অস্ত্র বানিয়ে লড়ছেন কৃষক-কন্যা

দীপার টুইটার অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যা সাড়ে ছ’হাজারের মতো। আর দীপা ফলো করেন হাজার পাঁচেক অ্যাকাউন্ট। তবে মানুষের বিপদ বুঝলেই সরকারের নজরে পড়বে এমন টুইটার অ্যাকাউন্ট ট্যাগ করে টুইট করতে জানেন তিনি। আর তাতে কাজের কাজ হয়ে যায়।

‘টুইট-রানি’ চারুলতা

‘টুইট-রানি’ চারুলতা গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৯:৫২
Share: Save:

ভাল নাম চারুলতা বারিক। তবে দীপা নামেও সমান পরিচিত। এখন নতুন নাম হয়েছে ‘টুইট-রানি’। ওড়িশার এক প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ের এমন নাম দিয়েছেন ওঁর ভক্তরাই। আসলে ভক্তের সংখ্যাও তো কম নয়। দীপার খ্যাতি টুইটারে জনপ্রিয়তার জন্য নয়, টুইটারকে ব্যবহার করে মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য।

দীপার টুইটার অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যা সাড়ে ছ’হাজারের মতো। আর দীপা ফলো করেন হাজার পাঁচেক অ্যাকাউন্ট। তবে মানুষের বিপদ বুঝলেই সরকারের নজরে পড়বে এমন টুইটার অ্যাকাউন্ট ট্যাগ করে টুইট করতে জানেন তিনি। আর তাতে কাজের কাজ হয়ে যায়। আসলে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সবাই চেনে দীপার অ্যাকাউন্টকে। তাই কাজ হয়ে যায়। দিন দিন বাড়তে থাকে দীপার জনপ্রিয়তা। ইতিমধ্যেই হাজার পাঁচেক মানুষের উপকার করেছেন টুইটারকে অস্ত্র বানিয়ে।

ওড়িশার বরগড়া জেলার পাইকামাল ব্লকের প্রত্যন্ত টেমরি গ্রাম। সেই গ্রামের বাসিন্দা দীপা ইন্দিরা গাঁধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। বাবা অম্রুত বারিক কৃষক। মা সুষমা বারিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। এমনই এক পরিবারের মেয়ে দীপার হাতে মোবাইল ফোন আসে ২০১৯ সালে। জন্মদিনে বাবা উপহার দিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় সমাজকর্মী দিবসকুমার সাহুর কাছে শেখেন, কী ভাবে টুইটার ব্যবহার করতে হয়। কী ভাবে মন্ত্রী থেকে সরকারি কর্তাব্যক্তিদের ট্যাগ করা যায়।

প্রথম উদ্যোগ এক বৃদ্ধার জন্য। তাঁর গ্রামেরই বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার কাঁচা বাড়ি বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সরকারি দফতরকে ট্যাগ করে ছবি-সহ বৃদ্ধার দুরবস্থার কথা টুইট করেন দীপা। কাজ হয় সেই টুইটে। সরকারের পক্ষ থেকে ৯৮ হাজার টাকার সাহায্য এবং পাকা বাড়ি পেয়ে যান বৃদ্ধা। দীপা পান বৃদ্ধার আশীর্বাদ আর প্রেরণা। এর পরে একের পর এক মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা টুইটে তুলে ধরতে থাকেন। সাফল্যও মিলতে থাকে। ইতিমধ্যেই সাফল্যের সংখ্যা হাজার পাঁচেক।

দীপা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রথমেই তিনি দেখে নেন অভাব বা সমস্যাটা সত্যি কি না। আর সেটা যাচাই করার পরেই টুইট করেন। ধীরে ধীরে তাঁর পরিচয় বাড়তে থাকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে ওঠেন। নিজের গ্রাম থেকে ব্লক হয়ে জেলার মানুষের কথা বলতে শুরু করেন। এখন ওড়িশার অন্যান্য প্রান্তের মানুষের কাছেও পৌঁছে গিয়েছে দীপার পরিচয়। সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার মাধ্যম হিসেবে দীপাকে পেয়েছেন অনেক অসহায় মানুষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে আটকে পরা মানুষের উদ্ধারে সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া থেকে বিধবা ভাতা আদায়ে মোবাইল ফোনই দীপার সমাজসেবার অস্ত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

twitter Social Work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE