কোন রোগীর অবস্থা গুরুতর, কোন রোগীর তত নয়, কাকে সিটি স্ক্যান বা আইসিসিইউ-র জন্য জেলার ইএসআই হাসপাতাল থেকে মানিকতলা ইএসআই-তে পাঠানো যাবে, কার ক্ষেত্রে সেটা ঝুঁকি হয়ে যাবে— এই সিদ্ধান্ত নিতেই গোলমাল হচ্ছে ও রোগীর প্রাণসংশয় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজ্যের ১৩টি ইএসআই হাসপাতালের মধ্যে শুধু মানিকতলাতেই সিটি স্ক্যান ও আইসিইউ আছে। ইএসআই ডিরেক্টরেটের নির্দেশ অনুযায়ী, যাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল, তাঁদের সিটি স্ক্যান বা আইসিইউ দরকার হলে জেলা থেকে (শুধু আসানসোল ও দুর্গাপুর ইএসআই হাসপাতাল ছাড়া) মানিকতলাতেই পাঠাতে হবে। এতে ইএসআই-এর আর্থিক সাশ্রয় হবে। কিন্তু রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে কাছাকাছি টাই-আপ কেন্দ্রে ‘রেফার’ করতে হবে।
কিন্তু অনেকেই এই নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা করছেন ও দায়িত্ব এড়াতে অনেক ইএসআই হাসপাতাল গুরুতর অসুস্থকেও মানিকতলায় রেফার করে দিচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইএসআই-অধিকর্তা মৃগাঙ্কশেখর কর। ফলে পথেই বহু রোগীর প্রাণসংশয় হচ্ছে। মানিকতলার চাপও বাড়ছে। সব ইএসআই-কে ফের সতর্ক করা হচ্ছে।
গত ৭ মার্চ মাথা ঘুরে বাড়িতেই অজ্ঞান হয়ে যান বজবজের নীলিমা দাস। তাঁর স্বামী দীপক দাসের অভিযোগ, ‘‘বজবজ ইএসআই হাসপাতাল বলে, নীলিমাদেবীর সেরিব্রাল হয়েছে। ওরা স্যালাইন চালায়। ইঞ্জেকশন দেয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, আইসিইউ নেই, সিটি স্ক্যান নেই, অক্সিজেনও নেই। রোগীকে মানিকতলা নিয়ে যেতে হবে।’’ অভিযোগ, হাসপাতালে তিনটে অ্যাম্বুল্যান্স থাকা সত্ত্বেও একটিও মেলেনি। তাঁরা ছোটেন মহেশতলা পুরসভায়। সেখানে পাঁচটি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, চালকেরা জানান, চেয়ারম্যানের চিঠি আনলে অ্যাম্বুল্যান্স নিখরচায় মিলবে। না-হলে এসি গাড়ির জন্য ১৫০০ এবং নন-এসির জন্য ১২০০ দিতে হবে। অত সকালে চেয়ারম্যানকে না-পেয়ে তাঁরা ১৫০০ টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেন। ততক্ষণে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ পেরিয়ে গিয়েছে।
মানিকতলায় পৌঁছনোর আগেই নীলিমাদেবী মারা যান। ওই হাসপাতালের সুপার শান্তনু চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ রোগীদের সিটি স্ক্যান বা আইসিইউ দরকার হলেই আমাদের মানিকতলায় পাঠাতে বলা হয়েছে। এটা করতে গিয়ে আমরাও সমস্যায় পড়ছি।’’ আর মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাসের বক্তব্য, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য আমার সই একেবারেই জরুরি নয়। ১৫০-২০০ টাকায় পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স মেলার কথা। কেন সেটা হয়নি, তদন্ত করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy