দুঃস্থ শিশুদের একটি স্কুলের উদ্বোধনে জেসি জ্যাকসন। মঙ্গলবার, চম্পাহাটিতে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
ভারতে উন্নত মস্তিষ্ক থাকা সত্ত্বেও এ দেশ থেকে দারিদ্র দূর করা যাচ্ছে না, সিলিকন ভ্যালির তাবড় সংস্থার মাথায় ভারতীয়রা থাকা সত্ত্বেও এ দেশের অনেক শিশুই স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না বলে আক্ষেপ করলেন মার্কিন নাগরিক অধিকার কর্মী জেসি জ্যাকসন। সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গাঁধীর অসম্পূর্ণ কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দারিদ্র দূর করাই বর্তমান সমাজের অন্যতম দায়িত্ব বলে তাঁর মত।
পাঁচ দিনের সফরে রবিবার রাতে কলকাতায় এসেছেন জেসি। বর্ণবৈষম্য বিরোধী এবং জাতিভেদ দূরীকরণ আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা মার্কিন এই নেতা মঙ্গলবার দুপুরে গিয়েছিলেন এলগিন রোডে নেতাজি ভবন ঘুরে দেখতে। সেখানে পরিদর্শন শেষেই তাঁর এমন আক্ষেপ।
জেসি বলেন, “ভারত মস্তিষ্ক রফতানি করে। এই দেশ এতে এক নম্বর। তাই মাইক্রোসফ্টের মাথায় ভারতীয়রা আছেন। তা সত্ত্বেও এ দেশ থেকে দারিদ্র দূর হচ্ছে না। এ দেশের সব ছেলেমেয়ে স্কুলে যেতে পারে না।” পরিস্থিতি বদলানোর জন্য সচেষ্ট হওয়ার আবেদন জানান জ্যাকসন।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ সুভাষচন্দ্রের বাসভবন নেতাজি ভবনে পৌঁছন জ্যাকসন। তাঁকে ভবনটি ঘুরিয়ে দেখান সুভাষচন্দ্রের ভ্রাতুষ্পুত্রের স্ত্রী, প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসু ও কৃষ্ণাদেবীর ছেলে, সুভাষচন্দ্রের নাতি ইতিহাসবিদ সুগত বসু। ১৯৪১ সালে যে গাড়িতে করে শিশির বসু সুভাষচন্দ্রকে গোমো পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে এসেছিলেন, ভবনে ঢুকে এ দিন সেই গাড়িটিই প্রথম দেখেন জ্যাকসন। ঘুরে দেখেন সুভাষচন্দ্রের শয্যাকক্ষ, ১৯৩৮ থেকে ১৯৩৯ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন যে ঘরে সুভাষচন্দ্রের অফিস ছিল, সেটি ও নেতাজি ভবনের সংগ্রহশালা। ১৯৪৫ সালের ১৭ অগস্ট সুভাষচন্দ্রের শেষ যে ছবিটি তোলা হয়েছিল, তার পাশাপাশি ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর ব্যবহৃত পোশাক, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, জওহরলাল নেহরু এবং রবীন্দ্রনাথের ছবিও দেখেন।
সুভাষচন্দ্র কত দিন জেলবন্দি ছিলেন, গাঁধী কবে মারা যান, সে সব খুঁটিয়ে জানতে চান জ্যাকসন। নেতা হওয়ার পাশাপাশি যিনি ধর্ম প্রচারকও। সুভাষচন্দ্রের ব্যবহৃত খাটে একটি ফুলের তোড়া রাখেন তিনি।
ভবন ঘুরে দেখার পরে একটি খাতায় অভিজ্ঞতার কথা লিখতে বলা হয়। জ্যাকসন সেখানে লেখেন, গাঁধী ও সুভাষচন্দ্র মিলিত ভাবে স্বাধীনতার পরিচায়ক। বেলা পৌনে ১টা নাগাদ ভবন ছেড়ে বেরোনোর সময়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যেও জ্যাকসন জানান, গাঁধীর অহিংসবাদ এবং সুভাষচন্দ্রের সশস্ত্র আন্দোলন দুই পন্থারই প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy