Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রুদ্ধ পাতাল, স্তব্ধ সড়ক, দুর্ভোগ চলছে

এ বার ‘হ্যাটট্রিক’। তবে ময়দানের কোনও খেলায় নয়। রাস্তায় ও পাতালের ভোগান্তিতে। গত দু’দিনের মতো সোমবারও মিছিলের ঠেলায় শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের কবলে পড়লেন সাধারণ মানুষ। আর সন্ধ্যায় গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনে লাইনে ‘ঝাঁপ’ দিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ রইল ট্রেন চলাচল। সপ্তাহের প্রথম দিনে দুপুরে ও সন্ধ্যায় এই জোড়া ভোগান্তিতে জেরবার হলেন অফিসযাত্রীরা।

জট ছাড়ার অপেক্ষা। সোমবার, ধর্মতলায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

জট ছাড়ার অপেক্ষা। সোমবার, ধর্মতলায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২৭
Share: Save:

এ বার ‘হ্যাটট্রিক’। তবে ময়দানের কোনও খেলায় নয়। রাস্তায় ও পাতালের ভোগান্তিতে। গত দু’দিনের মতো সোমবারও মিছিলের ঠেলায় শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের কবলে পড়লেন সাধারণ মানুষ। আর সন্ধ্যায় গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনে লাইনে ‘ঝাঁপ’ দিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ রইল ট্রেন চলাচল। সপ্তাহের প্রথম দিনে দুপুরে ও সন্ধ্যায় এই জোড়া ভোগান্তিতে জেরবার হলেন অফিসযাত্রীরা।

এ দিন সকাল থেকেই মহানগরে ছিল সাজ সাজ রব। প্রথমে রানি রাসমণি অ্যাভিনউয়ে পার্শ্বশিক্ষকদের অবস্থান-বিক্ষোভ, দুপুরে গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশ থেকে তৃণমূলের মিছিল এবং সব শেষে ডোরিনা ক্রসিংয়ে কংগ্রেসের মিছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন তিনটি সমাবেশ থাকলেও তৃণমূলের মিছিলের জেরেই মূলত যানজট হয়। দুপুর দু’টো নাগাদ গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু হলে রেড রোডে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়ি। তখন হাওড়া-বেহালা রুটের বাসও মেয়ো রোডে ঢুকতে পারেনি। প্রায় হাজার পাঁচেক লোকের ওই মিছিল একটি রাস্তা পার হতে দশ মিনিটের বেশি সময় লাগিয়ে দেয়। সে সময়ে রবীন্দ্র সদন থেকে ধর্মতলাগামী সব বাস পার্ক স্ট্রিটে আটকে দেয় পুলিশ।

পার্ক স্ট্রিটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ক্যারি রোডের এক বাসিন্দা প্রবীর রায় বলেন, “প্রায়শই মিছিলের কারণে কলকাতায় আসতেই ইচ্ছা করে না। দশ মিনিট হয়ে গেল একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছি।” এই মিছিলের দাপটে কার্যত জেরবার হয়েছে ট্রাফিক পুলিশও। কর্তব্যরত এক ট্রাফিক পুলিশকর্মী বলেন, “কোন মিছিলের কথা বলব? একের পর এক মিছিল আসছে। আমি কিছু জানি না।”

পুলিশ জানিয়েছে, তৃণমূলের মিছিলটি ডোরিনা ক্রসিংয়ে এসে ফের মেয়ো রেড হয়ে ধর্না-মঞ্চে ফিরে যায়। ঠিক একই সময়ে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে কংগ্রেসের একটি মিছিল এসে পৌঁছে যায় ডোরিনা ক্রসিংয়ে। সারদা-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীকে জেরা করার দাবিতে ডোরিনা ক্রসিংয়ে কিছুক্ষণ অবস্থান-বিক্ষোভ করেন কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকেরা। তখন রাস্তার এক দিকে দিয়ে পুলিশ পার্ক স্ট্রিটগামী গাড়িগুলিকে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় ওই অংশে আর বেশিক্ষণ যানজট হয়নি।

ধর্না শেষ হয় বিকেল পাঁচটা নাগাদ। তার কিছুক্ষণ পরেই দেখা দেয় মেট্রোয় বিপত্তি। পাঁচটা চল্লিশ মিনিট নাগাদ গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনে ট্রেনের সামনে ‘ঝাঁপ’ দেন এক ব্যক্তি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই শ্যামবাজার থেকে ময়দান পর্যন্ত অংশে সাময়িক ভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সে সময়ে কবি সুভাষ থেকে ময়দান পর্যন্ত ট্রেন চলে। শেষে সন্ধ্যা পৌনে সাতটা নাগাদ মেট্রো চলাচল স্বাভাবিক হয়।

তবে ভোগান্তিতে এ দিন পিছিয়ে ছিল না কলকাতার প্রতিবেশী শহর হাওড়াও। মদন মিত্রের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে এ দিন পথে নামেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। দুপুরে বটানিক্যাল গার্ডেন থেকে সালকিয়া পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করেছেন তিনি। এর জেরে বেশ কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ থাকে জি টি রোডও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jam in kolkata suicide in metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE