Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সাবওয়েতে বন্ধ ব্লোয়ার, দুর্ভোগ নিত্যযাত্রীদের

তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে হাওড়া স্টেশন লাগোয়া ভূগর্ভস্থ পথে ঠাণ্ডা বাতাস চলাচলের ব্লোয়ারগুলি। ফলে এই প্রচণ্ড গরমে সাবওয়ে ব্যবহার করার সময় হাজার হাজার ট্রেন-যাত্রীর হাসফাঁস অবস্থা হচ্ছে। অভিযোগ, এই সাবওয়ের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কেএমডি-এর সিভিল এবং ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ব্লোয়ারগুলি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।

বন্ধ ব্লোয়ার। হাসফাঁস পরিবেশেই যাতায়াত। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

বন্ধ ব্লোয়ার। হাসফাঁস পরিবেশেই যাতায়াত। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

দেবাশিস দাশ ও সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৪ ০২:৪০
Share: Save:

তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে হাওড়া স্টেশন লাগোয়া ভূগর্ভস্থ পথে ঠাণ্ডা বাতাস চলাচলের ব্লোয়ারগুলি। ফলে এই প্রচণ্ড গরমে সাবওয়ে ব্যবহার করার সময় হাজার হাজার ট্রেন-যাত্রীর হাসফাঁস অবস্থা হচ্ছে। অভিযোগ, এই সাবওয়ের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কেএমডি-এর সিভিল এবং ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ব্লোয়ারগুলি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।

কেএমডিএ সূত্রে খবর, ভূগর্ভস্থ পথে বায়ু চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য ব্লোয়ার চালানো আবশ্যক। কলকাতা মেট্রোরেলের মতো এই ব্যবস্থা রয়েছে হাওড়া সাবওয়েতেও। হাওড়া সাবওয়েতে এ ধরনের আটটি ব্লোয়ার রয়েছে। এর মধ্যে এক সঙ্গে চারটি চালানো হয়। চারটি বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু অভিযোগ, মার্চের পরে কোনও ব্লোয়ারই চলছে না। ফলে এই গরমে সাবওয়ের মধ্যে দমবন্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

প্রতি দিন হাওড়া দিয়ে যাতায়াত করেন ১০ থেকে ১২ লক্ষ যাত্রী। কলকাতা বা হাওড়ার বাস ধরতে নিত্যযাত্রীদের একাংশ এই সাবওয়ে ব্যবহার করেন। দূরপাল্লার বা লোকাল ট্রেন আসার পরে এক সঙ্গে বহু যাত্রী যখন সাবওয়েতে নামেন তখন দুর্বিষহ অবস্থা হয়। দীর্ঘ দিনের নিত্যযাত্রী চন্দন মণ্ডল বলেন, “সাবওয়েতে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। গত কয়েক মাস ধরেই এটা হচ্ছে।” আর এক নিত্যযাত্রী প্রৌঢ় রমেন হালদারের কথায়: “সাবওয়েতে ব্লোয়ার বন্ধ থাকায় আমার মতো প্রবীণদের খুবই সমস্যা হচ্ছে।”

স্টেশনে নেমে কলকাতা বাসস্ট্যান্ডের দিকে গেলেই চোখে পড়ে বাঁ পাশের দেওয়ালে প্রায় চার ফুট উচ্চতায় ব্লোয়ারগুলি লাগানো রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে যন্ত্রগুলি না চলায় লোহার নেটে ধুলো ও মাকড়সার জাল। লোহার নেটের কিছু অংশ ক্ষয়ে গিয়েছে। আশেপাশের দেওয়ালের কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে।

হাওড়া সাবওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, মাস তিনেক আগে সিভিল দফতর তাঁদের না জানিয়ে কাজ করার সময় ব্লোয়ারের সঙ্গে যুক্ত বায়ু চলাচল পথ বা ‘ডাক্ট’ ভেঙে ফেলে। তার পরেই ব্লোয়ারগুলি অকেজো হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও তা মেরামত করা যায়নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “সব ব্লোয়ারগুলি ঠিক আছে। কিন্তু বায়ু চলাচলের পথ ঠিক না হলে সেগুলি চালানো যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।”

হাওড়ার কেএমডিএ-র সুপারিন্টেনড্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তাপস মিত্র জানান, বিষয়টি ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ দেখছে। কেএমডিএ-র হাওড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শৈবাল ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, ডাক্ট খারাপ হলেও সব ব্লোয়ার যে চলছে না এটা তিনি জানেন না। তিনি বলেন, “আমি হাওড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলব। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

debashis das supriyo tarafder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE