জমি-জটে আটকে ছিল মালদহে ফুলহার সেতু তৈরির কাজ। অবশেষে তা মিটেছে। সম্প্রতি পূর্ত দফতরের চাহিদা মতো ১০০ একর জমি তাদের হাতে তুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু তার পরেও জটিলতা পুরোপুরি কাটেনি। কারণ সেতু তৈরির বরাত পাওয়া সংস্থা এখনও ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’-এর পুরো টাকা জমা দেয়নি। ফলে কবে সেতুর কাজ শুরু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলই।
বিহারের কাটিহারের সঙ্গে এ রাজ্যের যোগাযোগ সুগম করতে বছর দুয়েক আগে মালদহের রতুয়ায় ফুলহার নদীর উপর ওই সেতু তৈরির প্রস্তাবে সম্মতি দেয় দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার। তখন প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। মূলত তাঁরই উদ্যোগে সওয়া তিন কিলোমিটার লম্বা সেতু এবং দু’দিকের সংযোগকারী রাস্তা তৈরির জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। এমনকী, টাকাও চলে আসে রাজ্যের হাতে। কিন্তু কাজ শুরু না হওয়ায় ওই টাকা পড়ে আছে সরকারি কোষাগারে। পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, কেবল ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৮ কোটি টাকা জমির মালিকদের দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু জমির সমস্যা মেটার পরেও কাজ শুরু করতে পারছে না পূর্ত দফতর। কেন?
দফতরের এক কর্তা জানান, যে সংস্থা বরাত পেয়েছে নিয়ম অনুযায়ী কাজ শুরুর আগে তাদের ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসেবে সাড়ে ১২ কোটি টাকা সরকারের কাছে জমা করতে হয়। সেই টাকা জমা না পড়ায় কাজ শুরুর সবুজ সঙ্কেত দিতে পারছে না পূর্ত দফতর। নবান্ন সূত্রের খবর, সেতু তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে হরিয়ানার একটি ঠিকাদার সংস্থা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীর উপরে সেতু তৈরির বরাতও পেয়েছে তারা। পূর্ত দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘রতুয়ায় সমস্ত জমি সরকারের দখলে আসার পরে গত ১৮ জুন ওই ঠিকাদার সংস্থাকে সাড়ে ১২ কোটি টাকা ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। টাকা জমা দেওয়ার সময়সীমা ধার্য হয় ১৫ দিন। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা সেই চিঠির কোনও জবাব দেয়নি, টাকাও জমা করেনি।’’
পূর্ত দফতরের এই অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি ওই ঠিকাদার সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার জি কে গর্গ। তাঁর দাবি, ‘‘পূর্ত দফতরের চিঠি পেয়ে আমরা সরকারের ঘরে কিছু টাকা জমা দিয়েছি। বাকি টাকাও দিয়ে দেব।’’ কিন্তু কেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা জমা করা গেল না সেই প্রশ্নের জবাব অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। গর্গের বক্তব্য, ‘‘রতুয়ার যেখানে সেতু তৈরি হবে সেই নাকাটিয়া পয়েন্টে গিয়ে আমরা দেখেছি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় জল কাদা জমে রয়েছে। তাই কিছু সমস্যা হচ্ছে।’’
পূর্ত দফতরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটি নতুন রাস্তা মালদহের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ১০ নম্বর রাজ্য সড়ককে কেটে ইংলিশবাজারের বাঁধাপুকুর, শোভানগর ও রতুয়া হয়ে ফুলহার নদীর উপর দিয়ে যাবে বিহারের কাটিহারে। সরকারের আশা, ওই নয়া রাস্তাকেই ১৩১-এ জাতীয় সড়ক হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এতে এক দিকে যেমন বিহারের কাটিহার হয়ে দিল্লি, কানপুরের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের দূরত্ব কমবে, তেমনই বাড়বে ব্যবসা বাণিজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy