Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চায়ের ভাঁড়ে তুফান তুলে প্রচার প্রদীপের

রাস্তার ধারের চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে লাল চায়ের ভাঁড়ে তুফান তুলেই প্রচার শুরু করলেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহা।

রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে বসেই জনসংযোগ সারছেন সিপিএম প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র

রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে বসেই জনসংযোগ সারছেন সিপিএম প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত সরকার
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৭:০৬
Share: Save:

এ কে গোপালন ভবন থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। জোনাল থেকে শাখা কমিটির অফিস বা দলের কোনও নেতার বাড়ি। সিপিএমের সঙ্গে লাল চায়ের যেন অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক!

রাস্তার ধারের চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে লাল চায়ের ভাঁড়ে তুফান তুলেই প্রচার শুরু করলেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহা। রাজনৈতিক তথ্যের বিশ্লেষণ আর পথচলতি মানুষের সঙ্গে সংযোগে শনিবার সকালে পান্ডুয়ার জয়পুর রেলগেটের কাছে কালুর (দোকান মালিক কালু বর্মণ) চায়ের দোকানে জমে উঠল আড্ডা।

শুধু সিপিএম কেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও চায়ের যোগ বহু আলোচিত। মোদী এক সময় চা বিক্রি করতেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁর ‘চায়ে পে চর্চা’ রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে। তা হলে কি প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করেই জনসংযোগের এমন চেষ্টা? প্রশ্নটা শুনেই উড়িয়ে দিলেন পোড়খাওয়া সিপিএম নেতা প্রদীপবাবু, ‘‘ধুর, উনি যখন চা বেচতেন তখনও আমি চায়ের দোকানে বসে চা খেতাম। আজও তাই। শুধু চায়ের দোকান কেন, বাজারহাট, রাজপথ থেকে অলিগলি— সর্বত্রই আমরা মানুষের পাশে থাকি।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পাশ থেকে লাল ঝান্ডা হাতে দলীয় সমর্থক জুড়ে দেন, ‘‘বিধানসভা ভোটে আমজাদও (স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন) এই চায়ের দোকানে জনসংযোগ করে প্রচার শুরু করেছিলেন। আমরাও বছরভর চায়ের দোকানে আড্ডা জমাই।’’ পাশে বসে আমজাদ মাথা নেড়ে সায় দেন।

শুক্রবার বিকেলে বামফ্রন্টের তরফে এই কেন্দ্রে প্রদীপবাবুর নাম ঘোষণা করা হয়। গত লোকসভা নির্বাচনেও তিনিই এখানে বাম প্রার্থী ছিলেন। তৃণমূলের রত্না দে নাগের কাছে হেরে যান। এ বারেও অবশ্য পার্টির ‘হোলটাইমার’ এবং এক সময় হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতির দায়িত্ব সামলানো এই নেতার উপরেই দল ভরসা রেখেছে। শনিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পান্ডুয়ায় দলের জোনাল কার্যালয়ে যান প্রদীপবাবু। সেখান থেকে বেরিয়েই সপার্ষদ চায়ের দোকানে অভিযান। ট্রাই-সাইকেলে এক প্রতিবন্ধী তাঁকে দেখে থেমে যান। কুশল বিনিময় হয়। প্রতিবন্ধী কার্ড মিলেছে কি না, জানতে চান প্রদীপবাবু। এক মহিলাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন কিনা। বিজেপি এবং তৃণমূলের বিপদ, ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি, দুর্নীতি— একের পর এক বিষয় উঠে আসে আলোচনায়। তার মাঝেই ৬০-৬৫ ভাঁড় চা সাবাড়।

দোকানে এমন আড্ডা পছন্দই করেন কালুবাবু। তিনি জানান, ভোট থেকে বিশ্বকাপ, সীমান্তে উত্তেজনা— সব নিয়েই সম্বৎসর কাটাছেঁড়া চলে তাঁর দোকানে। ধর্ম নিয়ে আলোচনাও কম হয় না। কালুবাবুর কথায়, ‘‘নানা ধরনের লোক আসেন। আলোচনা করেন। বেশ লাগে। ক্রেতাদের জন্য খবরের কাগজ রাখি।’’

আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের মাঝে ধোঁয়াওঠা কেটলি খালি হতে থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE