এক দিকে ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছেন প্রার্থী। কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে নিয়ম করে চলছে প্রচারও। অন্যদিকে, মনোনয়ন পর্ব শুরু হলেও ঘোষণা হয় নি প্রার্থীর নাম। প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় প্রচার, মিটিং-মিছিল না থাকায় বসে রয়েছেন কর্মী, সমর্থকেরা। একই জেলায় দু’আসনে দু’ধরনের অবস্থান মালদহের বামফ্রন্ট শিবিরে। উত্তরে প্রার্থী দিলেও দক্ষিণ মালদহে প্রার্থী দেয় নি বামেরা। এমনকি, দক্ষিণ মালদহের আসনটি কংগ্রেসকে বামেদের ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এক জেলায় দুরকমের অবস্থানে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন মালদহের বামেদের কর্মী, সমর্থকেরা।
মালদহের দুটি আসন উত্তর এবং দক্ষিণ কংগ্রেসের দখলে। তাই কংগ্রেসকে দুটি আসন ছেড়ে দেওয়া হবে ধরে নিয়ে প্রার্থীর নাম প্রথমে চুড়ান্ত করেনি বামেরা। তবে কংগ্রেস রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদে প্রার্থী দেওয়ায় বামেরাও উত্তর মালদহে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। উত্তর মালদহে প্রার্থী করা হয় দলের বৈষ্ণবনগরের প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ ঘোষকে। তিনি নিয়ম করে উত্তর মালদহ জুড়ে ভোট প্রচার করছেন। কখনও হরিশ্চন্দ্রপুর, কখনও আবার হবিবপুরে গিয়ে ভোট প্রচার করছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুরাতন মালদহ ব্লক জুড়ে প্রচার করেন বিশ্বনাথ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে ভোট প্রচারে অংশ নেন জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের মতো একাধিক নেতারা।
উত্তরে যখন প্রচারে ঝড় তুলেছে বামেরা, সেই সময় প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয় নি দক্ষিণ মালদহে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ মালদহ আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সমঝোতার বার্তা দিতে ওই আসনে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না। আর তাতেই দ্বিধায় পড়েছেন জেলার বাম, নেতা কর্মীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, জেলার এক আসনে প্রচার চলছে। অন্যদিকে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না। এখন প্রশ্ন উঠেছে দক্ষিণে প্রার্থী দেওয়া না হলে কংগ্রেসের সমর্থনে কি রাস্তায় নামবে বামেরা? সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “দক্ষিণ মালদহের আসনের জন্য জেলা থেকে রাজ্য স্তরে নাম পাঠানো হয়েছে। রাজ্য যেমন নির্দেশিকা দিবে, তেমনই ভাবে রণকৌশল ঠিক করা হবে।”
তবে উত্তরে কেন প্রার্থী দেওয়া হল? দলের একাংশ নেতারা জানিয়েছেন, “সিপিএম থেকে উত্তর মালদহে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন খগেন মুর্মূ। সিপিএমের ভোট বিজেপিতে যাওয়া আটকাতেই উত্তরে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।” তবে এক জেলায় দুই অবস্থান নিয়ে বামেদের সমালোচনা করেছেন বিজেপি এবং তৃণমূলের নেতারা। বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, “বামেরা নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রাভঙ্গ করতে চাইছে। বাস্তবে তাঁদেরই নাক কাটা যাবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “এক আসনে লড়াই। অন্য আসনে দস্তি। রাজ্যের মতো বামেরা জেলায় ক্ষয়িষ্ণু হয়ে উঠেছে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।” অম্বর বাবু বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ক্ষয়িষ্ণু কারা।”