Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
State News

তৃণমুল-বিজেপি সংঘর্ষের মাঝে গুলিবিদ্ধ স্কুলপড়ুয়া, এখনও উত্তপ্ত চোপড়া

অভিযোগ, শুক্রবার সাতসকালেই চোপড়ার মকদুমি এলাকায় বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। শুরু হয় তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষ।

চোপড়ায় আহত সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মহাম্মদ আব্দুল। —নিজস্ব চিত্র।

চোপড়ায় আহত সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মহাম্মদ আব্দুল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:৪৮
Share: Save:

ভাঙচুর, বোমাবাজি, গুলি-পাল্টা গুলি। সাতসকালেই তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ স্কুলপড়ুয়া। নির্বাচনের পরের দিনও দুষ্কৃতী তাণ্ডবে উত্তপ্ত উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। এই ঘটনায় পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল এবং বিজেপি নেতৃত্ব। গোটা ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।

অভিযোগ, শুক্রবার সাতসকালেই চোপড়ার মকদুমি এলাকায় বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। শুরু হয় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ। চলে এলোপাথাড়ি গুলি-বোমাবাজি। এলাকায় ভাঙচুরও চালায় দুষ্কৃতীরা। ফলে ওই এলাকায় দফায় দফায় উত্তেজনা বাড়ে। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র‌্যাফ।

চোপড়া থানার পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতীদের বোমাবাজি ও গুলিচালনার মধ্যে পড়ে আহত হয় মহাম্মদ আব্দুল নামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র। তার বাঁ-পায়ে গুলি লেগে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায়। তাকে দলুয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আপাতত সে সুস্থ রয়েছে। হাসপাতালে আহত আব্দুল বলে, ‘‘মাঠে চেঁচামেচি হচ্ছিল। সেই শুনে আমি মাঠের ধারে যাই। তখনই হঠাৎ কিছু একটা এসে আমার পায়ে লাগে। আমি পড়ে যাই। রক্ত বেরোতে শুরু করে। সবাই আমাকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে শুনলাম আমার পায়ে গুলি লেগেছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আহত কিশোরের মামা মহম্মদ আশফাক বলেন, ‘‘আব্দুল, গোলাম কাদিরের বাড়ির দিকে গিয়েছিল গন্ডগোলের আওয়াজ পেয়ে। সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হচ্ছিল। গুলিও চলে কয়েক রাউন্ড। কোন পক্ষ চালিয়েছে জানি না। তবে একটি গুলি ছিটকে এসে আব্দুলের পায়ে লেগে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে বেরিয়ে যায়। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ওকে চোপড়া হাসপাতালে নিয়ে যাই।”

এই ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা তৃণমূল নেতার দাবি, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই তাণ্ডব চালিয়েছে। তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীরা বাধা দিতে গেলে গুলি চালায় বিজেপির দুষ্কৃতীরা। সেই গোলাগুলির মধ্যে পড়েই গুলিবিদ্ধ হয় আব্দুল।

আরও পড়ুন: শেষ টাওয়ার লোকেশন শান্তিপুর... কৃষ্ণনগরে ইভিএমের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার নিখোঁজ ঘিরে রহস্য

মকদুমির স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ মুস্তাক আলম অভিযোগ করেন, গুলি চালিয়েছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন সকালে আমাদের দলের এক সক্রিয় সদস্য গোলাম কাদিরের বাড়িতে তাঁর দোকানে চড়াও হয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তারা সবাই সশস্ত্র অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে আমাদের দলের লোকজন গোলামের বাড়ি গেলে সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই সংঘর্ষের মধ্যেই তৌহিদ নামে এক বিজেপি কর্মী গুলি চালায়। সে গত কাল ১৬২ নম্বর বুথে বিজেপির পোলিং এজেন্টও ছিল।”

আরও পড়ুন: গোলমাল বিচ্ছিন্ন ঘটনা, ভোট নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ বিশেষ পর্যবেক্ষকের

অন্য দিকে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। তাঁদের পাল্টা দাবি, এর পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে। ভোটের পরে এলাকায় সন্ত্রাস চালাতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতারা এই কাজ করেছে। গুলি চালিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। যদিও সে অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ দিন সকাল থেকে এলাকায় টহলদারি শুরু করেছে র‌্যাফ। মোতায়েন রয়েছে পুলিশবাহিনীও। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।

(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরপেতে চোখ রাখুন আমাদেররাজ্যবিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE