Advertisement
E-Paper

সাট্টার কারবার ছেড়ে লটারির দোকান

উলুবেড়িয়ার এক আনাজ বিক্রেতা কয়েক মাস ধরে আলু-পটল-ফুলকপির সঙ্গে লটারির টিকিটও বেচছেন।

নুরুল আবসার ও গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৩
লটারির টিকিটের নম্বর মেলানোর ভিড়। উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা

লটারির টিকিটের নম্বর মেলানোর ভিড়। উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা

বছর তিনেক আগেও তিনি ছিলেন জগদ্দলের সাট্টা কারবারি। এখন লটারি টিকিটের দোকান চালান।

উলুবেড়িয়ার এক আনাজ বিক্রেতা কয়েক মাস ধরে আলু-পটল-ফুলকপির সঙ্গে লটারির টিকিটও বেচছেন।

সাট্টার দিন গিয়েছে। বাগনান হোক বা ব্যারাকপুর, জয়নগর হোক বা বনগাঁ— রাজ্যে বাড়ছে লটারির টিকিট বিক্রির ব্যবসা। শহরের ব্যস্ত মোড় থেকে কানা গলি, প্রত্যন্ত গ্রামের ছাদহীন দোকান, প্রায় প্রতিটি রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড— কোথায় নয়! দেড় বছর আগে বাগনান লাইব্রেরি মোড়ে লটারির দোকান ছিল তিনটি। এখন ১১টি। কয়েক বছর আগেও বসিরহাট মহকুমায় লটারি টিকিটের দু’-এক জন ‘স্টকিস্ট’ ছিলেন। বর্তমানে সেই সংখ্যা ৬। সাব-স্টকিস্টের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। বিক্রেতার সংখ্যা দু’লক্ষ। ব্যবসায়ীদের প্রাথমিক হিসেব, মহকুমা জুড়ে কমপক্ষে দিনে এক কোটি টাকার উপর টিকিট বিক্রি হচ্ছে।

গত বছর ১৪ মে থেকে ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লটারি’ প্রতিদিনের খেলা চালু করেছে। তার পর থেকেই লটারির টিকিট কেনাবেচায় যেন জোয়ার! জগদ্দলের ওই প্রাক্তন সাট্টা কারবারি দশ মাসে তিন বার জেল খেটেছিলেন। এখন তাঁর কথায়, ‘‘লটারি আইনি ব্যবসা। পুলিশের হয়রানি নেই। দাদাদের দাদাগিরি নেই। কারবার দিন দিন

বাড়ছে। দিনের দিন খেলা, সঙ্গে সঙ্গে ফল জানা যাচ্ছে। অনেকটা সাট্টার মতোই।’’ উলুবেড়িয়ার এক সাট্টা কারবারির কথায়, ‘‘আমাদের ব্যবসা এখন অন্তত কুড়ি শতাংশ কমেছে ‘ডেলি লটারি’র জন্য।’’

টিকিট কিনছেন কারা?

চাকুরিজীবী, চাষি, খেতমুজর, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রায় সব পেশার মানুষই। একবার নয়, বারবার। ভাগ্য পাল্টাতে কে না চান! ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন চটকলের ‘শিফ্‌ট’ শেষে দেখা যায়, গেটের সামনে একাধিক দোকানে ওই টিকিট কিনতে শ্রমিকদের ভিড়। বাগনানের এক কারবারির দাবি, ‘‘ভাল সরকারি চাকরি করেন, এমন এক জন আমার কাছে মাসে গড়ে ২০ হাজার টাকার লটারির টিকিট কাটেন।’’

বর্তমানে এ রাজ্যে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের লটারি টিকিট বিক্রি হয়। প্রতিটি রাজ্যের আলাদা ‘টাইম স্লট’। সকালে খেলা হয় সিকিম সরকারের লটারির। ‘ডে স্লট’ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। ‘নাইট স্লট’ নাগাল্যান্ড সরকারের। গোয়া সরকারের আবার তিনটি স্লটেই খেলা চলে। একটি টিকিটের দাম ৬ টাকা। লটারি বিক্রেতারা জানান, এক-একটি ‘সিরিজে’ পাঁচটি করে টিকিট থাকে। পাঁচটি টিকিটকে একসঙ্গে ‘ঘর’ বলা হয়। একসঙ্গে ন্যূনতম এক ‘ঘর’ টিকিট কাটতেই হবে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এক লটারি ব্যবসায়ী জানান, ওই এলাকায় গড়ে রোজ ১৫ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। বসিরহাট মহকুমার লটারি কারবারিদের হিসেব, সেখানে কমপক্ষে দিনে এক কোটি টাকার উপর টিকিট বিক্রি হচ্ছে।

অতএব ব্যবসায়ীদের লাভ। ভাগ্যের খেলায় কোটি কোটি টাকা আয় হচ্ছে সরকারেরও।

তথ্য সহায়তা: সমীরণ দাস

Lottery Barrackpore Bagnan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy