Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অগ্নিদগ্ধ বৃদ্ধার রহস্য মৃত্যু, ধন্দে পুলিশও

অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যুতে ধোঁয়াশা দেখা দিল। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর শহরের পুরাতনবাজার এলাকায়। এ দিন এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী হরিপদ মাইতির বাড়ির একটি ঘরে আগুন লেগে যায়। দমকলকর্মীরা গিয়ে ওই ঘর থেকেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হরিপদবাবুর প্রথম স্ত্রী জ্যোৎস্না মাইতিকে উদ্ধার করেন। ৬৭ বছরের ওই বৃদ্ধাকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৯
Share: Save:

অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যুতে ধোঁয়াশা দেখা দিল। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর শহরের পুরাতনবাজার এলাকায়। এ দিন এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী হরিপদ মাইতির বাড়ির একটি ঘরে আগুন লেগে যায়। দমকলকর্মীরা গিয়ে ওই ঘর থেকেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হরিপদবাবুর প্রথম স্ত্রী জ্যোৎস্না মাইতিকে উদ্ধার করেন। ৬৭ বছরের ওই বৃদ্ধাকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু কী ভাবে আগুন লাগল তা নিয়ে ধন্দ কাটেনি।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁচাত্তরের হরিপদ মাইতির দু’টি বিয়ে। প্রথম স্ত্রী জ্যোৎস্নাদেবীর বাপের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের কাছে কল্যাণপুরে। প্রথম স্ত্রী-র সন্তান না হওয়ায় ১৯৯০ সালে জেসনা নামে অন্য এক মহিলাকে ফের বিয়ে করেন হরিপদবাবু। দ্বিতীয় স্ত্রীর একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। একই বাড়িতে থাকতেন দুই স্ত্রী। বছর কয়েক আগে পাশে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন হরিপদবাবু। সেখানে দ্বিতীয় স্ত্রী-র সঙ্গেই অধিকাংশ সময়েই থাকতেন। সম্প্রতি প্রথম স্ত্রী-র বাড়িতে এসে একটি ছোট ঘরে থাকতে শুরু করেন দ্বিতীয় স্ত্রী।

অভিযোগ, সোমবার দুপুরে প্রথম স্ত্রীকে হরিপদবাবু বড় ঘর ছেড়ে ছোট ঘরে যাওয়ার কথা বললে অশান্তি বাধে। এরপরেই রাতে বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা। স্থানীয় কাউন্সিলর তুষার চৌধুরী বলেন, “ওই বৃদ্ধের দুই স্ত্রী-র মধ্যে গোলমাল ছিল। ঘটনার দিনেও অশান্তি হয়েছিল শুনছি।” কেন অশান্তি? হরিপদবাবু বলেন, “কোনও অশান্তি ছিল না। সোমবার ওঁকে (প্রথম স্ত্রী) বড় ঘর ছেড়ে দিতে বলি। কারণ, ও একা থাকে। তাই ছোট ঘরই যথেষ্ট। কিন্তু ও ঘর ছেড়ে যাবে না বলেছিল। আমি আর কিছু বলিনি।” আগুন লাগল কী ভাবে? হরিপদবাবুর জবাব, “রাতে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করি। সেখানেই গিয়েছিলাম। বাড়িতে ওঁরা দু’জন ছিল। আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে হরিপদবাবুর দ্বিতীয় স্ত্রী জেসনাদেবী বলেন, “সন্ধেয় টিভি দেখতে ভাড়া বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। মনে হয় দিদি সন্ধে বেলায় যে ধূপকাঠি জ্বালিয়েছিলেন, সেখান থেকেই কোনও ভাবে আগুন লেগে যায়। জানতে পেরে ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি।”

আগুন লাগার খবরে দমকলের একটি ইঞ্জিন পৌঁছয়। ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল ওই ঘরের যাবতীয় আসবাব। খড়্গপুর দমকল বিভাগের সাব অফিসার দিলীপকুমার গুছাইত বলেন, “আগুন শট সার্কিট, স্টোভ বা গ্যাস থেকে লাগেনি এটুকু নিশ্চিত। তবে কী ভাবে আগুন লেগেছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।” যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘরে বিভিন্ন অংশে কেরোসিন ছড়ানো হয়েছিল। সেখান থেকেই কোনও ভাবে আগুন লেগেছে। কিন্তু কে এই কাণ্ড করল? অন্ধকারে পুলিশ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে টাউন থানার পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

burnt mystery death of woman kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE