স্ত্রীর প্রতি সন্দেহের জেরে তেরো দিনের শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগ উঠল বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার ঘোষপুর এলাকার খাড়ু রাধানগর গ্রামের ঘটনা। শিশুটির মামাবাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার তমলুক আদালতের নির্দেশে কবর খঁুড়ে শিশুটির দেহ তুলে ময়না-তদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটিকে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে শিশুটির বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা পলাতক। জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “ওই শিশুর মৃত্যুর সময়ে পরিবারের তরফে কোনও ময়না-তদন্ত করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে শিশুটির দাদুর অভিযোগের ভিত্তিতে মাটি খঁুড়ে দেহটি উদ্ধার করে তা ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।”
পাঁশকুড়া থানার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার মাজির সঙ্গে ১২ বছর আগে একই গ্রামের বাসিন্দা টগরীদেবীর বিয়ে হয়। পেশায় চাষি রাজকুমার ও টগরীদেবীর ১১ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন টগরীদেবী। রাজকুমার স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ করে ওই শিশুসন্তানকে নিজের বলে মানতে চাননি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে পারিবারিক অশান্তি চলছিল। এমনকী রাজকুমার প্রতিবেশীদের কাছে কয়েকদিনের ওই শিশুকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। গত ২৪ নভেম্বর ওই শিশুটি মারা যায়। ওই শিশুর বাবা-মা প্রতিবেশীদের কাছে দাবি করেন তাঁদের ছেলে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছে। এমনকী শিশুটির মামাবাড়ির পরিজনদের কাছেও একই দাবি করেন রাজকুমার-টগরী। তড়িঘড়ি শিশুটিকে শ্মশানে পঁুতেও দেওয়া হয়।
কিন্তু শিশুটির দাদু গণেশ মাইতি বিষয়টি নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেন। ঘটনার পরদিন তিনি পাঁশকুড়া থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ জানান। কিন্তু সেখানে অভিযোগ না নেওয়ায় তিনি যান জেলা পুলিশ সুপারের কাছে। কিন্তু তারপরও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি তমলুক আদালতে অভিযোগ জানান। গণেশবাবু বলেন, “দ্বিতীয় শিশুর জন্মের পরই মেয়ের প্রতি সন্দেহ করে জামাই মারধর করেছিল। তারপরই শিশুটির মৃত্যু হওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয়।” তমলুক আদালত শিশুটির দেহ ময়না-তদন্তের নির্দেশ দেয়। শনিবার পাঁশকুড়ার বিডিও’র উপস্থিতিতে পুলিশ গিয়ে ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। গ্রামে পুলিশ বাহিনী যাওয়ার খবর পেয়ে ওই শিশুর বাবা-মা, দাদু-ঠাকুমা পালিয়ে যায়। গ্রামের বাসিন্দা প্রণব পাণ্ডে বলেন, “ওই শিশুকে নিজের বলে রাজকুমার মানতে চাইছিলেন না। আমাদের সন্দেহ, রাজকুমার ওই শিশুকে মেরেছে।”
পুলিশের অভিযোগ না নেওয়ার বিষয়টি মানতে চাননি জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy