এক আলু চাষির স্ত্রীর অপমৃত্যুতে শোরগোল পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুরে। রিক্তা দোলুই (৪৭) নামে ওই মহিলার বাড়ি আনন্দপুর থানা এলাকার আসকান্দায়। শুক্রবার সকালে জমিতে আলু তুলতে গিয়েছিলেন রিক্তা। জানা গিয়েছে, থকন স্বামী জগন্নাথ দোলুইয়ের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। ‘বাড়ি যাচ্ছি’ বলে জমি থেকে চলে যান রিক্তা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির অদূরে একটি গাছে। চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরেই আত্মহত্যা করেছেন মধ্যবয়সী এই মহিলা। মৃতার পরিবার সূত্রের খবর, জমি থেকে আলু তোলার পরে কী করা হবে তা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে অশান্তি চলছিল রিক্তার। মৃতার ভাইপো নিতাই দোলুই বলেন, “বাজারে তো আলুর দাম নেই। কাকু আলু বিক্রি করে দিয়ে ঋণ শোধ করতে চেয়েছিলেন। কাকিমা চেয়েছিলেন আলু হিমঘরে রাখতে। এ দিন সকালে জমিতে দু’জনের কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু কেন কাকিমা আত্মহত্যা করলেন বুঝতে পারছি না।” পুলিশের অবশ্য দাবি, ঘটনার সঙ্গে আলু চাষের সম্পর্ক নেই।
চলতি মরসুমে আবহাওয়া ভাল থাকায় এবং সেই ভাবে রোগ বা পোকার আক্রমণ না হওয়ায় আলুর ফলন ভালই হয়েছে। ফলে বাজারে আলুর দাম পড়েছে। সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি চাষে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। অথচ চাষিদের কেজি প্রতি আলু বিক্রি করতে হচ্ছে আড়াই টাকায়।
জগন্নাথবাবুর নিজের দেড় বিঘার কিছু কম জমি রয়েছে। তিনি আরও তিন বিঘা জমি নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন। বদলে জমি মালিককে আলু দেওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার থেকে প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমি থেকে শুরু করেছিলেন আলু তোলা। এ কাজে সাহায্য করার জন্য তাঁর দুই মেয়েও শ্বশুরবাড়ি থেকে এসেছিলেন। অন্য বারের মতো এ বারও ঋণ নিয়েই আলু চাষ করেছিলেন জগন্নাথবাবু। এ দিন সকালে বচসার পরে বাড়ির কাছেই গাছে রিক্তাদেবীর ঝুলন্ত দেহ দেখেন স্থানীয়রা। আসে পুলিশ। মাকে হারিয়ে রিক্তাদেবীর দুই মেয়ে পাপিয়া, রিঙ্কু শোকস্তব্ধ। কী যে হয়ে গেল, কেউই ভেবে পাচ্ছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy