Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভাগচাষি থেকে জমি-মালিক, কৃষকরত্ন মদনমোহন

নিজের জমি বলে কিছুই ছিল না। কয়েক বছর আগে সরকারি ভাবে ১৫ ডেসিমেল ডাঙা জমি ও ৫ ডেসিমেল চাষজমি পাট্টায় পেয়েছিলেন। সেখানেই জৈব প্রযুক্তিতে অসময়ের সবজি ফলিয়ে আপন ভাগ্য গড়ে নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল ব্লকের ইটামগরার মদনমোহন দিণ্ডা।

জেলাশাসকের হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন মদনমোহন দিণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র।

জেলাশাসকের হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন মদনমোহন দিণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র।

অমিত করমহাপাত্র
হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০২:১০
Share: Save:

নিজের জমি বলে কিছুই ছিল না। কয়েক বছর আগে সরকারি ভাবে ১৫ ডেসিমেল ডাঙা জমি ও ৫ ডেসিমেল চাষজমি পাট্টায় পেয়েছিলেন। সেখানেই জৈব প্রযুক্তিতে অসময়ের সবজি ফলিয়ে আপন ভাগ্য গড়ে নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল ব্লকের ইটামগরার মদনমোহন দিণ্ডা। ভূমিহীন কৃষিজীবী হয়েও নিয়ম মেনে চাষ করে ব্লকের ‘কৃষকরত্ন’ পুরস্কারও পেলেন। মহিষাদল ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা মৃণালকান্তি বেরা বলেন, “হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের পাশের এলাকার ভূমিহীন বাসিন্দা হয়েও কৃষিতেই আস্থা রেখে যে ভাবে তিনি সফল হয়েছেন, তা যে কোনও চাষির কাছেই অনুপ্রেরণার।”

শুক্রবার ব্লকের কৃষকদের বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানের এক অনুষ্ঠানে মদনমোহনবাবুর হাতে মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষর করা একটি শংসাপত্র ও দশ হাজার টাকার চেক তুলে দেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, জেলা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভৌমিক, জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) প্রণবেশ বেরা প্রমুখ।

এই অনুষ্ঠানে চার জনকে পাওয়ার টিলার, ৬৫ জনকে পাম্প সেট, ১৬ জনকে ধান ঝাড়াই মেসিন, ১৩ জনকে ধানের গোলা তৈরির টাকা, ১৬ জনকে নিজের ফসল পরিবহণের জন্য গাড়ি, ১০০ জনকে পলি ভার্মি কম্পোস্ট সেট, ২০০ জনকে মুরগির ছানা বিলি করা হয়। নিজস্ব কোনও জমি না থাকায় ভাগচাষ করেই ছ’জনের সংসার চালাতেন মদনমোহনবাবু। কয়েক বছর আগে সরকারিভাবে ১৫ ডেসিমেল ডাঙা জমি ও ৫ ডেসিমেল চাষ জমি পাট্টা পান তিনি। সেই জমিতে বছরে দু’বার ধান চাষ ও পাট্টা পাওয়া জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন তিনি। মেনে চলেন কৃষি দফতরের পরামর্শ। তাতেই সাংসারিক উন্নতির পাশাপাশি পাঁচ বছর টাকা জমিয়ে কিনে ফেলেন ২৫ ডেসিমেল জমি।

তাঁর দু’ই সন্তানের একজন স্নাতক স্তরে ও অন্যজন মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়া। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়েই চাষের কাজ করেন তিনি। মদনমোহনবাবু বলেন, “অসময়ের সবজি ফলাই বলেই পাইকারি ও খুচরো বাজারে বরাবরই ভাল দর পাই। তা ছাড়া জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ফসল উৎপাদনের ব্যয় যেমন কমে, তেমনি ফসলের গুণগত মান বাড়ে।” শুধু কৃষি নয়, গেোপালন ও ছোট পুকুরে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মাছ চাষও করেন তিনি। মদনমোহনবাবুর কথায়, “চাষ করে পুরস্কার পাব ভাবিনি। কিন্তু কৃষি দফতরের পরামর্শ নিয়ে লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

krishakratna madanmohan amit karmahapatra haldia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE