লোকসভার ভোটের পর এই প্রথম মেদিনীপুর শহরে সভা করতে চলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। আজ, বুধবার দুপুরে শহরের গাঁধীমূর্তির পাদদেশের সামনেই এই সভা হবে।
আজকের সভায় বিপুল জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বিজেপি। সভা ঘিরে ইতিমধ্যে উত্তেজনার পারদও চড়তে শুরু করেছে। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন গ্রামাঞ্চলে দলের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছে, শাসাচ্ছে। রাহুল সিংহের সভাকে যে তাঁরা হালকা ভাবে নিচ্ছেন না, তা তৃণমূল নেতৃত্বও বুঝিয়ে দিয়েছেন। গত রবিবারই দলের বর্ধিত সভা ডেকে শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, বুধবার জেলার সব অঞ্চল এবং ওয়ার্ডে মিছিল করতে হবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত, বিজেপির সভায় ভিড় ঠেকাতেই তৃণমূলের এই কৌশল। তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, এটি পুরোপুরি রাজনৈতিক কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদ-সহ নির্দিষ্ট কিছু দাবির প্রেক্ষিতেই এ দিন দলের সকলে পথে নামবেন। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “রেকর্ড সংখ্যক মানুষের জমায়েত হবে বুঝতে পেরেই তৃণমূলের লোকজন বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস শুরু করেছে। মানুষ যাতে আমাদের সভায় না আসতে পারেন, তার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এ ভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। বুধবারের সভাই প্রমাণ করে দেবে মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের দাবি, “জেলার সর্বত্রই শান্তির পরিবেশ আছে। কেউ কেউ উত্তেজনা ছড়াতে পারে। তবে দলের কর্মীদের কোনও রকম প্ররোচনায় পা না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
আগামী ৩০ ডিসেম্বর দুই মেদিনীপুরের কর্মীদের নিয়ে খড়্গপুর গ্রামীণের রূপনারায়ণপুরের কাছে সাংগঠনিক সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোড়ায় ঠিক ছিল, তৃণমূলনেত্রীর সভা হবে ২৪ নভেম্বর। পরে ঠিক হয়, সভা হবে ১৯ ডিসেম্বর। তারও পরে ঠিক হয়, সভা হবে ২০ ডিসেম্বর। সপ্তাহ দেড়েক আগে ফের সভার দিন পরিবর্তন হয়। ২০ ডিসেম্বর তৃণমূলনেত্রীর সভা হবে ধরে নিয়েই মেদিনীপুরে রাহুল সিংহের সভার দিন চূড়ান্ত করেন বিজেপির নেতৃত্ব। তাঁরা জানিয়েছিলেন, তৃণমূলনেত্রী জেলায় এসে যা বলবেন, দলের রাজ্য সভাপতি সভা থেকে তাঁরই জবাব দেবেন। অবশ্য তা হচ্ছে না। ‘জবাবি’ সভা বদলে যাচ্ছে সাধারণ সভায়! এখন বিজেপি নেতৃত্বের আশা, বুধবারের সভায় রাহুলবাবু যে সব প্রশ্ন তুলবেন, জেলায় এসে তার জবাব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।