জঙ্গলমহলে ভোট-প্রচারের শেষ লগ্নে এসে মাওবাদী-সন্ত্রাস পর্বের অতীতকেই হতিয়ার করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বেলপাহাড়ির এক নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গলমহলে নতুন করে কোনও অশান্তির বীজ রোপণ করতে দেব না। যারা বন্দুক দেখিয়ে মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে চাইবে, অশান্তির চেষ্টা করবে কিংবা ওই সব কাজে অন্তর্ঘাতে যুক্ত থাকবে, জঙ্গলমহলকে অশান্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের রাজ্য সরকার কোনও মতেই ক্ষমা করবে না।” এ দিন দুপুরে বেলপাহাড়ির এসসি হাইস্কুল মাঠে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী উমা সরেনের সমর্থনে নির্বাচনী সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। রোদ ঠেকানোর জন্য গোটা সভাস্থল জুড়ে সামিয়ানার ব্যবস্থা ছিল। মুখ্যমন্ত্রী ও তারকাদের দেখার জন্য তাই গোটা মাঠ জুড়েই ছিল উপচে পড়া ভিড়। মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল নজরকাড়া। এলাকাটি এক সময়ের মাওবাদী-কেন্দ্রভূমি বেলপাহাড়ি বলেই অভূতপূর্ব নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার আয়োজনও ছিল চোখে পড়ার মতো। সভাস্থলের নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে ছিলেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত।
ঠিক দুপুর দু’টো নাগাদ সভাস্থলের অদূরে হেলিকপ্টারে নামেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই কপ্টারে আসেন অভিনেতা দেব, রুদ্রনীল ও চলচ্চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। এরপর গাড়িতে করে সভাস্থলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী ও তারকারা। প্রথমেই রুদ্রনীল, রাজ চক্রবর্তী ও দেব বক্তৃতা করেন। রুদ্রনীল বলেন, “রাজ্যের উন্নয়নের জন্য, আমাদের ভাল থাকার জন্য উমা সরেনকে জিতিয়ে দিদির হাত শক্ত করতে হবে।” রাজের কথায়, “দিদির হাত শক্ত করে দিল্লিতে পৌঁছে আমাদের দাবি ছিনিয়ে আনতে হবে।” নাম না-করে রাহুল গাঁধী ও নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে দেব বলেন, “আপনারা বাংলাটাই তো বলতে পারেন না। কেবল ভোটের সময় এসে খুঁত খুঁজে বেড়ান। কই বাংলার কী কী উন্নয়ন হয়েছে সেটা তো বলছেন না। ভোটের স্বার্থে রাজ্যে এসে ঝামেলা পাকিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। যারা ভোট চাইতে আসছেন, তাদের আগে বাংলায় দেখা যায় নি।” জনতার উদ্দেশে দেব বলেন, “আপনারা উমাকে আশীর্বাদ করবেন।”