কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিশ্ছিদ্র ঘেরাটোপে ‘শান্তির ভোট’ দেখল জঙ্গলমহল! দিনের শেষে ঝাড়গ্রাম লোকসভায় ভোট পড়ল ৮৭ শতাংশ। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের থেকে ভোটের হার বেড়েছে প্রায় দশ শতাংশ। বুধবার ভোট চলাকালীন মেদিনীপুর কেন্দ্রের কেশিয়াড়ি ও নারায়ণগড়ের থেকে একেবারে ভিন্ন ছবি দেখা গেল ঝাড়গ্রামের বুথগুলিতে। তবে এই কেন্দ্রের গড়বেতা, শালবনি ও গোপীবল্লভপুর বিধানসভা এলাকার বেশ কিছু বুথে তৃণমূল ‘ভোট লুঠ’ করেছে বলে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছে সিপিএম। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলে সংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর দাবি করেছিল বামেরা। তবে এ দিন জঙ্গলমহলের বেশ কিছু বুথে বামেরা নির্বাচনী এজেন্টই দিতে পারে নি। শান্তি ও উন্নয়নের প্রশ্নে পঞ্চায়েত ও পুরভোটের পরে এবার লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে বৃত্ত সম্পূর্ণ করার ডাক দিয়েছিল শাসক দল। এ দিন ভোটদানের হার দেখে তাই বিরোধীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
ভোট শুরুর আগে থেকেই বুথে বুথে ছিল লম্বা লাইন। মাওবাদী-জনগণের কমিটির একদা ঘাঁটি লালগড় এবং বেলপাহাড়িতে ভোটদানের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। লালগড়ের রামগড় এলাকার মোক্ষদা সুন্দরী হাইস্কুলের দু’টি বুথেই ছিল দীর্ঘ লাইন। মহিলারা ছিলেন সংখ্যায় বেশি। গোটা বুথ ঘিরে রেখেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। দু’টি বুথেই কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএমের এজেন্টরা ছিলেন। লালগড়ের নাড়চ্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন লক্ষ্মীমণি টুডু। যৌথ বাহিনীর গুলিতে নিহত জনগণের কমিটির সভাপতি লালমোহন টুডুর স্ত্রী লক্ষ্মীমণিদেবী বলেন, “এলাকায় শান্তি ও উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আমরা সবাই-ই ভোট দিচ্ছি।” নাড়চ্যা বুথে কেবলমাত্র তৃণমূলের এজেন্ট ছিলেন। তবে উল্টো ছবিও দেখা গেল বীরকাঁড় প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে। সেখানে সিপিএম ও তৃণমূল দুই দলের এজেন্টই ছিলেন। ওই বুথে তৃণমূল এজেন্ট ছিলেন কমিটির জেলবন্দি নেতা ছত্রধরের কাকা হারাধন মাহাতো। ছত্রধরের বাবা, মা ও স্ত্রী অবশ্য ভোট দেননি।