আগেও গ্রামের মানুষের নানা সমস্যার সমাধানে বৈঠক বসাতেন সালিশিতে নির্যাতিতা গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অশ্বিনী সিংহ। ফব-র জেলা সহ-সভাপতি হওয়ার সুবাদে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর থানার নরগ্রামে প্রভাবও ছিল অশ্বিনীবাবুর। গ্রামবাসীদের একাংশের মতে, উনি দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে সমস্যার মীমাংসা করতেন।
মৃতার স্বামীর দাবি, নাতনির অন্নপ্রাশন উপলক্ষে শুক্রবার রাতে তাঁর স্ত্রী ও গ্রামেরই বাসিন্দা গৌর মাইতি চাকনান বাজার থেকে থালা-বাসন কিনে দু’টি সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় গ্রামের সেচ বাংলোর কাছে কয়েকজন যুবক তাঁদের পথ আটকায়। গৌরকে তাঁরা আটকে রাখলেও তাঁর স্ত্রী কোনওমতে বাড়িতে পালিয়ে আসে। ওই যুবতীর স্বামীর অভিযোগ, “কিছুক্ষণ পরেই গৌরের স্ত্রী দুর্গারানি কয়েকজনকে নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়।” মৃতার শাশুড়ি কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। তাঁর বক্তব্য, “গত শুক্রবার রাতে বৌমা বউমা ফোন করে জানায়, কয়েকজন তাঁকে বাড়ি থেকে চুলের মুঠি ধরে বাইরে নিয়ে যায়। তখনই ওর কথা শুনে মনে হয়েছিল, বউমা কিছু একটা ঘটিয়ে ফেলতে পারে।”
তবে গৌরের সঙ্গে বউমার সম্পর্কের কথা মানতে নারাজ মৃতার শাশুড়ি। তিনি বলেন, “গৌরকে কখনও বাড়িতে আসতে দেখিনি। এ ধরনের কোনও সম্পর্কের কথাও জানি না।” স্থানীয় সবিতা পণ্ডা, আভা সামন্তের কথায়, “গ্রামে কোনওদিন গৌরের সঙ্গে মৃতা যুবতীকে একসঙ্গে দেখিনি। ওদের সম্পর্ক আছে বলেও শুনিনি।” তাঁদের কথায়, “ওই দিন সন্ধ্যায় গ্রামের সেচ বাংলোর সামনে সালিশি বসেছিল। সন্ধ্যা থেকে সেখানে চিৎকার-চেঁচামেচিও শুরু হয়। আমরা সভাস্থলের অদূরে দাঁড়িয়ে থাকলেও কাছে যাইনি।” এ দিন অশ্বিনীবাবুর বাড়ি গিয়ে তাঁর স্ত্রীর দেখা মেলেনি। অশ্বিনীবাবুর বউমা পিউ সিংহের কথায়, “শ্বশুর-শাশুড়ি আলাদা থাকেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা হিসেবে শ্বশুরমশাই বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। ওই দিন বাড়ির কাছেই বাংলোর সামনে সালিশি সভায় চিৎকারের শব্দ শুনেছি। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হইনি।”