শুভেন্দু অধিকারীর থেকে দাবি পূরণে সাহায্যের আশ্বাস পাওয়ায় ভোট বয়কট ও অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াল হলদিয়া উদ্বাস্তু কল্যাণ সমিতি। সমিতির সম্পাদক রাজকুমার দলপতি বলেন, “আমরা ওই কর্মসূচি নেওয়ার পর অন্য কোনও রাজনৈতিক দল আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। শুভেন্দুবাবু আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরাও ওঁর পাশে থাকব।” তমলুক লোকসভার বিদায়ী সাংসদ তথা এবারের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বাম আমলের ভুল নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে জমিহারাদের। ওঁদের বক্তব্য ও লড়াই যুক্তিসঙ্গত।”
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার, কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট ও রাজনৈতিক দলগুলি কথা না রাখায় বন্দর গড়ার জমি দিয়েও ৪০ বছর ধরে বঞ্চিত রয়েছেন তাঁরা-এমনই অভিযোগ ছিল হলদিয়া উদ্বাস্তু কল্যাণ সমিতির সদস্যদের। অভিযোগ জানিয়ে আমরণ অনশন ও ভোট বয়কটের কথাও লিখিতভাবে জানিয়ে তাঁরা দ্বারস্থ হয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের। এই লক্ষ্যে লিফলেট বিলির পাশাপাশি দেওয়ালে পোস্টার সাঁটানোর কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু গত ২৮ এপ্রিল শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হলদিয়া ভবনে এই সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজতে আলোচনায় বসেছিলেন সমিতির সদস্যরা। তারপরই নিজেদের আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সদস্যরা ঠিক করেন ভোটে যোগ দেবেন। এই বিষয়ে তাঁরা নতুন করে লিফলেটও বিলি করছেন। রাজকুমারবাবু বলেন, “শুভেন্দুবাবু আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আগামী দিনে এই অসহয়া পরিবারগুলির পাশে থাকবেন তিনি। দাবি পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেবেন।” তাঁদের প্রকাশিত লিফলেটেও রয়েছে সেই একই বক্তব্য। সমিতির সভাপতি অলক ভৌমিক বলেন, “আমরা ভোট দেব এবং ভোটের পরই নতুনভাবে আন্দোলন শুরু করবো।”
১৯৬২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত হলদিয়া বন্দর নির্মাণের সময় স্থানীয় ৬৮টি মৌজার প্রায় সাড়ে আট হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল বন্দর। বাম আমলের গোড়ায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী বন্দরের প্রতিটি উদ্বাস্তু ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য জমি ও পরিবারের অন্তত একজনকে স্থায়ী চাকরি দেবে। কিন্তু চল্লিশ বছর পরেও অনেক দাবিই মেলেনি। এরপরই চলতি বছরে নির্বাচন বয়কটের দাবি জানান ওই সমিতির সদস্যরা। তবে শেষে বরফ গলেছে। আশায় থাকা সমিতির সদস্যরা তাই নতুন লিফলেটের নাম করেছেন “হলদিয়া বন্দরের উদ্বাস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জীবনে নতুন সূর্যোদয়ের সম্ভাবনা।”