চিড়িয়াখানায় এই বিপজ্জনক পথ উজিয়ে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। নিজস্ব চিত্র।
চিড়িয়াখানার ভিতরে দর্শকদের জন্য তৈরি হচ্ছে পায়ে হাঁটার রাস্তা। সে জন্য রাস্তায় বিছানো হয়েছে ঝামা ইটের টুকরো ও গুটি পাথর। এখনও রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। তার মধ্যেই ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় সেই পথ খুলে দেওয়া হয়েছে দর্শকদের জন্য। এর ফলে বিপজ্জনক পথে পড়ে গিয়ে প্রায়ই চোট পাচ্ছে শিশুরা। পা মচকাচ্ছে বয়স্কদের। জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কের এমন হতশ্রী দশা দেখে বিরক্তও হচ্ছেন পর্যটকরা। অভিযোগ, ঠিকাদারদের গড়িমসি আর গয়ংগচ্ছ মানসিকতার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পের এই দুরবস্থা।
রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানাটির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে জুলজিক্যাল পার্কে পরিবর্তিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চিড়িয়াখানাটির ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক’ নামকরণ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ ও স্টেট জু-অথরিটি প্রথম পর্যায়ে মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে জঙ্গলমহলের এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী সেই সব কাজের শিলান্যাস করেন। কিন্তু কাজ শুরুর মুখে চিড়িয়াখানার এক পাশে লম্বা পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়। এর ফলে বেশ কিছু বন্যপ্রাণী আড়ালে চলে যায়।
শীতের মরসুমে অবশ্য ওই পাঁচিলের মাঝের দরজাটি খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও ‘ভিজিটার্স পাথ’ তৈরির কাজ শেষ হয়নি। এমু, হরিণ, হাতি, নীলগাই দেখতে গিয়ে প্রায়ই গুটি পাথর বিছানো পথে পড়ে গিয়ে চোট পাচ্ছেন দর্শকরা। অন্য দিকে চিড়িয়াখানার মূল অংশেও রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। শুধু তাই নয়, বছর ঘুরতে চললেও তৈরি হওয়া নতুন প্রবেশ পথ ও নতুন টিকিট ঘর চালু করা যায়নি। নতুন টিকিট ঘরে স্বয়ংক্রিয় মেশিন চালানোর জন্য এখনও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়নি। সেই সঙ্গে চিড়িয়াখানায় পর্যাপ্ত নজরদারিরও ব্যবস্থা নেই। চিচিড়িয়াখানার এমন হতশ্রী অবস্থা দেখে হতাশ হচ্ছেন স্থানীয়রা।
ঝাড়গ্রামের সমাজসেবী বিষ্ণুপদ রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে এখানে আলিপুরের থেকেও বড় এলাকা জুড়ে চিড়িয়াখানা তৈরি হচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট দফতরের সদিচ্ছা ও কাণ্ডজ্ঞানের অভাবের জন্য প্রকল্পটি কার্যত বিশ বাঁও জলে যাওয়ার জোগাড়।” চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা পর্যটক কলকাতার এনাক্ষী বসাক, মহাদেব কারক, কাকলি হাজরাদের ক্ষোভ, “এমন বিপজ্জনক রাস্তায় একটু অসতর্ক হলেই বিপদ। চিড়িয়াখানায় এসে সার্কাস দেখছি।” ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, “দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy