প্রতীকী ছবি।
প্রতীক হওয়ার কথা ছিল পদ্মফুল, হয়ে গিয়েছে আলমারি, টিউবওয়েল, নৌকা!
বিজেপির প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ার জন্যই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। অথচ তাঁরাই এখন নির্দল! দলের প্রতীকপত্র সময়ে জমা দিতে পারেননি অনেক বিজেপি প্রার্থী। কারণ হিসেবে অবশ্য তৃণমূলের সন্ত্রাসকেই দায়ী করছে গেরুয়া শিবির। নির্দল হলেও পিংলা ব্লকে প্রার্থীদের দিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
ভোটপর্বে গোড়া থেকেই পিংলা ব্লক জুড়ে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব বিজেপি। শেষ দিন পর্যন্ত ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৬টি আসনের মধ্যে ২৩টিতে ও পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে ৭টিতে মনোনয়ন দেন বিজেপি প্রার্থীরা। শেষ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯টি ও পঞ্চায়েত সমিতির ৪টি আসনে এখনও বিজেপি প্রার্থী রয়েছে। তবে ওই প্রার্থীরা দলের প্রতীকপত্র জমা দিতে না পারায় এখন নির্দল।
বিজেপির অভিযোগ, ব্লক অফিসে শাসকদলের কর্মীদের দৌরাত্ম্যে প্রতীক জমা দিতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে দলের প্রতিনিধিদের। তাই স্বাভাবিক নিয়মে ওই প্রার্থীরা নির্দল হয়ে গিয়েছেন। এখন পদ্মফুলের বদলে তাঁদের কারও জুটেছে আলমারি প্রতীক। কেউ আবার পেয়েছেন টিউবওয়েল প্রতীক।
এই সব নির্দল প্রার্থীদের বিজেপি সমর্থন দিলেও প্রচার এখনও শুরু হয়নি। বিজেপির এক সূত্রে খবর, নির্দল হয়ে যাওয়ায় প্রচারে উৎসাহ পাচ্ছেন না প্রার্থীরাও। জলচক-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী মিলন সর্দার পেয়েছেন টিউবওয়েল প্রতীক। মিলনবাবু বলছেন, “আমরা বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। সর্বভারতীয় দল বিজেপির পদ্মফুল প্রতীক নিয়ে লড়াই করব বলে উৎসাহ ছিল। তাই সন্ত্রাস সত্ত্বেও ভেঙে পড়িনি। কিন্তু এখন টিউবওয়েল প্রতীকে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছি না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘প্রচারে হুমকিও আসছে। তবে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালাব।”
পদ্মফুল প্রতীক না পাওয়ায় নির্দল অন্য এক প্রার্থীর আবার দাবি, ‘‘তাঁদের প্রতি বিজেপি নেতাদের গুরুত্ব আগের তুলনায় অনেক কমেছে। যেখানে ডেবরা, খড়্গপুর-২ ব্লকের মতো এলাকায় বিজেপির রাজ্য নেতারা এসে প্রচার চালাচ্ছেন সেখানে পাশের ব্লক পিংলায় জেলাস্তরের নেতারাও প্রচারে সামিল হচ্ছেন না।’’ তাই কিছুটা ক্ষোভের সুরেই আলমারি প্রতীক পাওয়া নির্দল প্রার্থী অতনু ধল বলছেন, “শাসকদলের অনেক সন্ত্রাস উপেক্ষা করেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করিনি। ভেবেছিলাম বিজেপির মতো বড় দলের পদ্মফুল প্রতীক পাব। কিন্তু সবদিক থেকে তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য প্রতীকপত্র জমা দিতে না পেরে আজ নির্দল প্রার্থী। এখন কেমন নিজেকে একা-একা লাগছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের প্রতি দলের জেলা নেতাদের গুরুত্ব অনেকটা কমেছে। জয় নিয়ে আশাবাদী। কিন্তু এ ভাবে জয় পাওয়া কতটা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছেই।”
বিজেপির ঘাটাল জেলার সম্পাদক পিংলার বাসিন্দা অমল তরাল অবশ্য বলছেন, “এটা ঠিক তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে দলের প্রতীক না পাওয়ায় প্রার্থীদের মনোবল কিছুটা হলে দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তবে আমরা যতটা সম্ভব পাশে থাকার চেষ্টা করছি।” আর বিজেপির জেলা সভাপতি রতন দত্ত বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে প্রতীকপত্র জমা দিতে না পেরে পিংলায় আমাদের সব প্রার্থী নির্দল হয়েছে। অন্য ব্লকের তুলনায় পিংলায় আমরা কিছুটা পিছিয়ে থাকায় আগে অন্য ব্লকের প্রচার সারছি। শেষের দিকে পিংলায় প্রচারে যাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy