Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নামেই অভিযান, ফের রাস্তা আটকে মোটরবাইক

অন্য দিনের মতোই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন সকলে। হঠাৎ হাজির পুলিশ। বুঝে ওঠার আগেই মোটরবাইকের ‘ব্যাক লাইট’-এ লাঠির ঘা। ভেঙে চুরমার হল কাচ। তারপরই পুলিশের নির্দেশ, রাস্তা ঘিরে সাইকেল, মোটরবাইক রাখা যাবে না।

রাস্তাতেই ঠাঁই। মেদিনীপুরের পথে। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তাতেই ঠাঁই। মেদিনীপুরের পথে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০০:২৯
Share: Save:

অন্য দিনের মতোই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন সকলে। হঠাৎ হাজির পুলিশ। বুঝে ওঠার আগেই মোটরবাইকের ‘ব্যাক লাইট’-এ লাঠির ঘা। ভেঙে চুরমার হল কাচ। তারপরই পুলিশের নির্দেশ, রাস্তা ঘিরে সাইকেল, মোটরবাইক রাখা যাবে না।

এলআইসি চক থেকে শিশু উদ্যান, রাজাবাজার, কলেজ রোড, গোলকুয়াচক, বটতলাচক – বৃহস্পতিবারের রাতে মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবেই রাস্তার ধারে গাড়ি রাখা বন্ধ করতে অভিযান চালাল পুলিশ। যদিও এই অভিযান ঘিরে বিতর্কও তৈরি হয়েছে।

একাংশ শহরবাসীর অভিযোগ, রাস্তার ধারে গাড়ি রাখা বন্ধ করতে আগে প্রচার চালানো উচিত ছিল পুলিশের। তারপরেও কেউ নির্দেশ না মানলে তখন পুলিশ পদক্ষেপ করতে পারত। ভিন্নমতও রয়েছে। কয়েকজন বলছেন, পুলিশ যা করেছে, বেশ করেছে। আগেই করা উচিত ছিল।

বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চললেও শুক্রবার সকাল থেকে অবস্থাটা কমবেশি একই। এলআইসিচক হোক বা কালেক্টরেট মোড়- এ দিন সকাল থেকে ফের গাড়ির দখলে চলে গিয়েছে রাস্তা। প্রশ্ন উঠছে, একদিনের লোক দেখানে অভিযান চালিয়ে লাভ কী? জেলা পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “যানজট এড়াতে প্রয়োজন হলেই তল্লাশি চালানো হবে। রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে বাইক। মাঝেমধ্যেই এই তল্লাশি চলবে।” কিন্তু গাড়ি ভাঙচুর? পুলিশ সুপারের কথায়, “না, ভাঙচুর হবে না। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা দেখব। তবে যানজট এড়াতে তল্লাশি চলবেই।”

রাস্তার ধারে গাড়ি রেখে দোকান-বাজার করেন শহরের একাংশ বাসিন্দা। ফল, নিত্য যানজট। রাস্তার অর্ধেক অংশ গাড়ির দখলে। তার জেরে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। শুধু গাড়ি নয়, দিনের ব্যস্ত সময়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধারে বাইকের সারি দেখলে চোখ কপালে উঠবে। রাস্তার ধারে বাইক রেখেই অনেকে চা দোকানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডায় ডুবে থাকেন। রাস্তার ধারে ফাস্ট-ফুডের দোকান, পানশালা তো রয়েইছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধেয় পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক যাওয়ার সময় এমনই যানজটে আটকে যায় তাঁর গাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোন করেন থানায়। অভিযোগ, তারপরই পুলিশ যুদ্ধংদেহি মেজাজে হাজির হয়। অভিযানের নামে মোটরবাইকে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ। সিপিএমের মেদিনীপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক সারদা চক্রবর্তী বলেন, “অভিযানের আগে মানুষকে জানানো উচিত ছিল। তাহলে আগে থেকেই মানুষ সচেতন হতেন। যানজট এড়াতে পুলিশ অবশ্যই পদক্ষেপ করবে। কিন্তু শহরবাসীকে না জানিয়ে এত কড়া পদক্ষেপ ঠিক হয়নি।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তীর কথায়, “ভাল কাজ করতে গেলেও আগে তা প্রচার করে সকলকে জানানো জরুরি। প্রচার ছাড়াই পুলিশ অভিযান চালিয়েছে বলে শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Motorbike Road Block Medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE